কামরুল হক চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি:
কুমিল্লার হোমনা উপজেলার ঘনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনের সম্প্রসারণ, স্যানিটারীসহ বিদ্যুতায়নের কাজ ২৯ অক্টোবর, ২০২০ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে সম্পন্ন করার বাদ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও প্রায় সাড়ে ৩ বছর পেরিয়ে যায়। কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে সম্পন্ন হয় নি কাজটি।
দরপত্র মোতাবেক জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর ২০১৯ খ্রি. তারিখে কাজটির টেণ্ডার দেওয়া হয়। টেণ্ডার আইডি নম্বর-৩৫৬৬৭৯ এবং প্যাকেজ নম্বর-সি-৩৩/২০১৯-২০২০। এ কাজের জন্য ইস্টিমেটেড টেণ্ডার ধরা হয় ৭৪ লক্ষ ৯৬ হাজার টাকা এবং অনুমোদিত টেণ্ডার ধরা হয় ৭৪ লক্ষ ৯৫ হাজার ৯ শ’ ২৫ টাকা ৪ পয়সা। এ কাজটির টেণ্ডার পায় ঠিকাদার মো. মাসুদ আলম, মেসার্স এমএম ইণ্টারন্যাশনাল, ২য় মুরাদপুর, আদর্শ সদর, কুমিল্লা-৩৫০০। কাজটি প্রদান করেন শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর, কুমিল্লা জোন, কুমিল্লা’র নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলী ইমাম।
সরেজমিনে গিয়ে গেছে, বিদ্যালয়ের একাডেমিক ভবনটির সম্প্রসারণের কাজ দীর্ঘ সাড়ে ৩ বছরেও সম্পন্ন না হওয়ায় বিদ্যালয়ের লাইব্রেরি, বিজ্ঞানাগার এবং প্রধান শিক্ষকের কক্ষেও শিক্ষার্থীদের শ্রেণি পাঠদান চালিয়ে যাচ্ছেন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ হারুন-অর-রশিদ জানান, ‘ঠিকাদার বিদ্যালয়টির একাডেমিক ভবন সম্প্রসারণের কাজটি যথাসময়ে সম্পন্ন করতে চুক্তিবদ্ধ থাকলেও গত ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে আনুমানিক ২০% কাজ সম্পন্ন করে চলে যান। এরপর থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে তাকে বার বার ফোন করেও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয় নি। পরে কাজটি সম্পন্ন করার জন্য গত ২০ এপ্রিল, ২০২২ খ্রি. তারিখে নির্বাহী প্রকৌশলী, শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর, কুমিল্লা অঞ্চল, কুমিল্লা’র বরাবর আবেদন করলেও অদ্যাবধি কোনো প্রকার ব্যবস্থা নেওয়া হয় নি। কাজটি সম্পন্ন না হওয়ায় শিক্ষার্থীদের পাঠদানে বিঘ্ন ঘটছে।’
এ বিষয়ে জানতে ঠিকাদার মো. মাসুদ আলম এর ব্যক্তিগত মোবাইল নাম্বারে একাধিকবার ফোন করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয় নি।
ঘনিয়ারচর উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও কুমিল্লা জেলা পরিষদের সদস্য মোহাম্মদ মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমি মনে করি, কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণেই এক বছরের কাজ সাড়ে ৩ বছরেও সম্পন্ন হয় নি। কাজটি দ্রুত সম্পন্ন করে শিক্ষার্থীদের শ্রেণি কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
এ বিষয়ে জানতে গত ২৮ আগস্ট,২০২৩ খ্রি. তারিখে শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তর, কুমিল্লা অঞ্চল এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আলী ইমাম এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ আমি ঠিকাদারকে কয়েকবার বলেছি, সে কাজ করছেনা। তাকে দিয়ে কাজ হবে না। আমি আগামী ৮/১০ দিনের মধ্য বিদ্যালয়টি ভিজিট করে অন্য কাউকে দিয়ে কাজটি করিয়ে দিব।’
এরপর থেকে প্রায় এক মাস অতিবাহিত হয়ে গেলেও তিনি ( নির্বাহী প্রকৌশলী) অদ্যাবধি বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন নি। এমনকি তার ব্যবহৃত মুঠোফোন নাম্বার ০১৭১৫-১৩৮৭৯০ -এ তাকে গত ২ দিন যাবত একাধিকবার ফোন করলেও তিনি প্রতিবেদকের ফোন রিসিভ না করায় পরবর্তীতে উক্ত নাম্বারে তাকে ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হয়। তারপরেও তিনি কোনো প্রকার জবাব দেন নি।