crimepatrol24
২৮শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, এখন সময় রাত ১০:২০ মিনিট
  1. অনুসন্ধানী
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-আদালত
  6. আঞ্চলিক সংবাদ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আফ্রিকা
  9. আবহাওয়া বার্তা
  10. আর্কাইভ
  11. ইউরোপ
  12. ইংরেজি ভাষা শিক্ষা
  13. উত্তর আমেরিকা
  14. উদ্যোক্তা
  15. এশিয়া

উত্তরাঞ্চলে তামাক গিলে নিচ্ছে ফসলের ক্ষেত

প্রতিবেদক
মো: ইব্রাহিম খলিল
ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০২০ ৩:১৩ অপরাহ্ণ

মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলা প্রতিনিধি, রংপুর :

উত্তরাঞ্চলে তামাক গিলে নিচ্ছে ফসলের ক্ষেত রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা। সবুজ ফসলের ক্ষেত ভরা এই উপজেলায় ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে ‘মাদকমুক্ত এলাকা’ লেখা সাইনবোর্ড। কিন্তু বাস্তবে এখানকার চিত্র উল্টো। সুজলা- সুফলা মাঠে মাঠে ছেয়ে গেছে মাদকের আরেক ভয়াবহ বিষপাতা তামাক। স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের চোখে ধুলো দিয়ে বিভিন্ন কোম্পানি চাষিদের বিনা পুঁজিতে তামাক চাষে বাড়তি সুবিধা দিচ্ছেন। এতে করে দিনকে দিন হুমকির মুখে পড়ছে ফসলের ক্ষেত। দু’পয়সা বেশি লাভের বাড়তি আশার সাথে বাজারজাতের নিশ্চয়তায় তামাক চাষ করছেন চাষিরা। জেনে শুনে বিষ চাষের এই চিত্র শুধু তারাগঞ্জে নয়। রংপুর জেলার পাশাপাশি লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা ও নীলফামারীতেও ক্রমান্বয়ে বাড়ছে তামাকের চাষ। এদিকে তামাকের কালো ছায়া গ্রাসে আইনের প্রয়োগ না থাকায় কৃষকরা সচেতনতার বালাই নেই বলে মনে করছেন সচেতন মহল। তাদের দাবি, তামাক চাষ বন্ধে এখনই কার্যকরী উদ্যোগ গ্রহণ করতে না পারলে আগামী দিনে উত্তরের এই জনপদে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে বলে আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। খাদ্য শস্য উৎপাদনের ভান্ডারখ্যাত রংপুর অঞ্চলে প্রতিবছরই ধান, আলুসহ কৃষি ফসলের ন্যায্য মূল্য না পাওয়ার হতাশা কৃষকের চোখে পানি আনে। এই আহাজারির সুযোগকে লুফে নিয়ে বিনামূল্যে বিষাক্ত তামাকের বীজ কৃষকদের হাতে তুলে দিচ্ছেন গ্রামগঞ্জে ছড়িয়ে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির প্রতিনিধিরা।

সরেজমিনে দেখা গেছে, রংপুর সদরের পাগলাপীর, মমিনপুর, তারাগঞ্জের শলেয়া, মিঠাপুকুরের বড় হযরতপুর, পীরগাছার তাম্বুলপুর, কাউনিয়ার সানাইসহ বিভিন্ন এলাকার বিস্তৃণ ফসলের ক্ষেত দূর থেকে দেখে মনে হবে সবুজে ছেয়ে গেছে। কিন্তু ফসল নয়। একটু কাছাকাছি গেলেই মাঠে মাঠে বাড়ন্ত তামাকের চারা। সবুজের আড়ালে প্রতিটি পাতা আর শিরা- উপশিরায় বিষাক্ত নিকোটিন নিয়ে বেড়ে উঠছে একেকটি তামাকের গাছ।

রংপুর সদরের পালিচড়া এলাকার জহুরুল ও ইব্রাহিম বলেন, সারা বছর তো শস্যের আবাদ করি। কিন্তু দামের বেলায় পুঁজি বাঁচানোর চিন্তায় কান্নাকাটি করা লাগে। তামাক চাষের মধ্যে ওই টেনশন নেই। কোম্পানি থেকে বাড়তি সুবিধা পাওয়া যায়। আবার নিশ্চিত দু’পয়সা বেশি রোজগারও হয়।

তাম্বুলপুর এলাকার নুর আমিন বলেন, তামাক আবাদে ক্ষতি হয় জানি। কিন্তু গরিবের আয় রোজগারের জন্য সুবিধা আছে। কোম্পানি থেকে লোন সুবিধার পাশাপাশি বীজ ও সার পাওয়া যায়। আবার বাজারজাত নিয়ে চিন্তা থাকে না। এদিকে এই বিষবৃক্ষের উৎপাদন ঠেকাতে হলে চাষিদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টিসহ আইনের প্রয়োগ জরুরি বলে মনে করছেন তামাক নিয়ন্ত্রণ কোয়ালিশনের ফোকাল পারসন সুশান্ত ভৌমিক। তিনি বলেন, আইন আছে, সেটার প্রকৃত ব্যবহার করতে পারলে তামাক নিয়ন্ত্রণ সম্ভব। তবে এর আগে চাষিদের সচেতন হতে হবে। পাশাপাশি তামাকজাত কোম্পানিগুলোর দৌরাত্ম্য থামাতে হবে।

অন্যদিকে বাংলাদেশের ওয়াকার্স পার্টির নেতা নজরুল ইসলাম হক্কানী বলেন, ধান, আলুসহ কৃষি ফসলের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করে কৃষকদের বাঁচাতে হবে। কৃষকরা বাঁচলে তামাক চাষ কমে আসবে। তামাক চাষ পুরোপুরি বন্ধ করতে হলে আইনের যথাযথ প্রয়োগ করতে হবে বলেও মন্তব্য করেন এই কৃষক নেতা।

তামাক থেকে মুখ ফেরাতে চাষিদের সচেতন করা হচ্ছে বলে জানান রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মো. মনিরুজ্জামান। তিনি বলেন, তামাক জীবনঘাতী নিকোটিন সমৃদ্ধ। মরণব্যাধি ক্যানসারের অন্যতম উপাদান এই বিষপাতা। ক্ষতির সবদিক জানার পরও বাজারজাতের নিশ্চয়তা থাকায় চাষিদের তামাক চাষে নিরুৎসাহিত করা যাচ্ছে না। আমরা বন্ধ করতে চাইলেও তারা চাষ থেকে ফিরে আসছে না।

এসময় তিনি আরও বলেন, রংপুর অঞ্চলে এবার ১৩ হাজার ৭শ’ ৮৭ হেক্টর জমিতে তামাকের চাষ হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি লালমনিরহাটে। এভাবে তামাক চাষ চলতে থাকলে এই অঞ্চলের ফসল উৎপাদন কমে আসবে বলেও জানান এই কৃষি কর্মকর্তা।

Share This News:

সর্বশেষ - লাইফ স্টাইল

আপনার জন্য নির্বাচিত