মোঃ পারভেজ আলম, জেলা প্রতিনিধি, ঢাকা>>
রাজধানীর মগবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণে আংশিক ধসে পড়া রাখি নীড়ের নিখোঁজ তত্ত্বাবধায়ক হারুন অর রশিদ হাওলাদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপের নিচ থেকে।
ফায়ার সার্ভিসের উপ পরিচালক দেবাশীষ বর্ধন মঙ্গলবার বিকালে ঘটনাস্থলে সাংবাদিকদের বলেন, উনার মেয়ে বলেছিলেন ‘আব্বা মিসিং’। এর পর বেলা সাড়ে ৩টা নাগাদ সিঁড়ির কাছে চিলেকোঠার ডেব্রিজ যেখানে তার নিচে চাপা পড়া অবস্থায় পেয়েছি আমরা রশিদ হাওলাদারের মরদেহ ।” দুদিন আগের ওই বিস্ফোরণের ঘটনায় এ নিয়ে মোট আটজনের মৃত্যু হল। হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আরও তিনজন।
হারুন অর রশিদের মেয়ে হেনা বেগম সাংবাদিকদের বলেন, গত রোববার ওই বিস্ফোরণের পর থেকে তার বাবার খোঁজ মিলছিল না। সব হাসপাতালে খোঁজ নিয়েও বাবাকে না পেয়ে তিনি ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধারকর্মীদের জানান। মঙ্গলবার (আজ) বিকালে উদ্ধারকর্মীরা লাশ উদ্ধারের পর হেনা বেগম তার বাবাকে শনাক্ত করেন।
রোববার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিস্ফোরণের বিকট শব্দে মগবাজার ওয়্যারলেস গেইট এলাকা কেঁপে ওঠে। তাতে আউটার সার্কুলার রোডের ৭৯ নম্বর হোল্ডিংয়ের তিন তলা রাখি নীড়ের এক পাশ ধসে পড়ে। বিস্ফোরণের ধাক্কায় রাস্তার উল্টো দিকে আড়ং, বিশাল সেন্টার, নজরুল শিক্ষালয়, রাশমনো হাসনপাতালসহ আশপাশের ডজনখানেক ভবনের কাচ ভেঙে যায়। ক্ষতিগ্রস্ত হয় রাস্তায় থাকা তিনটি বাস ও যাত্রীরা। তিনতলা ওই ভবনের দোতলায় সিঙ্গারের বিক্রয় কেন্দ্র ছিল। বিস্ফোরণে ওই বিক্রয় কেন্দ্রের দেওয়াল ভেঙে পণ্যের কার্টন বেরিয়ে পড়তে দেখা যায়। নিচতলায় খাবারের দোকান শরমা হাউজ ও বেঙ্গল মিটের বিক্রয় কেন্দ্র ছিল, যা পুরোপুরি মিশে গেছে। লোহার গ্রিল, আসবাবপত্র, ভবনের বিভিন্ন অংশ ছিটকে যায় রাস্তায়। ওই ঘটনায় আহত হন চার শতাধিক, তাদের বেশিরভাগই সে সময় রাস্তায় বা আশপাশের ভবনে ছিলেন। তাদের অধিকাংশই বিস্ফোরণের ধাক্কায় ছিটকে যাওয়া কাচে আহত হন। বিস্ফোরণের কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস বিস্ফোরক অধিদপ্তর এবং পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। ভয়াল ওই বিস্ফোরণে হারুন অর রশিদ হাওলাদার ছাড়াও নিহত অন্যরা হলেন- কলেজ শিক্ষার্থী মোস্তাফিজুর রহমান (২৬), প্রাইভেটকার চালক স্বপন (৩৯), বাসচালক আবুল কাশেম মোল্লা (৪৫), বেসরকারি চাকরিজীবী রুহুল আমিন (৩০), ভবনের নিচতলায় থাকা শর্মা হাউজের পাচক ওসমান গনি তুষার (৩৫), সেখানে খেতে যাওয়া জান্নাত বেগম (২৩) এবং তার নয় মাসের মেয়ে সোবহানা।