
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি >>
ঝিনাইদহে লাইনে দাঁড়িয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়ার খবরটি এখন টক অব দি টাউনে পরিণত হয়েছে। খবরটি এখন মানুষের মুখে মুখে। এ নিয়ে ঝিনাইদহ শহরের চায়ের আড্ডায় আলোচনা সমালোচানাও কম হচ্ছে না। বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে ১২৬ পরিবারের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শৈলকুাপা উপজেলার এলাকা-৭ এর পরিচালক নুরুজ্জামান। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয় বিষয়টি। অবশেষে গ্রাহকদের চাপের মুখে ঘুষের এক লাখ আটত্রিশ হাজার একশত টাকা তিনি ফেরত দিতে বাধ্য হন তিনি। গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে শৈলকুপা উপজেলার হাকিমপুর ই্উনিয়নের খুলুমবাড়িয়া গ্রামের পৃথক দুইটি স্থানে আনুষ্ঠানিকভাবে ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়া হয়। সারিবদ্ধভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে টাকা বুঝে নেন গ্রাহকরা। এ সময় ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ আলতাফ হোসেন, শৈলকুপা উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার কামরুজ্জামান, সমিতি বোর্ডের সভাপতি হাফিজুর রহমান, সহকারি প্রকৌশলী মোতাহার হোসেন ও সহকারি জেনারেল ম্যানেজার (সদস্য সেবা) মোঃ রেজাউল করিম রাজিব উপস্থিত ছিলেন। এ খবরটি দেশের পত্রপত্রিকায় ফলাও করে প্রচার হলে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়।
এ বিষয়ে জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ আলতাফ হোসেন বলেন, শৈলকুপা উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে বিদ্যুৎ লাইন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। সুযোগে বুঝে ওই এলাকার দালাল চক্রের মাধ্যমে ঘুষ নেন পরিচালক নুরুজ্জামান। ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি ব্যাপকভাবে জানাজানি হলে গোপন অনুসন্ধানকালে খবরের সত্যতা পান জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ আলতাফ হোসেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের মধ্যে ঝিনাইদহ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির শৈলকুপা ৭ নং এলাকা পরিচালক নুরুজ্জামানের নাম বেরিয়ে আসে। পরবর্তীতে এই টাকা গ্রাহকদের ফেরত দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়। লাইনে দাঁড় করিয়ে ঘুষের টাকা ফেরত দেয় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বৃহস্পতিবার রাতে ঘুষখোর পরিচালক নুরুজ্জামান নিজেই গ্রাহকদের হাতে সেই টাকা তুলে দেন। ওই দিন দুর্নীতি বিরোধী ব্যানার ঝুলিয়ে ১২৬ পরিবারকে এক লাখ আটত্রিশ হাজার একশত ঘুষের টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিয়ে পরিচালক নুরুজ্জামান গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা গ্রহণের কথা স্বীকার করে বলেন, তিন বছর আগে খুলুমবাড়িয়া গ্রামের দক্ষিণপাড়া ও বাগদিপাড়ার অন্তত ১৫০জনের কাছ থেকে মিটারসহ বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কথা বলে গড়ে ৭৫০ টাকা হারে ঘুষ নেন। আত্মস্বীকৃত এই ঘুষখোর শৈলকুপার হাকিমপুর গ্রামের মৃত নজির উদ্দিন মোল্লার ছেলে। এলাকা পরিচালক হওয়ার আগে সে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির তালিকাভুক্ত ইলেট্রিশিয়ান হিসেবে কাজ করতো। এলাকা পরিচালকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে বলে জেনারেল ম্যানেজার প্রকৌশলী মোঃ আলতাফ হোসেন জানান।