ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক।।
আগামী ডিসেম্বরেই ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এ লক্ষ্যে নির্বাচনের প্রস্তুতিমূলক কাজ শুরু করেছে সংস্থাটি। তবে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণ নিয়ে জটিলতা তৈরি হয়েছে। সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন সংশোধন ছাড়া এই কাজে হাত দিতে পারছে না নির্বাচন কমিশন। আইন সংশোধনে ইতোমধ্যে সরকারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হলেও তা এখনো আলোর মুখ দেখেনি। এমতাবস্থায় সীমানা পুনঃনির্ধারণের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আইন সংশোধন না হলে আগের বিতর্কিত সীমানা ধরেই নির্বাচন আয়োজনের কথা ভাবছে ইসি।
সচেতন মহল মনে করেন, আগামী সংসদ নির্বাচনের পূর্বে বিতর্কিত আসনগুলোর সীমানা পুন:নির্ধারণ না হলে আবারও বিতর্কিত হবে নির্বাচন। সেকারণে এসব আসনের সীমানা পুন:নির্ধারণ জরুরি।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন জেলার ৯৫টি আসনে ৩ হাজার ৬৯০টি লিখিত আপত্তি উত্থাপিত হয়। শুধু সাতক্ষীরা-৩ আসনেই ৯৮০টি আপত্তি জমা পড়ে। শুনানির পর ৮৪টি আসনে পরিবর্তন করে ৩০০ আসনের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হয়, যাতে বিভিন্ন নির্বাচনী এলাকার ভোটার সংখ্যায় অসমতা পরিলক্ষিত হয়। ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত শেষ তিনটি জাতীয় নির্বাচনে মোট ১৯৮টি আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস করা হলে নানান রাজনৈতিক বিতর্ক সৃষ্টি হয় এবং অনেকে আইনি ব্যবস্থা নেয়। ২০১৩ সালের সীমানা পুনঃনির্ধারণে বেশ কয়েকটি আসনে মন্ত্রী এবং এমপিদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাদের পছন্দ অনুযায়ী সীমানা নির্ধারণ করার অভিযোগ উঠে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে মূলত ২০১৩ সালের সীমানা অপরিবর্তিত রাখা হয়। ২০২৪ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য ২০২৩ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারি সংসদীয় আসনের সীমানা পুনঃনির্ধারণের খসড়া প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। নির্বাচন কমিশনের ৩৮টি আসনের সীমানা পরিবর্তনের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে ১৮৬টি আপত্তি জমা পড়ে। এই খসড়ায় সর্বশেষ জনশুমারি অনুযায়ী ৭৫টি আসনে জনসংখ্যার বড় ব্যবধান থাকলেও তা পরিবর্তনের জন্য বিবেচনায় নেয়া হয়নি। সর্বোচ্চ জনসংখ্যার আসনের সঙ্গে সর্বনিম্ন জনসংখ্যার আসনের মধ্যে সাত গুণের বেশি ব্যবধান হলেও (৮৮ শতাংশ) তা আমলে নেয়া হয়নি। এদিকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন আসনের মধ্যে জনসংখ্যার বৃহৎ পার্থক্য রেখে সীমানা প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক অখণ্ডতার দোহাই দিয়ে মাত্র ১০টি আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাস করা হয়।