ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক:
কুমিল্লার হোমনায় চাঞ্চল্যকর ট্রিপল মার্ডারে জড়িত আক্তার হোসেন (২৭) প্রকাশ সুমনকে তার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেফতার করেছে হোমনা থানা পুলিশ।
শুক্রবার (৬ সেপ্টেম্বর) রাতে হোমনা পৌরসভার শ্রীমদ্দি চরের গাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আক্তার হোসেন শ্রীমদ্দি চরের গাঁওয়ের হক মিয়ার ছেলে।
হোমনা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জয়নাল আবেদীন ক্রাইম পেট্রোল২৪.কম কে জানান, ‘গ্রেফতারের পর হ’ত্যাকারী আক্তার হোসেন জিজ্ঞাসাবাদে জানায়, নিহত মাহমুদার সঙ্গে তার দীর্ঘ দিনের পরিচয় ছিল। মাহমুদার বাবার বাড়ি ও আক্তারের বাড়ি একই গ্রামে। সেই পরিচয়ের সূত্র ধরে আক্তার হোসেনের কাছ থেকে নিহত মাহমুদা ৪৪ হাজার টাকা ধার নেন। সেখান থেকে কিছু টাকা পরিশোধ করে ৩৬ হাজার টাকা বাকী ছিল। সেই টাকা ফেরত দেব-দিচ্ছি করে আক্তারকে ঘুরাতে থাকেন মাহমুদা। এ নিয়ে দু’জনের মধ্যে কয়েক দফা বাক-বিতণ্ডা হয়। গত বুধবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় আক্তারকে তার পাওনা টাকা ফেরত দেবেন বলে বাড়িতে ডাকেন মাহমুদা। পরে রাতে একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করেন মাহমুদা, হত্যাকারী আক্তার, মাহমুদার ছেলে সাহাদ এবং মাহমুদার ভাতিজি তিশা। খাওয়া-দাওয়া শেষে তারা ঘুমিয়ে গেলে গভীর রাতে মাহমুদাকে গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে হ’ত্যা করেন আক্তার। পরে আক্তার ভাবতে থাকে তিশা ও সাহাদ তো সন্ধ্যায় আক্তারকে দেখেছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা যদি আক্তারের কথা বলে দেয় সেই আশঙ্কা থেকে তাদের দু’জনকেও গলায় ওড়না প্যাঁচিয়ে হ’ত্যা করে। পরবর্তীতে তাদের মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য কাঠের ফাইল দিয়ে মাথায় আ’ঘাত করে। মরদেহ তিনটি এক খাটের ওপর রেখে পালিয়ে যান হ’ত্যাকারী আক্তার।’
ওসি জয়নাল আবেদীন আরও জানান, ‘তিনজনকে হ’ত্যার ঘটনায় নি’হত মাহমুদার বাবা বাদী হয়ে হ’ত্যা মামলা দায়ের করার পর ঘটনার রহস্য উদঘাটনে নামে পুলিশ। তদন্তের মাধ্যমে পুলিশ হ’ত্যাকারী আক্তারকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। গতকাল শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে শ্রীমদ্দি চরের গাঁও এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। আজ শনিবার বিকেলে তাকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার (৫ সেপ্টেম্বর) সকালে কুমিল্লার হোমনার বড় ঘাগুটিয়া এলাকায় শাহপরানের ঘরে তিনজনের মরদেহ পড়ে থাকতে দেখে পুলিশকে খবর দেন স্থানীয়রা। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ তিনটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এর আগে বুধবার রাতের কোনো একসময় তিনজনকে হ’ত্যা করে মরদেহগুলো একটি খাটের ওপর ফেলে রাখা হয়।
নিহতরা হলেন- বড় ঘাগুটিয়া এলাকার মো. শাহপরানের স্ত্রী মাহমুদা আক্তার (৩৫), তাদের ৯ বছরের ছেলে সাহাদ এবং প্রতিবেশী মামাতো ভাইয়ের মেয়ে তিশা (১৪)।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতেই নি’হত মাহমুদার বাবা আবুল হোসেন বাদী হয়ে হোমনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই ঘাতক আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরে শনিবার বিকেলে আক্তারকে আদালতে তোলা হয়েছে।