
মো. সাইফুল্লাহ খাঁন,জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর: ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে আসা একই পরিবারের তিন জনসহ পাঁচ জনকে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসোলেশন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে। তারা সবাই ঠাকুরগাঁও জেলার বাসিন্দা। এদের মধ্যে আড়াই বছরের এক শিশু রয়েছে। শনিবার রাতে রংপুর মেডিকেল করোনা ইউনিটে তাদের ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। এর আগে শনিবার বিকালে অসুস্থদের ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাদের প্রাথমিক আলামতসহ স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেন। এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিক্যালে রেফার্ড করেন বলে নিশ্চিত করেছেন সিভিল সার্জন ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার ।
ডা. মো. মাহফুজার রহমান সরকার জানান, ’সন্দেহভাজন রোগীদের ইতিহাস পর্যালোচনা করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ঢাকা ফেরত ব্যক্তির শরীরে জ্বর ও শ্বাসকষ্ট আগে থেকে ছিল। তার সংস্পর্শে পরিবারের অন্য সদস্যরাও অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের টিম শনিবার বিকালে তাদের হাসপাতালে নিয়ে আসেন। সেখানে তাদের সাময়িক চিকিৎসা দিয়ে সন্ধ্যায় রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়েছে। রংপুরে তাদের আইসোলেশনে রাখা হয়েছে। সেখানে তাদের নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠানো হবে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তাদের কী হয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।’
এদিকে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরা ব্যক্তি জানান, ঢাকায় তিনি রেষ্টুরেন্টের ব্যবসা করেন। গত ১৩ মার্চ মাদারীপুরে একটি পিকনিকে গিয়েছিলেন। সেখানে অনেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন জনশক্তি রপ্তানি ব্যবসার সাথে জড়িত। তার সংস্পর্শে আসার পর থেকেই শরীরে জ্বর অনুভব হয়। এরপর জ্বর নিয়েই শুক্রবার রাতে ঢাকা থেকে পঞ্চগড় এক্সপ্রেস ট্রেনে ঠাকুরগাঁওয়ে পৌছেন। নিজ বাড়িতে পৌছার পর জ্বরের তীব্রতা বেড়ে যায়। সঙ্গে শ্বাসকষ্ট ও পাতলা পায়খানা শুরু হয়। ধীরে ধীরে একই সমস্যা স্ত্রী ও ছোট্ট শিশু সন্তানের দেখা দেয়। এরপর বাড়িতে থাকা ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রীর একই রকম উপসর্গ দেখা দেয়। তারাও সংস্পর্শে আসায় করোনায় আক্রান্ত বলে সন্দেহ হচ্ছে। এক পরিবারের পাঁচ সদস্য জ্বরসহ করোনার আলামত নিয়ে অসুস্থতার সংবাদ আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। এরপর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কর্মীদের মাধ্যমে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ ঘটনা অবহিত হয়। জেলা স্বাস্থ্যকর্মীরা দুই দফা তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেন এবং হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে শনিবার বিকালে তাদের সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। এরপর একটি সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে করে তাদের রংপুরে প্রেরণ করা হয়েছে।