মিজানুর রহমান, শেরপুর জেলা প্রতিনিধি: শেরপুর জেলার
গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ঝিনাইগাতী গজনী-অবকাশ কেন্দ্রে শীত উপলক্ষে দর্শনার্থী ভ্রমণপিয়াসীদের উপচে পড়া ভিড়। নতুন বছর ৫ জানুয়ারি ২০২৫ সালের শুরুতেই লোকে লোকারণ্য হয়ে উঠেছে পর্যটন কেন্দ্রটি। রবিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আনন্দে মাতেন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার ভ্রমণপিপাসুরা। অনেক দিন পর ভ্রমণপ্রেমীদের এমন উপচেপড়া ভিড়ে খুশি সেখানকার ব্যবসায়ীরা।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি গারো পাহাড়ের গজনী এলাকাটি ব্রিটিশ আমল থেকেই পিকনিক স্পট হিসেবে পরিচিত।
প্রায় ২০০ ফুট উঁচু টিলায় নির্মাণ করা হয়েছে তিন তলাবিশিষ্ট অবকাশ ভবন। এটি পর্যটকদের জন্য রেস্ট হাউস হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সমতল ভূমি থেকে অবকাশ ভবনে ওঠানামা করার জন্য পাহাড় কেটে তৈরি করা হয়েছে আকর্ষণীয় আঁকাবাঁকা ‘পদ্মসিঁড়ি’। আছে পাতালপুরী, মৎস্যকন্যা,ভাসমান সেতু,গারো মা ভিলেজ,ডাইনোসরের প্রতিকৃতি,ড্রাগন টানেল,দন্ডায়মান জিরাফ,পদ্মসিঁড়ি,লেক ভিউ পেন্টাগন কৃত্রিম জলপ্রপাত, কাজী নজরুল ইসলাম ও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতিফলক,ঝুলন্ত ব্রিজ, হাতিসহ বিভিন্ন প্রাণীর ভাস্কর্য। গারো পাহাড়ের মনোরম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করার জন্য নির্মাণ করা হয়েছে আকাশচুম্বী সাইট ভিউ টাওয়ার। এখানে উঠলে চোখে পড়বে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের সুউচ্চ পর্বতরাশি। সবুজে সবুজে ভরা পাহাড়।
পায়ে হেঁটে পাহাড়ের স্পর্শ নিয়ে লেকের পাড় ধরে হেঁটে যাওয়া যাবে এক পাহাড় থেকে অন্য পাহাড়ে। পড়ন্ত বিকেলে ছোট ছোট নৌকায় করে বেড়ানোর জন্য রয়েছে লেক। শিশু দর্শনার্থীদের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্ক।
রবিবার দুপুরে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় এলাকায় সরেজমিনে দেখা যায়, গজনী অবকাশের বিভিন্ন স্থানে বিপুলসংখ্যক ভ্রমণপিপাসু মানুষ ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কেউ সেলফি তুলছেন। কেউবা প্রিয়জনের ছবি মুঠোফোনে ক্যামেরাবন্দি করছেন। শিশুদের পদচারণায় চুকুলুপি চিলড্রেনস পার্ক ছিল সকাল থেকেই উৎসবমুখর।
জামালপুর থেকে আসা দর্শনার্থী মো. শাহরিয়ার বলেন, ‘আজ রবিবার পরিবারের সবাইকে নিয়ে গজনী অবকাশে বেড়াতে এসেছি, গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখে খুব আনন্দ লাগছে।’
দর্শনার্থীদের আগমনে গজনী অবকাশ পুনরায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় ব্যবসায়ী শাহিন মিয়া। তিনি বলেন, ‘এমন দর্শনার্থী প্রতিদিন থাকলে ব্যবসায়ীদের চাহিদা পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে।’
শীত উপলক্ষে গজনী অবকাশে দর্শনার্থী বেড়েছে। দর্শনার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে ঘোরাফেরা করতে পারেন, সে জন্য অবকাশকেন্দ্র এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।