কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
কিশোরগঞ্জে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা প্রকল্পের (৮ম পর্যায়) পাসসহ ৫দফা দাবিতে মউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের আয়োজনে মানববন্ধন ও জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরর স্মারকলিপি পেশ করা হয়েছে।
রবিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সামনে ঘন্টাব্যাপী মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কর্মসূচি চলাকালে বক্তব্য রাখেন ইফার সুপার ভাইজার হাফেজ মাও একেএম মস্তোফা কামাল, মউশিক শিক্ষক কল্যাণ পরিষদ কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার সভাপতি মাও এমরুল হাসান, সদর শাখার সাধারণ সম্পাদক মাও আমিনুল হক,কটিয়াদীর মাও জহিরুল ইসলাম, পাকুন্দিয়ার মাও ফখর উদ্দিন,মাও ইসলাম উদ্দীন,মাও ইছাম উদ্দিন,মাও সোলায়মান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প ইসলামিক ফাউন্ডেশন-এর একটি অন্যতম বৃহৎ প্রকল্প। আর্থ-সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ড ও শিক্ষা বিস্তারের কাজে মসজিদের ইমাম সাহেবদের, শিক্ষিত বেকার যুবক ও মহিলাদের সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে সরকার মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্পের আওতায় প্রাক-প্রাথমিক এবং ঝরে পড়া (ড্রপ-আউট) কিশোর-কিশোরী ও অক্ষর জ্ঞানহীন বয়স্কদের জন্য মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। ১৯৯৩ সাল হইতে চালু হয়ে অদ্যাবধি (৭ম পর্যায়) শেষ। প্রতিটি পর্যায়ে সুষ্ঠু ও সুনামের সাথে পরিচালিত হয়ে আসছে। এ প্রকল্পে মসজিদের ইমামগণ মসজিদ কেন্দ্রে শিশু ও বয়স্ক শিক্ষার্থীদেরকে বাংলা, গণিত, ইংরেজি, আরবি, নৈতিকতা ও মূল্যবোধসহ বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা দান করছেন। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে সুবিধা বঞ্চিত স্থানে এ প্রকল্পের মাধ্যমে দেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা বিস্তার ও কোর্স সম্পন্নকারীদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জিত হচ্ছে। এ প্রকল্পের সুবিধাভোগী অধিকাংশই সমাজের অবহেলিত, দরিদ্র ও নিরক্ষর জনগোষ্ঠি। সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় ও নৈতিকতা শিক্ষা প্রদান করা চলমান।
কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে দীর্ঘ ৩৩ বছর থেকে এদেশের প্রায় ৭৩৭৬৮ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা অবহেলিত। কিশোরগঞ্জে প্রায় ১৬শত শিক্ষক প্রকল্পের কর্মরত মসজিদের ইমাম শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মানবিক দিক বিবেচনা করে জননন্দিত ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বৃহৎ প্রকল্প মসজিদ ভিত্তিক শিশু ও গণ শিক্ষা প্রকল্পের সকল শিক্ষকদের যথাযথ মূল্যায়ন করে সরকার পরিচালিত গ্রেড এর অন্তর্ভুক্ত করে আমাদের ৫ দফা দাবি বাস্তবায়নে জোর দাবি জানাচ্ছি।
আমাদের ৫ দফা দাবিগুলো হলো ১। নৈতিকতা ও ধর্মীয় মূল্যবোধ উন্নয়নে মসজিদভিত্তিক শিশু ও গণশিক্ষা কার্যক্রম প্রকল্প (৮ম পর্যায়) মাহে রমজানের মধ্যে পাস করতে হবে ২। বেতন বৃদ্ধি সহ ঈদুল ফিতরের পূর্বে বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশাধ করতে হবে ৩। প্রকল্প স্থায়ীকরণ করতে হবে। কোনোভাবে আউটসোর্সিং পদ্ধতিতে নেওয়া যাবে না ৪। শিক্ষক/শিক্ষিকাগণের প্রয়োজনে কেন্দ্র স্থানান্তরের সুযোগ প্রদান করতে হবে ৫। শিক্ষক/শিক্ষিকাগণ অসুস্থ, অবসর অথবা মৃত্যুবরণ করলে শিক্ষক তহবিল গঠন করে এককালীন অর্থ প্রদান করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ফৌজিয়া খানের কাছে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে স্মারক লিপি পেশ করেন। এ সময় ইসলামিক ফাউণ্ডেশন কিশোরগঞ্জ জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মুহাম্মদ মহসিন খানসহ ইফার শিক্ষক ও শিক্ষিকাগণ উপস্থিত ছিলেন।