
জেলা প্রতিনিধি , রংপুর : রংপুরে এক নবজাতককে উদ্ধার করা হয়েছে। রংপুর নগরীর হাজীরহাট থানা এলাকার হজ্ব প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের সামনে রংপুর-দিনাজপুর মহাসড়কের পাশ থেকে এক নবজাতক শিশুকে উদ্ধার করা হয়। রোববার সকালে ওই নবজাতককে স্থানীয় এক নারী উদ্ধার করে তার শ্বশুরকে জানালে তিনি শিশুটিকে হাজিরহাট থানায় নিয়ে যান। নবজাতককে থানায় নেয়ায় অনেকেই দেখার জন্য সেখানে ভিড় জমাতে থাকেন। এসময় নবজাতক ওই শিশুকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হলে কিছুটা সুস্থ হয়। পরে বিকেলে তাকে রংপুর জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-১ এ পাঠানো হয়। অনেকেই শিশুটিকে দত্তক নেয়ার জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। নবজাতককে দত্তক চেয়ে আদালতে আবেদন করেন তারাগঞ্জ মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও কুর্শা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সদস্য মো. কামরুজ্জামান।
আদালত চত্বরে কামরুজ্জামান বলেন, আমার ১৭ বছরের বিবাহিত জীবনে বহু চিকিৎসার পরেও স্ত্রী মনোয়ারা বেগমের কোনো সন্তান নেই। তাই রাস্তার পাশে পাওয়া নবজাতককে দত্তক চেয়ে আদালতে আবেদন করেছি। আদালত আবেদন মঞ্জুর করে তার দায়িত্ব আমাকে দিলে নিজের সন্তান ভেবেই তাকে মানুষের মতো মানুষ করবো ইনশাআল্লাহ। প্রয়োজন হলে আমার স্থাবর অস্থাবর সম্পত্তি লিখে দিতেও রাজি আছি। এ বিষয়ে আবেদন শুনানির জন্য পরবর্তী তারিখ আগামী ১০ ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়েছে। পরে সন্ধ্যায় আদালতের বিচারক জাহাঙ্গীর আলম নবজাতককে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে চিকিৎসার জন্য পাঠানোসহ ঘটনার সাথে সংশ্লিষ্ট সকল প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হাজিরহাট থানা পুলিশের ওসি, জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভাপতি ও সমাজসেবা অধিদপ্তরকে নির্দেশ দেন।
হাজিরহাট থানা পুলিশের ওসি মোস্তাফিজার রহমান বলেন, নবজাতকের (ছেলে) বয়স আনুমাণিক এক থেকে দু’দিন হবে। তাকে কেন রাস্তার পাশে এমন অমানবিকভাবে ফেলে রাখা হলো এবং কে বা কারা ঘটনার সাথে জড়িত সে বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, শিশুটিকে উদ্ধার করে প্রথমে চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এরপর শিশুটিকে কোথায় রাখা হবে এ সিদ্ধান্তের জন্য আদালতে পাঠাই। আদালতের নির্দেশেই শিশুটিকে সুচিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। এ ঘটনায় একটি জিডি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি।