আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
ডোমার উপজেলার চিলাহাটিতে রেলের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া শত শত গৃহহীন ও ভূমিহীন পরিবারের মধ্যে একজনেরও ভাগ্যে জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের পাকা ঘর। ২২ মার্চ ডোমার উপজেলা হলরুমে আনুষ্ঠানিকভাবে সরকারি পাকা বাড়ির দলিল ও ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়েছে। এর অংশ হিসেবে ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নের কাঁঠালতলী গ্রামে নির্মাণাধীন ২৫ টি ও কাওলা গ্রামের ১৮ টি পরিবারকে বাড়ি হস্তান্তর করে দেওয়া হয়। বাড়ি পাওয়া পরিবারের মধ্যে রেলের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া একটি পরিবারের ভাগ্যেও জোটেনি প্রধানমন্ত্রীর দেয়া অনুদানের বাড়ি।
উপজেলার ভোগডাবুডি ইউনিয়নের অন্তর্গত চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে ভারতে জিরো পয়েণ্ট পর্যন্ত রেললাইন পূর্ণ স্থাপনকালে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ শত শত ভূমিহীন অসহায় পরিবারকে উচ্ছেদ করে দেন। যাহার ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েছে ওইসব পরিবার। রেলের জমি থেকে উ’চ্ছেদ হওয়া গৃহহীন ও ভূমিহীন অভাবী দুস্থ পরিবারগুলো পরিবার-পরিজন নিয়ে আশ্রয়ের জন্য বিভিন্ন মহলের কাছে দিনের পর দিন ধরনা দিয়েও তাদের কপালে জোটেনি অনুদানের বাড়ি।
রেলের জমি থেকে উচ্ছেদ হওয়া তারিকুল বলেন, ‘রেল কর্তৃপক্ষ তাদের জমি থেকে আমাদের বসতবাড়ি তুলে দেওয়ার পর আমি শ্বশুর বাড়িতে অবস্থান করে আসছি। সরকারের কাছ থেকে একটু আশ্রয়ের জন্য ডোমার এসিল্যাণ্ড স্যারের অফিসে বাড়ির জন্য আবেদন করেছি।’
আব্দুল মান্নান বলেন, ‘রেলের জমি থেকে বাড়ি ভাঙ্গার পর থেকে অন্যের জমিতে বসবাস করে আসছি। আমিও একটা আশ্রয় চাই।’
৬৫ সালে পাক ভারত যুদ্ধের সময় চিলাহাটি হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। তখন থেকে চিলাহাটি রেলস্টেশন থেকে ভারতের জিরো পয়েণ্ট পর্যন্ত রেলের পরিত্যক্ত জমিতে কর্মহীন অসহায় দুস্থ ভূমিহীনরা বসবাস শুরু করে। এরই মধ্যে সরকার ভারতের সাথে চিলাহাটি হলদিবাড়ি রেল যোগাযোগ পুন:স্থাপন কালে চিলাহাটি রেলওয়ে স্টেশন থেকে ভারতের জিরো পয়েণ্ট পর্যন্ত রেলের জমি থেকে অবৈধ উচ্ছেদ কালে শত শত ভূমিহীন পরিবার গৃহহীন হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করে।
ভোগডাবুডি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রেয়াজুল ইসলাম কালু বলেন, ‘ভোগডাবুড়ি ইউনিয়নে দুইটি সরকারি আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের ৪৩ জনের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে জমির দলিল ও ঘরের চাবি। যে সমস্ত পরিবার এই পাকা বাড়ি পেয়েছে তাদের তালিকা অনেক আগেই করা হয়েছে।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) জান্নাতুল ফেরদৌস হ্যাপি বলেন, ‘আমি চিলাহাটি স্টেশনের পাশে তিনটি পরিবারকে দেখেছি। রেলের জমি থেকে উ’চ্ছেদকৃতদের আশ্রয়ন-২ প্রকল্পে অগ্রাধিকারের বিষয়টি জেলা প্রশাসক মহোদয় দেখবেন।’