আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
নীলফামারীতে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে পিটিয়ে মাথার চুল কেটে দিলেন পাষণ্ড স্বামী। ঘটনাটি ঘটেছে নীলফামারী পৌর এলাকার মার্কাস মসজিদ পাড়ায়।
মামলা সূত্রে জানা যায়, উক্ত এলাকার আহম্মেদ হোসেন রতনের ছেলে ফয়সাল আহম্মেদ ফাহিমের সঙ্গে নীলফামারী নটখানা এলাকার আব্দুল হাকিম প্রামানিকের কন্যা বর্ষা প্রামানিকের মুসলিম শরীয়ত মতে ০২/০৯/২০১৮ ইং তারিখে বিবাহ হয়। বিবাহের পর থেকে সংসার জীবন চলাকালীন অবস্থায় বর্ষার স্বামী ফাহিম ও তার পরিবারের লোকজন যৌতুকের ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে বিভিন্ন সময় বর্ষার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করে। সংসারে শান্তির কথা ভেবে বর্ষা তাদের সকল অত্যাচার মুখ বুঝে সহ্য করতো। তাদের চাহিদা মতে বর্ষার পিতা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় পরিবারের লোকজন। এরই ধারিাবাহিকতায় গত ১৮/০৭/২০২০ইং তারিখে সকালে বর্ষার স্বামী ফাহিম, দাদা শশুর হাবিবুল্লাহ বেপারী, ভাসুর রাজিব আহম্মেদ, শাশুরী মিলি বেগমসহ সকলে বর্ষাকে লাঠি ও লোহার রড দিয়ে বেধরক মারপিট করে। এ সময় বর্ষার জাঁ জিয়র বেগম, ননদ বিথি আক্তার জোরপূর্বক বর্ষার চুল কেটে দেয়। তাদের আঘাতের ফলে বর্ষা অজ্ঞান হয়ে পড়ে। অসুস্থ অবস্থায় তার নিজ শয়ন কক্ষে ২দিন যাবত বন্দি করে রাখে তাকে। অপরদিকে সকল আসামীগণ নিজেদের দোষ এড়াতে বর্ষার স্বামী ফাহিম বাদী হয়ে কৌশলে উল্টো বর্ষার বিরুদ্ধে নীলফামারী সদর থানায় মারপিট ও ভাংচুরের মিথ্যা মামলা নং- ১৯, তারিখ-২০/০৭/২০২০ দায়ের করে। মামলার ভিত্তিতে সদর থানার এসআই শাহারুল ইসলাম বর্ষাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পরে আদালতে পাঠিয়ে দেয়। আদালতে বর্ষার পিতার পূর্ব পরিচিত এক ব্যক্তি বর্ষাকে চিনতে পেরে তার বাবাকে সংবাদ দিলে বর্ষার বাবা আব্দুল হাকিম আদালতে জামিনের আবেদন করেন। বিজ্ঞ আদালত বর্ষার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা বিবেচনা করে জামিন মঞ্জুর করেন। বর্ষা জামিনে মুক্ত হওয়ার পরে নিজে বাদী হয়ে নীলফামারী সদর থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০২০ এর ১১ (গ)/৩০ ধারায় স্বামীসহ ৮জনকে আসামী করে মামলা নং- ২১, তারিখ, ২১/০৭/২০২০ইং দায়ের করেন।
এ বিষয়ে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মাহামুদ-উন-নবী বলেন, মামলার প্রধান আসামী ফয়সাল আহম্মেদ ফাহিমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতনকারীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির জোর দাবি জানান বর্ষার পরিবার।