কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি।।
কিশোরগঞ্জে রাজনৈতিক উত্তাপ চরমে পৌঁছেছে, যেখানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটিকে নিষিদ্ধ ঘোষণার দাবিতে সড়কে নেমেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এবং বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন। বুধবার, ৭ মে বিকাল ৪টায় শহরের প্রাণকেন্দ্রে আয়োজিত এই বিক্ষোভ মিছিলটি গুরুদয়াল সরকারি কলেজ মাঠ থেকে শুরু হয়। এরপর মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো প্রদক্ষিণ করে বিজয় চত্বরে গিয়ে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
বিক্ষোভকারীরা দাবি জানান, বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারকে ‘ফ্যাসিস্ট’ আখ্যায়িত করে তার বিচার করতে হবে এবং দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম বন্ধ করতে হবে। তাদের মতে, দেশের গণতন্ত্র, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও আইনের শাসন আজ হুমকির মুখে পড়েছে আওয়ামী লীগের ‘একদলীয় দুঃশাসনের’ কারণে।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দেশের রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহার করে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। বিচার ব্যবস্থাসহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তর এখন দলীয় নিয়ন্ত্রণে চলে গেছে। আমাদের লক্ষ্য একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা, যেখানে সকল মত ও চিন্তার স্বাধীনতা থাকবে।”
বিক্ষোভে নেতৃত্ব দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন। সঙ্গে ছিলেন সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্স, যুগ্ম আহ্বায়ক রাতুল নাহিদ ভূঁইয়া, সদস্য ইয়াজ ইবনে জসীম, আনাস ইব্রাহিম, মানস সরকার উৎস, সামছুর রহমান এবং আইনুল ইসলাম ঝলকসহ আরও অনেক নেতাকর্মী।
তরুণদের অংশগ্রহণ ছিল লক্ষণীয়, যারা সরকারের বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন। বক্তারা সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “দেশের জনগণ জেগে উঠেছে। আর ফ্যাসিবাদের অধীনে চলতে দেবে না। আমরা রাজপথে থাকবো, জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠিত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে।”
সমাবেশে বক্তারা আরও অভিযোগ করেন, বর্তমান সরকার বিরোধী দল দমন, মিডিয়াকে নিয়ন্ত্রণ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে দেশকে একটি ‘দলতান্ত্রিক’ ব্যবস্থায় পরিণত করেছে। তারা বলেন, “গণতন্ত্রের নামে দেশে চলছে ক্ষমতার একচ্ছত্র দখলদারি। এ অবস্থার অবসান ছাড়া জনগণের মুক্তি সম্ভব নয়।
বিক্ষোভে অংশগ্রহণকারী বক্তারা আওয়ামী লীগকে ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে চিহ্নিত করে দলটির রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ করার দাবি জোরালোভাবে উত্থাপন করেন। তারা মনে করেন, এই দলটিকে নিষ্ক্রিয় না করলে দেশে প্রকৃত গণতন্ত্র ফিরে আসবে না।
বক্তব্যে বক্তারা জানান, আজকের কর্মসূচি ছিল একটি প্রতীকী প্রতিবাদ। ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আন্দোলন গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। জনগণকে সচেতন করে, রাজপথে নামিয়ে সরকারবিরোধী গণআন্দোলন জোরদার করা হবে বলেও তারা জানান।