অনলাইন ডেস্ক : ভাষা শহীদদের স্মরণে সারা দেশে তথা বিশ্বে পালিত হবে আর্ন্তজাতিক মতৃভাষা দিবস। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে আমরা আজ মাতৃভাষায় কথা বলছি সেসব শহীদদের স্মরণে এ দিবসটি পালনে নওগাঁর সাপাহার উপজেলার ৯৬টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৯৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কোনো শহীদ মিনারই নেই।
অথচ সরকারিভাবে প্রত্যেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করার নির্দেশনা রয়েছে। তবে উপজেলার প্রায় সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় ভাষা শহীদদের প্রতি ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করতে পারছে না অসংখ্য শিক্ষার্থীরা।
বহুকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতি বছর নিজস্ব উদ্যোগে অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে কিংবা দূরের কোনো শহীদ মিনারে আন্তর্জাতিক শহীদ দিবস পালন করার জন্য কোমলমতি শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে মাইলের পর মাইল পথ প্রভাত ফেরির মধ্য দিয়ে নগ্ন পায়ে হেঁটে নিয়ে যাওয়া হয় শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে।
ভাষা শহীদদের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শনের জন্য প্রতিটি বিদ্যালয়ে একটি করে শহীদ মিনার নির্মাণ করা অত্যন্ত জরুরি বলে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা। তাই অবিলম্বে প্রতিটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার স্থাপনের দাবি তাদের।
উপজেলার রামরামপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যলয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সালাম জানান, আমাদের বিদ্যালয় থেকে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে ইউনিয়ন পর্যায়ে একটি বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার রয়েছে। প্রতি বছর দিবসটি এলে সেখানে আমরা ২ জন শিক্ষক গিয়ে শ্রদ্ধাঞ্জলি প্রদান করে থাকি। ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের খুব সকালে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয় না। তাই আমরা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কলা গাছ দিয়ে শহীদ মিনার তৈরি করে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের মধ্যে দিয়ে এ দিবসটি পালন করে থাকি। তাই আমরা আমাদের বিদ্যালয়ে স্থায়ীভাবে শহীদ মিনার তৈরি করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার শহিদুল আলম জানান, আমরা প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে চিঠি দিয়েছি দিবসটি উদযাপন করার জন্য এবং উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন করব যাতে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে একটি করে শহীদ মিনার স্থাপন করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার কল্যাণ চৌধুরী জানান, ৯৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে আমি প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে কর্মপরিকল্পনা করে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও স্কুল কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ছোট পরিসরে হলেও শহীদ মিনার স্থাপনের চেষ্টা করব।