ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক : পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলায় সিমা আক্তার (১৩) নামে এক কিশোরিকে গণধর্ষণের পর হত্যার ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। শনিবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় ৮ জনের বিরুদ্ধে এ মামলা দায়ের করা হয়। ওইদিন রাতেই মামলার ৩ নম্বর আসামি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য নবীনূর রহমানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
জানা গেছে, গত বছরের ২৪ অক্টোবর উপজেলার সদর ইউনিয়নের সামুদাবাদ গ্রামে নিজ বাড়িতে গণধর্ষণের পর হত্যার শিকার হন রাঙ্গাবালী হামিদিয়া মহিলা দাখিল মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সিমা। এ ঘটনায় তিন মাস পর চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি পটুয়াখালী বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি নালিশি অভিযোগ করা হয়। সিমার মা তাসলিমা বেগম বাদী হয়ে ৮ জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ দায়ের করেন।
ওই অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন সকাল ৮ টায় বাড়িতে গিয়ে তার মেয়ে সিমাকে ডাকাডাকি করলেও কোনো সাড়া শব্দ পাননি। পরে ঘরের মধ্যে ঢুকে পাটাতনের ওপর তার মেয়ের মৃতদেহ দেখতে পান। এসময় তার গলায় অনেক বড় ক্ষত ও শরীরের জামা কাপড় এলোমেলো থাকায় প্রমাণ হয় যে, তার মেয়েকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। পরে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য প্রেরণ করে।
অভিযোগে তিনি আরো উল্লেখ করেন, তিনি একটি ধর্ষণ মামলার স্বাক্ষী হওয়ায় আসামিদের সঙ্গে পূর্ব বিরোধ ছিল। আসামিরা তাদের পরিবারের প্রতি ক্ষিপ্ত। এ ঘটনার আগে আসামিরা তার মেয়েকেও ধর্ষণের হুমকি দিয়েছে।
এই অভিযোগটি ট্রাইব্যুনাল আমলে নিয়ে রাঙ্গাবালী থানার ওসিকে তদন্তপূর্বক মামলা দায়ের করার জন্য বলা হয়। সে অনুযায়ী ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেয়ে শনিবার রাতে রাঙ্গাবালী থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
মামলার আসামিরা হলেন, সুমন চৌকিদার, দানেশ চৌকিদার, সেরাজুল চৌকিদার, নবীনূর রহমান, ছাদের চৌকিদার, ইমরান চৌকিদার, রাকিব চৌকিদার ও মোফা। তাদের মধ্যে শুধু মোফার বাড়ি উপজেলার কাছিয়াবুনিয়া গ্রামে এবং বাকিদের বাড়ি সামুদাবাদ গ্রামে।
মামলার পর শনিবার রাতেই উপজেলার পুলঘাট বাজার এলাকা থেকে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নবিনূরকে গ্রেফতার করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রাঙ্গাবালী থানার ওসি (তদন্ত) মোস্তফা কামাল জানান, গ্রেফতার আসামি নবীনূরকে রবিবার গলাচিপা আদালতে প্রেরণ করে ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন করা হয়েছে।
রাঙ্গাবালী থানার ওসি মিলন কৃষ্ণ মিত্র বলেন, গণধর্ষণের পর ওই কিশোরীকে হত্যা করার আলামত ময়নাতদন্তে পাওয়া গেছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেয়ে আমরা মামলাটি রুজু করেছি। এ মামলায় অভিযুক্ত ইউপি সদস্য নবীনূরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রধান আসামিসহ অন্যদের গ্রেফতার অভিযান অব্যাহত আছে।