
ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বয়স কমিয়ে জন্ম নিবন্ধন (জন্ম সনদ) ও কাবিন নামা জালিয়াতির অভিযোগে বর-কনের বাবাকে লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। ঘটনার পর এলাকায় তোলপাড় ও চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বিয়ে বাড়িতে অভিযান চালিয়ে জন্ম সনদ ও কাবিন নামা জালিয়াতির অভিযোগ প্রমাণ পাওয়ায় এ জরিমানা করেছেন। সোমবার রাতে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার দুই নং জামুর্কি ইউনিয়নের জামুর্কি গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
মির্জাপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল হক জানান, সোমবার জামুর্কি গ্রামের জাকির হোসেনের মেয়ে মিম আক্তার বন্যার (১৪) সঙ্গে একই গ্রামের জলিল মিয়ার ছেলে মামুনের (২৬) সঙ্গে বাল্যবিয়ের খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালানো হয়। বিয়ে বাড়িতে গিয়ে জলিল মিয়ার ছেলে বর মামুন মিয়া ও কনের বাবা জাকির হোসেন এবং মা খাদিজা বেগমকে আটক করা হয়। পরে তাদের জন্ম নিবন্ধন সনদ, বিয়ের কাবিননামা এবং মেয়ের পিএসসি পাশের সনদপত্র দেখতে চাইলে তারা মেয়ের পিএসসি পাশের কোন সনদপত্র দেখাতে পারেননি। পরে জন্ম নিবন্ধন সনদ এবং বিয়ের কাবিন নামা দেখান। জন্ম সনদে গত ২২/৯/২০১৯ ইং তারিখ লেখা দুই নং জামুর্কি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী এজাজ খান চৌধুরী রুবেল এবং ইউপি সচিব উত্তম পোদ্দারের সিল ও স্বাক্ষর দেখে তার সন্দেহ হয়। পরে ইউপি চেয়ারম্যান আলী এজাজ খান চৌধুরী রুবেল এবং সচিব উত্তম পোদ্দারকে ডেকে এনে জন্ম সনদের সত্যতা যাচাই করা হয়। চেয়ারম্যানের স্বাক্ষর ও সিল তাদের নয় এবং গত ২২/৯/২০১৯ইং তারিখে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে মিম আক্তার বন্যার নামে কাউকে জন্ম নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়নি বলে জানান তারা। হাট বাজারের কম্পিউটারের কোন দোকান থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে এই জন্ম সনদ বানানো হয়েছে বলে জানা যায়। এই ভুয়া জন্ম নিবন্ধন সনদ দিয়ে তারা জামুর্কি রেজিস্ট্রি অফিসের কাজী মুফতি আবু তাহেরের অফিসে ১০ হাজার টাকার বিনিময়ে কাবিন নামা তৈরি করেছেন মেয়ের বারার জাকির হোসেন ও বরের পরিবার।
তিনি আরো জানান, বর মামুন ও মেয়ের বাবা জাকির হোসেনসহ বর যাত্রীদের মধ্যে কয়েকজনকে আটক করে সোমবার রাতে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজেস্ট্রেটের অফিসে নিয়ে আসা হয়। জন্ম নিবন্ধন সনদ ও কাবিন নামা জালিয়াতির অভিযোগে রাতে কনের বাবা জাকির হোসেনকে ৫০ হাজার টাকা এবং বর মামুনকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
এ বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলী এজাজ খান চৌধুরী রুবেল বলেন, যারা জন্ম নিবন্ধন সনদ ও কাবিন নামা জাল করেছে, ইউপি পরিষদের পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মইনুল হক বলেন, জন্ম নিবন্ধন সনদ ও কাবিন নামা জালিয়াতির প্রমাণ পাওয়ায় বরকে ৫০ হাজার টাকা ও কনের বাবাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমা করা হয়েছে। বরের জরিমানার টাকা মেয়েকে ফেরত দিয়ে পড়াশোনার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কনের বাবার জরিমানার টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়া হয়েছে। ভুয়া কাবিন নামা করার অপরাধে কাজী মুফতি আবু তাহেরের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে।