ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক:
নারায়ণগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে না’শকতার উ’স্কানিদাতা ও প্রকাশ্যে অ’স্ত্র নিয়ে হা’মলাকারী হকার নেতা ও দুর্ধর্ষ চাঁ’দাবাজ আসাদুল ইসলাম আসাদকে (৪৫) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১ এর সদস্যরা। বুধবার রাতে রূপগঞ্জের গাউছিয়া এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলার সদর মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে র্যাব-১১ এর মিডিয়া অফিসার এএসপি সনদ বড়ুয়া স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে। আসামি আসাদুল ইসলাম আসাদ সোনারগাঁয়ের বুরুমদী এলাকার মৃত সামসুদ্দিনের ছেলে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, আসাদ নারায়ণগঞ্জ মহানগরের হকার সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর হকার লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তিনি গত ১৮ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চাষাঢ়ায় চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে তার সহযোগী হকারদের নিয়ে প্রকাশ্যে আ’গ্নেয়াস্ত্র, পি’স্তল, রা’মদা, চা’পাতি, হ’কিস্টিক, চাইনিজ কু’ড়ালসহ ঝাঁপিয়ে পড়ে। এছাড়া তার উ’স্কানি ও ম’দদে সহযোগী হকাররা বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, যানবাহন, বাস স্টেশনসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে হা’মলা চালিয়ে অ’গ্নিসংযোগ ও ভা’ঙচুর করে জনমনে আ’তঙ্কের সৃষ্টি করে। তাদের এমন স’ন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের ফলে সাধারণ জনগণ গুরুতর আ’হত ও প্রা’ণহানির শিকার হয়।
র্যাব আরও জানায়, কয়েক বছর আগেও আসাদ সড়কের ফুটপাতে হকারি করতেন। এক সময় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতাদের সঙ্গে সখ্য তৈরি করে তিনি হকারদের নেতা হয়ে যান। পরে নারায়ণগঞ্জ মহানগরের হকার সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ও নারায়ণগঞ্জ মহানগর হকার লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক পদ হাঁকিয়ে নেন গ্রেফতার আসামি হকার নেতা আসাদ।
২০১৮ সালে সিটি করপোরেশন ও প্রশাসনের ফুটপাত হকারমুক্ত করার যৌথ উদ্যোগের বিরোধিতা করে আন্দোলন করা নেতাদের অগ্রভাগে ছিলেন তিনি। একই বছরের ১৬ জানুয়ারি হকারমুক্ত সড়ক ইস্যুকে কেন্দ্র করে হকারদের নিয়ে হামলা করে জনগণ, সাংবাদিক ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তিকে আ’হত করেন। এরপর ২০২১ সালের ৯ মার্চ ফুটপাতে বসার দাবিতে বিক্ষোভ করেন হকাররা। ওই সময় হকারদের নেতৃত্ব দেয় আসাদ।
ওই দিন বিকালে সড়কে আগুন দিয়ে যানবাহনে ভা’ঙচুর চালান হকাররা। বাধা দিলে পুলিশের সঙ্গে তাদের সং’ঘর্ষ বাধে। ওই ঘটনায় পুলিশের ওপর হা’মলা, অ’স্ত্র লুটের চেষ্টা, যানবাহন ভা’ঙচুর ও সড়কে আগুন দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির অভিযোগে গ্রেফতার হন আসাদ। একই বছরের ১৪ অক্টোবর ফুটপাতে দোকান বসানোকে কেন্দ্র করে তর্কের জেরে খু’ন হন ১৮ বছর বয়সি তরুণ জোবায়ের হোসেন। ওই তরুণও ফুটপাতে হকারি করতেন। তাকে পি’টিয়ে ও ছু’রিকাঘাতে খু’ন করা হয়। ওই হ’ত্যা মামলারও আসামি এই আসাদ।
পরে নিহত জুবায়েরের পরিবারকে মামলা তুলে নিতে হুম’কি দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তার বিরুদ্ধে। নিহত জুবায়েরের মা মুক্তা বেগম এ ঘটনায় থানায় আরও একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
র্যাব জানায়, নিজেকে হকার নেতা বলে পরিচয় দেওয়া আসাদুল ইসলাম ওরফে আসাদ নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়া এলাকায় মূলত চাঁদাবাজি করে বেড়ায়। ওই এলাকার সড়কের ফুটপাতে বসতে হলে আসাদকে দৈনিক চাঁদা দিতে হয়। এই চাঁদার একটি অংশ সখ্য বজায় রাখা রাজনৈতিক নেতাদের কাছে পৌঁছে দিতেন আসাদ।