ক্রাইম পেট্রোল ডিজিটাল ডেস্ক।।
নরসিংদীর শিবপুরে স্বাক্ষর জা*ল করে ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর (পিআইও) অফিসের সরকারি প্রকল্প টিআর/কাবিখার টাকা আত্মসাতের অভিযোগে প্রজেক্ট কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম তুহিন ও পিওন আশিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ সময় তুহিনের বাসা থেকে ৫২ লাখ টাকা জব্ধ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।
এর আগে গতরাত ৩টার দিকে কার্যসহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম তুহিনের বাসায় অভিযান চালায় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই)। এ সময় তার বাসায় থাকা নগদ ৫২ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন (পিআইও) অফিস ও এনএসআই সূত্রে জানা যায়, গ্রামীণ রাস্তাঘাট ও অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প টিআর /কাবিখা প্রকল্প থেকে ভুয়া বিলের কাগজ ও পিআইওর স্বাক্ষর জাল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা তুলে নেয় অফিসের কার্যসহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা আরিফুল ইসলাম তুহিন ও পিওন আশিক। এর মধ্যে ১৫ জুন শিবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) টিআর/কাবিখা প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেন। কিন্তু বাজেট না থাকায় ৮১টি বিল (বাউন্স হয়) ফেরত আসে। বিষয়টি নিয়ে অফিস জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়।
পরে গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) বিষয়টি নিয়ে গোপন অনুসন্ধান শুরু করেন। এ সময় ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে পিআইও অফিসের ২ জন কর্মচারির সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। পরে সোমবার রাত ৩টার দিকে এনএসআই কর্মকর্তারা পিআইও অফিসের কার্যসহকারী (প্রজেক্ট) কর্মকর্তা তুহিনের বাসায় অভিযান চালায়। এ সময় তার আলমারিতে থাকা নগদ ৫২ লাখ টাকা দেখতে পান তারা। কিন্তু টাকার বিষয়ে সঠিক কোনো উত্তর দিতে পারেনি তুহিন। মঙ্গলবার সকালে পুলিশ নগদ টাকাসহ তাদেরকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে আটক তুহিন ও আশিক স্বাক্ষর জাল করে টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। এ বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে আসে, অফিস সহকারী (প্রজেক্ট) পদে কর্মরত আরিফুল ইসলাম তুহিন এবং আউটসোর্সিং পিয়ন আশিক দীর্ঘদিন ধরে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রকল্পের অর্থ উত্তোলনে জড়িত ছিলেন। তদন্তে ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ, জাল সইযুক্ত বিল এবং পিয়ন আশিকের স্বীকারোক্তি মিলিয়ে তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ নিশ্চিত হয়।
শিবপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকতা মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘প্রকল্পে ১৯১টি বিল হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেওয়া হলে তারা জানান, ৮১টি বিল তুলে নেওয়া হয়েছে। তখন আমরা তাদের কাছে বিলের কাগজ নেই। সেখানে জাল স্বাক্ষরের বিষয়টি ধরা পড়ে। পরে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপে এনএসআই তদন্ত করে তুহিন ও আশিকের সংশ্লিষ্টতা পায়। তুহিনের বাসায় অভিযান চালিয়ে ৫২ লাখ টাকা জব্দ করে তারা।
শিবপুর থানার ওসি মো. আলতাফ হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাসে তুহিন ও আশিক স্বাক্ষর জা*ল করে ৫২ লাখ ৭৮ হাজার টাকা উত্তোলনের কথা স্বীকার করেন। দুদকে তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আমরা নগদ টাকাসহ আটকদের আদালতে সোপর্দের ব্যবস্থা নিচ্ছি।’