আল মাসুদ, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ
পঞ্চগড় সদর উপজেলার কুচিয়ামোড় এলাকার মামা ভাগিনা নদীর উপরে নির্মিত সেতুটির সংযোগ সড়ক প্রবল বৃষ্টিতে ভেঙ্গে যাওয়ায় স্কুল- কলেজের ছাত্র-ছাত্রীসহ হাজার হাজার মানুষ ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। সেই সাথে সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচল খুবই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ঝুঁকি নিয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে রাতের বেলাও। তারপরও বাধ্য হয়ে প্রতিদিন অসংখ্য ছোট-ছোট যানবাহন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সেতু দিয়ে পারাপার হতে হচ্ছে। যে কোনো মুহুর্তে সেতুটির ভাঙ্গা স্থানে যানবাহন উল্টে গিয়ে প্রা’ণহানির আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে পড়ার কয়েকমাস হলেও কোনো পদক্ষেপ নেয়নি স্থানীয় সরকার বিভাগ এলজিইডি।
এলাকাবাসীরা জানান, চলতি বছরের বর্ষার শুরুতেই প্রবল বৃষ্টিতে সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যায়। পাঁচ ফিটের মতো জায়গা বাকি আছে যা দিয়ে কোনো মতে রিকশা-ভ্যানসহ মানুষ পারাপার হচ্ছে। এ ছাড়াও রাতে চলাচলের সময় রিকশা, মোটরসাইকেলসহ যানবাহন খাদে পড়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হচ্ছে অনেকে।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, কুচিয়ামোড়,
কৈকুড়ি, ছোবারভিটা, মন্ডলপাড়া, গুয়াবাড়ি পাড়া, চৌধুরী হাট,ডাঙ্গা পাড়া, উকরা বাড়ি,বরমতল, গেদেরগুড়ি, ঘাগড়া খোচাবাড়ি, যুগী পাড়াসহ অর্ধশত গ্রামের মানুষ এই ঝুঁকিপূর্ণ সেতু দিয়ে পারাপার হয়। সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার পর মাত্র পাঁচ ফিট জায়গা বাকি আছে। এটুকু ভেঙ্গে গেলে ছয় কিলোমিটার সড়ক ঘুরে চলাচল করতে হবে গ্রামবাসীদের।
বন্দর পাড়া এলাকার রমজান আলী জানান, ‘এই সেতু দিয়ে যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটায় আমরা এই এলাকার মানুষ অনেকদিন যাবত দুর্ভোগ পোহাচ্ছি। আমাদেরকে অনেক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সুদৃষ্টিতে দেখলে আমরা এলাকাবাসী উপকৃত হবো।’
বান্দেরপাড় মসজিদের মুয়াজ্জিন সফিকুল ইসলাম জানান, ‘সেতুর দুইপাশে ৫০ টির মতো গ্রাম আছে।মানুষগুলো এই সেতু দিয়ে আসা-যাওয়া করে।সেতুর সংযোগ সড়ক ভেঙে যাওয়ার পর পাঁচ ফিট জায়গা বাকি আছে এটুকু ভেঙ্গে গেলে চলাচল বন্ধ হয়ে যাবে।’
৪নং কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফরিদ হোসেন জানান, ‘সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে যাওয়ায় আমাদেরকে মানুষের কথা শুনতে হয় কিন্তু বরাদ্দ না পেলে আমরা কি করব।এজন্য আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
কামাত কাজলদিঘী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. তোফায়েল প্রধান জানান, ‘সেতুর সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে গিয়ে ৫ থেকে ৬ ফিটের মত পথচারীসহ যানবাহন চলাচলের জন্য রয়েছে। এরই মধ্যে এটুকু ভেঙ্গে গেলে যানবাহন চলাচল একেবারে বন্ধ হয়ে যাবে। জরুরি প্রয়োজনে অ্যাম্বুলেন্সে রোগী আনা নেওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয় গ্রামবাসীদের। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যাওয়া- আসা করছে। এতে যেকোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, তারা পরিদর্শনও করেছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর সংযোগ সড়কটি নির্মাণ কাজ করা হলে এলাকাবাসীদের আর দুর্ভাগ পোহাতে হবে না।’
স্থানীয় সরকার বিভাগ (এলজিইডি)নির্বাহী প্রকৌশলী মাহমুদ জামান জানান, ‘প্রবল বৃষ্টির কারণে বর্ষায় সংযোগ সড়ক ধসে গেছে। আমরা দেখে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছি। চেষ্টা করছি সেখানে প্রটেকশন ওয়াল দেওয়ার। বরাদ্দ পেলে কাজ করা হবে।’