মো. সাইফুল্লাহ খাঁন,জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর >>
রংপুরে আদালতের আদেশে দাফনের ১৫ দিন পর কলেজছাত্রী ইসরাত জাহান মীমের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মলিহা খানমের উপস্থিতিতে বুধবার দুপুরে নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে তার লাশ উত্তোলন করা হয়। লাশ উত্তোলনের সময় মীমের স্বজন ও তদন্ত সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মলিহা খানম জানান, ১৬ জুন রংপুর মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পরশুরাম আমলী আদালতে একটি মামলা করেন নগরীর আমাশু কুকরুল এলাকার রংপুর সরকারি সিটি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ইসরাত জাহান মীমের মা নার্গিস বেগম। মামলায় অভিযোগ করা হয়, ৭ জুন মীমকে তার বান্ধবী আইভি বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যান। পরের দিন ৮ জুন বাড়ির পাশের পুকুর থেকে তার লাশ উদ্ধার হলেও ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন করা হয় তখন। কিন্তু লাশের গোসলের সময় শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন থাকার কারণে বিষয়টি স্বাভাবিক মৃত্যু নয় হিসেবে আলোচনায় নিয়েই মা নার্গিস বেগম পরে মামলাটি করেন।
তিনি আরো জানান, আদালতের বিচারক মামলাটি গ্রহণ করে পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনার পাশাপাশি কবর থেকে লাশ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। ওই আদেশেই বুধবার দুপুরে নগরীর মুন্সিপাড়া কবরস্থান থেকে মীমের লাশ উত্তোলন করে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
রংপুর মেট্রোপলিটন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের কোর্ট ইনসপেক্টর নাজমুল কাদির জানান, ১৬ জুন আদালতে মামলা দায়েরের পর ১৮ জুন আদালতের বিচারক শেখ জাবিদ কবর থেকে লাশ উত্তোলনের আদেশ দেন। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ ১৯ জুন আদালতে হাজির করলে তাদের তিন দিন করে রিমাণ্ড মঞ্জুর করে।
পরশুরাম থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হিল্লোল রায় জানান, আদালতে মামলা দায়েরের পরপরই আমরা মীমের বান্ধবী আইভি, তার ভাই মুন্না ও বন্ধু আল আমিন টাইগারকে গ্রেফতার করেছি। তাদেরকে রিমাণ্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। কবর থেকে লাশ উত্তোলন করা হয়েছে। সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি ও ময়নাতদন্ত শেষে লাশ আবারো দাফন করা হবে।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, মীম প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় আল আমীন টাইগার কৌশলে তার বন্ধু মুন্নার বোনকে দিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও পরে শারীরিক নির্যাতন করে তাকে হত্যার পর লাশ গুম করার জন্য পুকুরে ফেলা দেয়। মীমের মা নার্গিস জানান, ‘আমার নির্দোষ মেয়েকে যারা এভাবে হত্যা করেছে তাদের ফাঁসি চাই।