মাহতাব উদ্দিন আল মাহমুদ,ঘোড়াঘাট(দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
বাম্পার ফলনে আনন্দে আত্মহারা ঘোড়াঘাটের ভুট্টা চাষিরা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার ফলনও ভালো হয়েছে, দামও ভালো পাচ্ছে চাষীরা।
রৌদ্রের প্রখর তাপে হাঁসফাঁস জনজীবন। সেই তাপেও খুশিতে দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার ভুট্টা চাষিরা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে ভালো হয়েছে ভুট্টার ফলন।
অপরদিকে, বাজারে মিলছে ভুট্টার ভালো দাম। সব মিলিয়ে আনন্দে আত্মহারা ভুট্টা চাষিরা।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য বলছে, চলতি মৌসুমে ঘোড়াঘাট উপজেলায় ১ হাজার ৯৫০ হেক্টর জমিতে ভুট্টার চাষ হয়েছে। হেক্টর প্রতি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১২ মেট্রিক টন। লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে এই উপজেলায়।
সরেজমিনে সোমবার সকাল থেকে উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বিস্তৃত ফসলের মাঠে জমি থেকে ভুট্টা ভাঙতে ব্যস্ত চাষি ও শ্রমিক। নানা বয়সী নারী-পুরুষ গাছ থেকে ভুট্টা ভাঙছেন। কেউবা ভুট্টার খোসা ছড়িয়ে বস্তায় ভরছেন। বস্তায় ভর্তি এসব ভুট্টা জমি থেকে চলে যাচ্ছে চাতালে অথবা কৃষকের বাড়ির আঙিনায়।
কৃষকের সাথে কথা বলে জানা যায়, ভুট্টার বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরূপ দাম পাওয়ার পাশাপাশি ভুট্টা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না কৃষককে। খুচরা ও পাইকারি ক্রেতা এবং বিভিন্ন কোম্পানি সরাসরি কৃষকের কাছে থেকে ভুট্টা ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় বাজারে কাঁচা ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি ৯১০ থেকে ৯৫০ টাকা দরে। অপরদিকে, শুকনা ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে মণ প্রতি ১ হাজার ৫০ থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা টাকা পর্যন্ত।
ঘোড়াঘাট পৌরসভার মহুয়ারবাগ গ্রামে সাড়ে ৩ বিঘা জমিতে পালোয়ান জাতের ভুট্টা এবং পুঁইয়াগাড়ী গ্রামে ৮ বিঘা জমিতে ধানের চাষ করেছে আজগর আলী (৮৫)। বলেন, ‘সবার জমিতেই ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। আমি রোববার ৯২০ টাকা মণ দরে কাঁচা ভুট্টা বিক্রি করেছি। আজকেও শ্রমিকরা আমার জমির অবশিষ্ট ভুট্টা ভাঙছে। গড়ে বিঘা প্রতি ৪৫ থেকে ৫০ মণ ভুট্টা হবে।’
ঘোড়াঘাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রফিকুজ্জামান বলেন, ‘এই উপজেলায় ভুট্টার ভালো ফলন হয়েছে। ধান চাষের চেয়ে ভুট্টা চাষে খরচ কম, লাভ হয় বেশি। সে কারণে স্থানীয় কৃষকরা অর্থনৈতিকভাবে বেশি লাভের কথা চিন্তা করেই বেশি করে ভুট্টা চাষে আগ্রহী হয়েছেন। গত বছর উপজেলায় ১ হাজার ৭২০ একর জমিতে ভুট্টা আবাদ হয়েছিল। এ বছর আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৯৫০ একর জমিতে ভুট্টার আবাদ হয়েছে। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ভুট্টার ফলনও ভালো হয়েছে, দামও ভালো পাচ্ছে চাষিরা।’