সম্পাদকীয়:
গত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে শেখ হাসিনা সরকার পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। পরবর্তীতে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এখনও বিভিন্ন দপ্তরের কাজে মন্থর গতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। রাস্তাঘাটে যানবাহণ নিয়ত্রণেও ট্রাফিক ব্যবস্থা প্রশ্নবিদ্ধ। অথচ একের পর এক চলছে ষড়যন্ত্র। সরকারি-বেসরকারি সংগঠনের ব্যানারে বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে হচ্ছে আন্দোলন। সম্প্রতি বাংলাদেশ সচিবালয়ে ঘটে গেল ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা। থেমে নেই পতিত সরকারের নেতাকর্মীদের মিছিল ও প্রচার প্রচারণা। এসব কার্যক্রম গভীরভাবে পর্যালোচনা করলে বুঝা যায় যে, এহেন কর্মকাণ্ডের পক্ষে বিপ্লবী সরকারকে ব্যর্থ করার সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র বিদ্যমান রয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত কারা এসব ষড়যন্ত্রে লিপ্ত তাদেরকে শনাক্ত করে কঠোর হস্তে দমন করা, সকল ক্ষেত্রে বিরাজমান বৈষম্যগুলো দূর করে জনগণের সেবা নিশ্চিত করা, রাষ্ট্র সংস্কারে আরও মনোযোগী হওয়া। স্বৈরাচার সরকারের আমলে সকল দপ্তরের সুবিধাবঞ্চিত ও ভুক্তভোগীদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদেরকে রাষ্ট্রের কাজে লাগানোর ব্যবস্থা করা।
আমরা যতদূর জানি, এখনও সুবিধাবঞ্চিত অনেক কর্মকর্তাকে তাদের ন্যায্য অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হয় নি। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর স্বৈরাচার সরকারের আমলে সুবিধাবঞ্চিত অনেক কর্মকর্তা তাদের অধিকার ফিরে পেতে কয়েক মাস পূর্বে আবেদন করেছেন কিন্তু অজ্ঞাত কারণে তাদের বিষয়ে বর্তমান সরকারের পক্ষ থেকে আজ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় নি। এক্ষেত্রেও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে বলে আমরা মনে করি।
সরকার উপর্যুক্ত বিষয়ে যথাসময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হলে, ষড়যন্ত্রকারীরা তাদের লক্ষ্য বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়ে যেতে পারে।
অবশেষে আমরা মনে করি, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত অতিদ্রুত সকল ষড়যন্ত্রকারী ও অপরাধীদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টন্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা। স্বৈরাচার সরকারের আমলে সুবিধাবঞ্চিত কর্মকর্তাদের সকল সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করে এবং সকল বৈষম্যের অবসান ঘটিয়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করা। কারণ বৈষম্য দূরীকরণের জন্য আন্দোলন – সংগ্রামের পর অন্তর্বর্তী সরকারের আমলেও বৈষম্য বিদ্যমান থাকা কখনওই কাম্য নয়।