মো. আক্তার হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি ঃ
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে কুমিল্লার হোমনায় দুই গ্রুপের সংঘর্ষে অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছে। এদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় একজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। শনিবার রাতে উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়নের কৃপারামপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রবিবার উভয় গ্রুপের পক্ষে মনোয়ারা বেগম এবং ইউনুছ মিয়া বাদি হয়ে ২১জনকে আসামি করে হোমনা থানায় দুইটি মামলা করেছেন। আহতরা হলো- আবদুল হক (৪৫), হুমায়ুন কবীর (৪৫), মোকবল হোসেন (২৫), আবুল বাশার (৫৫), রুজিনা (২৫), হাসান সরকার (২৯), বাশির আহমেদ (৩৭), রুহুল আমিন (১৮), খাইরুল ইসলাম (৫২), মো. সজিব (১৯), সুরিয়া বেগম (৬০), নাসিমা বেগম (৩৫), মো. জাকির হোসেন (৩৬)। রাসেল (২০) এবং সাজেদুলকে (২০) প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এদের মধ্যে শামীম গ্রুপের আব্দুল হককে পায়ের রগ কাটা জখমী হওয়ায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
জানা গেছে, উপজেলার আসাদপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শামীম গ্রুগ এবং বশির গ্রুপের মধ্যে এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পূর্ব থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। এরই জের ধরে উভয় গ্রুপের মধ্যে এ ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
আহত আব্দুল হকের বোন মনোয়ারা বেগম (মনা) জানান, তার ভাই আবদুল হককে বাড়ির পাশের রাস্তার ধারে বসা অবস্থায় দেখতে পেয়ে লোকজন দলবদ্ধ হয়ে পূর্ব শত্রতার জের ধরে রাম দা’, গরু জবাই করার ছুরি, চাপাতি, শাবল, হকিস্টিক ইত্যাদি নিয়ে আক্রমণ করে। তখন তার ভাই প্রাণে বাঁচার জন্য পাশর্^বতী শাহ আলমের বাড়িতে আশ্রয় নেয়। সেখানেও তারা আব্দুল হককে এলোপাথারি মারধর করে এবং কুপিয়ে ডান পায়ের রগ কেটে ফেলে। এ সময় তারা হককে কুপিয়ে মেরে ফেলার হুমকিও দেয়।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা যায়, কয়েকদিন আগে উপজেলারে চান্দেরচরে একটি ওয়াজ মাহফিলে হুজুরের দোয়া চলাকালে শামীম গ্রুপের এক লোক তাদের ওপরে চলা অত্যাচার নিপীড়ন থেকে মুক্তির জন্য প্রার্থনা করেন। এ সময় কে বা কারা তা শুনে ফেলে রাগ বাড়তে থাকে। এতেই মারামারির সূত্রপাত।
হাসপাতালের বেডে ক্ষীণ কণ্ঠে আহত আবুল বাশার বলেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে আমার বাড়ির পাশে বসে থাকা অবস্থায় সন্ত্রাসীরা অতর্কিতে আমার ও আমার ভাতিজা হুমায়ুনের ওপর আক্রমণ করে।
চিকিৎসাধীন খাইরুল ইসলাম জানান, পূর্বের চাঁদাবাজির একটি ঘটনায় সাক্ষ্য দেওয়াকে কেন্দ্র করে আমার ওপর আক্রমণ করা হয়েছে।
আহত রুহুল আমিন বলেন, আসলে আমি নিজেও জানি না, কেন এমন ঘটনা ঘটল।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. আক্তার আলম জানান, মারামারির ঘটনায় আহত হয়ে পনের জন হাসপাতালে এসেছে। এদের মধ্যে বার জনকে ভর্তি রাখা হয়েছে। আবদুল হক নামের রোগীর পায়ের হাড় ভেঙে গেছে এবং রগ কেটে গেছে। পা নড়াচড়া করতে না পারায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার করা হয়েছে। দুই জনকে প্রাথমিকক চিকৎসা দেওয়া হয়েছে।
হোমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কায়েস আকন্দ জানান, দুইটি মামলা হয়েছে। উভয় গ্রুপের তিনজনকে গ্রেফতার করে কোর্টে পাঠানো হয়েছে।