
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ঝিনাইদহে আম্ফানের কারণে ভেঙ্গেছে গাছ-পালা, বাড়ি-ঘর, ভেসে গেছে খামার-পুকুরের মাছ। সেই সাথে নষ্ট হয়েছে মাঠের পর মাঠ কলা, পান, পেঁপেসহ বিভিন্ন শবজি। এই আম্ফানের কবল থেকে বাদ পড়েনি ঝিনাইদহ পৌসভার পেঁপে চাষী আব্দুল খালেক। ব্যাংক থেকে লোন নিয়ে এলাকার বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে লিজ ও বর্গা নিয়ে ২০ বিঘা ১০কাঠা জমিতে পেঁপে বাগান করেন। সেই বাগানে কানায় কানায় পূর্ণ ছিলো পেঁপেতে। কিন্তু নির্দয় আম্ফান ঝড়ের কারণে নিঃশেষ হয়ে গেছে সব। জানা যায়, ঝিনাইদহ পৌর এলাকার পেঁপেচাষী মোঃ আব্দুল খালেক। এলাকার লোক তাকে পেঁপে খালেক বলেই চিনে। ইউসিবিএল ব্যাংক ঝিনাইদহ শাখা থেকে লোন নিয়ে এলাকার জমির মালিকদের থেকে লিজ ও বর্গা নিয়ে তিনি প্রায় ৯ একর (২১ বিঘা) জমিতে পেঁপে বাগান করেছিলেন। ৬একর জমির পেঁপেগাছ থেকে ১৫ থেকে ২০ দিন পরেই পেঁপে বিক্রয় করার প্রস্তুতি চলছিলো। বাকি ৩ একর জমিতে নতুন চারা রোপণ করা হয়েছে মাত্র। এর মধ্যেও আবার কিছু কিছু গাছে ফুল এসেছে। এবছর প্রায় তার পেঁপে বাগান থেকে ৩০ লক্ষ টাকার বেশি পেঁপে বিক্রয় করা সম্ভবনা ছিলো। প্রতিবছরের ন্যায় কালবৈশাখী ঝড় হলেও তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হতো না তার। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তার লক্ষ্য পূরণ করে দায়দেনা মিটিয়ে নতুন শবজির প্রজেক্ট শুরু করার কথা ছিলো। কিন্তু সেই স্বপ্ন তছনছ করে দিলো আম্ফান। তাকে ব্যাংকের কাছে ঋণীই হয়ে থাকতে হলো। আম্ফানের কবলে পড়ে তার পেঁপে বাগানগুলো মাটির সাথে মিশে গেছে। মাটিতে পড়ে আছে পেঁপেসহ গাছগুলো। এলাকার ওয়ার্ড কমিশনার জাহিদুল ইসলাম, শিক্ষক ও সাধারণ কৃষকেরা মনে করেন আব্দুল খালেক পেঁপে চাষ করতে গিয়ে ঝড়ের কারণে যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, সেই ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা কখনই সম্ভব না। সরকার যদি তাকে প্রনোদনা দেয় তাহলে সে একটু হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবে এবং তাকে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শ অনুযায়ী আগামীতে ওই জমি গুলোতে নতুন শবজির আবাদ করতে হবে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক কৃপাংশু শেখর বিশ্বাস বলেন, এই জেলার মাটি খুবই উর্বর, কৃষির জন্য খুবই উপযোগী হওয়ায় শবজি চাষ বেশি হয়। আর এই জেলায় ৬ উপজেলায় প্রায় ২ লাখ ২৭ হাজার কৃষক আম্ফানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এক হাজার ২৫ হেক্টর শাক- শবজির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা করা হয়েছে। পেঁপেসহ অন্যান্য ফসল যা রয়েছে তা সংরক্ষণ ও বিপণনের জন্য কৃষককে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও আব্দুল খালেক ঝুঁকি নিয়ে পেঁপে বাগান করেছে। তার বাগানে সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে তাকে সার্বিক সহযোগিতা দেওয়া হবে।