crimepatrol24
২৮শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, এখন সময় বিকাল ৫:০১ মিনিট
  1. অনুসন্ধানী
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-আদালত
  6. আঞ্চলিক সংবাদ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আফ্রিকা
  9. আবহাওয়া বার্তা
  10. আর্কাইভ
  11. ইউরোপ
  12. ইংরেজি ভাষা শিক্ষা
  13. উত্তর আমেরিকা
  14. উদ্যোক্তা
  15. এশিয়া

আমার বাবা খালেদ মোশারফ হত্যার বিচার হবে না?

প্রতিবেদক
মো: ইব্রাহিম খলিল
নভেম্বর ৭, ২০১৯ ৩:০৫ অপরাহ্ণ

মেহজাবীন খালেদ

আবু সায়েম মোহাম্মদ সা’-আদাত উল করীম :

আবারও নভেম্বর মাসটা চলে এলো। নভেম্বর এলেই বাবার কথাই শুধু মনে হয়। কী জঘন্যভাবেই না তাকে (মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তম, ২ নম্বর সেক্টর এবং কে ফোর্সের অধিনায়ক) হত্যা করা হয়েছে। তার সঙ্গে আরও হত্যা করা হয় ২ নম্বর সেক্টরের সেকেন্ড ইন কমান্ড লে. কর্নেল এটিএম হায়দার (বীরউত্তম) ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার আসামি কর্নেল নাজমুল হুদাকেও (বীরবিক্রম)। এত বড় বীর মুক্তিযোদ্ধারা সেদিন ষড়যন্ত্রের ফাঁদে পড়ে নায়ক থেকে ভিলেন হয়ে গিয়েছিলেন। একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ডাকে আমার বাবা ২৫ মার্চ পাকিস্তানি শাসকের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। একবারও চিন্তা করেননি তার পরিবারের কথা। কোথায় আছে তারা, এটা না ভেবে শুধু কীভাবে বাংলাদেশকে স্বাধীন করতে হবে সেই চিন্তা নিয়েই প্রতিটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেন। রণাঙ্গনে সম্মুখযুদ্ধে স্প্রিন্টার লেগেছিল তার মাথায়। সেদিন শত্রুরা তাকে হত্যা করতে পারেনি। ভারতে চিকিৎসার পর তিনি আবার সুস্থ হয়ে ওঠেন। কিন্তু ৭ নভেম্বর তাকে প্রাণ দিতে হয়- যুদ্ধের ফসল স্বাধীন বাংলাদেশের সতীর্থদের হাতে। প্রায়ই ভাবি, আমি তো সাধারণ কারও মেয়ে হতে পারতাম। তাহলে স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারতাম। হয়তো অকালে বাবাকে হারাতে হতো না। কত কথা বলার ছিল, বলা হলো না তাকে কত ভালোবাসি। যুদ্ধের পরের ছোট্ট একটি ঘটনা। যুদ্ধের সময় রণাঙ্গনে তার মাথায় যে স্প্রিন্টার ঢুুকেছিল, তার একটি গল্প শুনেছিলাম বাবার বন্ধু গাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদের (সচিত্র সন্ধানীর সম্পাদক, আমার মায়ের সম্পর্কে খালাতো ভাই) সহধর্মিণীর কাছ থেকে। যুদ্ধের পরে যখন বাবাকে তার বাড়িতে দাওয়াত দেওয়া হয়, তিনি বলেছিলেন, কী দিয়ে বরণ করব, আপনি তো সদ্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে এসেছেন। বাবা উত্তরে বলেছিল, আমার মাথায় যে গর্ত হয়েছে (স্প্রিন্টার আঘাতে), সেটাই আমার সবচেয়ে বড় পাওয়া। দেখ বাংলাদেশ এটাই দিয়েছে আমাকে। আমাকে অনেকেই বলেন- আপনারা তো ‘৭৫-এর পর ভালোই ছিলেন। আসলে কি তাই? ‘৭৫-এর পর আমরা কেমন ছিলাম, সেটা বোঝানো খুব কষ্টকর। অনেক ছোট আমরা, আমার বয়স ৭ বছর, দ্বিতীয় বোন ৫ আর একদম ছোট্টটা মাত্র এক বছরের। কিছুই বোঝে না সে। বাবা নেই সেটা একটা কষ্ট, আরেকটা কষ্ট হলো জীবন চলার কষ্ট। কোথায় থাকব, কীভাবে থাকব, কীভাবে চলব, কিছুই বুঝতে পারছিলেন না মা। একটু বলে রাখা দরকার, আমাদের চলার জন্য বাবা কিছুই রেখে যাননি। আমার নানি যখন ৮ নভেম্বর আমাদের ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতে গেলেন, আমার ছোট্ট বোনের কিছু জিনিসপত্র আনতে গিয়ে দেখেন, বাড়িতে একটি সুতাও নেই। সিপাহিরা সবকিছু লুট করে নিয়ে গেছে, তাকে আটকে রেখে আমাদের পরিবারকে খুঁজছে। আমরা ৭ নভেম্বরের আগেই নানির বাড়িতে গিয়ে থাকছিলাম। আমার নানি সেদিন পালিয়ে কোনোভাবে প্রাণে বেঁচে আছেন। আমরা বাবাকে শুধু সেদিন হারাইনি; তার সব স্মৃতিও হারিয়ে ফেলেছি। কত নিষ্ঠুর তারা, স্মৃতিটুকু আমাদের রাখতে দেয়নি। জীবন-সংগ্রামের কথা আগেই বলেছি। ক্যান্টনমেন্ট থেকে চলে আসার পর অন্তত এক বছর আমরা স্কুলে যাইনি। কীভাবে যাব? শহীদ আনোয়ারে পড়তাম; তাহলে তো আবার ক্যান্টনমেন্টে যেতে হতো। তখন অনেক কিছুই বুঝতে পারিনি, এখন বুঝি, মায়ের ভয়ের কারণেই আমাদের স্কুলে যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়। পরে হলিক্রসে ভর্তি হই। আবার স্কুল শুরু করলেও সেটা ছিল অনেকটা ধরাবাঁধা জীবন। অন্য বাচ্চাদের মতো আমরা সবার সঙ্গে মেলামেশা করতে পারতাম না। নিজের পরিচয় পর্যন্ত দিতাম না। অনেকটা নিজেদের আমরা গুটিয়ে রেখেছিলাম। মায়ের একটাই ভয়- যদি বাবার মতো আমাদেরও মেরে ফেলা হয়? আমরা তিন বোন ও মা মামার বাড়িতে একটি ঘরে থাকতাম। আমার বাবার তো এত শুভাকাঙ্ক্ষী, এত বন্ধুবান্ধব, তাদের কেউ এলো না সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে। সেদিন মামা আশ্রয় না দিলে হয়তো রাস্তার ভিখারি হতাম আজ। মনে আছে, খুব কষ্ট করে একাকী মা আমাদের আগলে ধরে তার জীবন শুরু করেন। বাবার তো কিছুই ছিল না। তাই মা বাধ্য হয়ে কাপড় সেলাই করে যা পেতেন, তা দিয়েই আমাদের স্কুলের চাহিদা মেটাতে থাকেন। জিয়াউর রহমানকে হত্যার পর খালেদা জিয়া ও তার পরিবার যেসব সুযোগ-সুবিধা পেয়েছিল, তার কিছুই তো আমরা পাইনি। তার ছেলেদের পড়াশোনার জন্যও ভাতা দেওয়া হয়েছে। হয়তো কিছু না দেওয়াতে আলল্গাহ আমাদের তার ও তার পরিবার থেকে ভালোই রেখেছেন। এখনও চোখ বন্ধ করলে আমি বাবার লাশটি দেখতে পাই। তার চেহারাটা মনে পড়ে; একদম আকাশের চাঁদের মতো সুন্দর। আমার বাবার লাশ আমরা কয়েকদিন পর পাই। আসলে ক্যান্টনমেন্ট থেকে নিয়ে আসারও লোক ছিল না সেদিন। সেদিন বুঝতে পারলাম আমার বাবার সঙ্গে যারা এত সময় কাটিয়েছে- আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব তারা আমাদের পাশে নেই। বাবার সঙ্গে আমাদের শেষ দেখা ৬ নভেম্বর ১৯৭৫; আমরা তার সঙ্গে ক্যান্টনমেন্টের বাড়িতে রাতের খাবার খাই, খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নানির বাড়ি চলে যাই। মনে আছে, আমার এক বছরের বোন কোনোভাবেই বাবাকে ছাড়বে না। অনেক কাঁদছিল; হয়তো অবুঝ শিশু বুঝেছিল যে, তার বাবাকে আর কোনোদিনই জীবিত পাবে না।
এখন আমরা তিন বোন বড় হয়েছি। অনেক কিছু বুঝি। আমি রাজনীতিতে এসেছি, অনেক মানুষের সঙ্গে ওঠাবসা। অনেকেই আমাকে বলে সংসদ সদস্য হয়েও তুমি তোমার বাবার এবং তার সহকর্মীদের হত্যার বিচার করছ না কেন? আমার দৃঢ় আশা, আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিচারের পদক্ষেপ নেবেন। তিনি তো বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার করেছেন। কেন তিনি ‘৭৫-এর ৭ নভেম্বরের বীরসন্তানদের হত্যার বিচার করবেন না?
প্রধানমন্ত্রীর কাছে সবিনয় আবেদন, একটি ট্রূথ কমিশন গঠন করে আমার বাবার ও অন্য মুক্তিযোদ্ধা অফিসারদের হত্যার তদন্ত করা উচিত। জিয়াউর রহমানের নির্দেশে মেজর জলিল ও মেজর আসাদ নির্বিঘ্নে আমার বাবাসহ তিন মুক্তিযোদ্ধাকে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করেন। যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, আমার বাবাকে ভারতের দালাল হিসেবে আখ্যা দিয়ে মিথ্যা গুজব রটিয়ে লিফলেট ছড়িয়েছিল, তাদের ব্যাপারেও তদন্ত হওয়া দরকার। জাসদ ৭ নভেম্বরকে সিপাহি-জনতার অভ্যুত্থান এবং বিএনপি জাতীয় বিপল্গব ও সংহতি দিবস বলে থাকে। আসলেই কি তা? হাসি লাগে, মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করে তারা এ কলঙ্কিত দিবসটিকেই খুশির দিবস হিসেবে পালন করছে! ধিক্‌ তাদের! জাতি আর বিকৃত ইতিহাস শুনতে চায় না। এ দিবসটি নিয়ে মিথ্যা প্রচার নিষিদ্ধ করতে হবে। ৭ নভেম্বরে শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি সম্মান প্রদর্শন করতে হবে আমাদের।
(সাবেক সংসদ সদস্য, সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের কন্যা)

Share This News:

সর্বশেষ - লাইফ স্টাইল

আপনার জন্য নির্বাচিত
সুন্দরগঞ্জে ৭ জুয়ারী গ্রেফতার

সুন্দরগঞ্জে ৭ জুয়ারী গ্রেফতার

ডুলাহাজারা বিটের রিজার্ভ ফরেস্ট উজাড়!

ডোমারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২ অনুষ্ঠিত

ডোমারে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সপ্তাহ-২০২২ অনুষ্ঠিত

হোমনায় ঘাগুটিয়া হানাদারমুক্ত দিবস উদযাপন

কুমিল্লায় আঞ্চলিক কাব ক্যাম্পুরী-২০১৯ এর তৃতীয় দিনে “কাব কার্ণিভাল” অনুষ্ঠিত

র‌্যাব-৪ এর মেজর কাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ এর বিদায় সংবর্ধনা

জামালপুর উপজেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ৫শ’ একর আবাদি জমি রক্ষা

সুন্দরগঞ্জে সিটি ব্যাংকের ১৯৪ তম শাখা( এজেন্ট ব্যাংকিং) এর উদ্বোধন

সুন্দরগঞ্জে সিটি ব্যাংকের ১৯৪ তম শাখা( এজেন্ট ব্যাংকিং) এর উদ্বোধন

হোমনায় গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ মাস উদ্বোধন ও র‌্যালি

হোমনায় গ্রামীণ সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ মাস উদ্বোধন ও র‌্যালি

হোমনায় কৃষি উপকরণ বিতরণ

জামালপুরে এডাবের বিজয় দিবসের আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত