
মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর:
রংপুর সিটিকর্পোরেশনসহ বদরগঞ্জ উপজেলায় ব্যাঙ্গের ছাতার মতো গড়ে উঠেছে অবৈধ ইট ভাটা। ইট প্রস্তুত, ভাটা স্থাপন ও জ্বালানির ব্যবহারের নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় ভাটা মালিকেরা চালিয়ে যাচ্ছে ইট প্রস্তুতকরণে যাবতীয় কার্যক্রম।
রংপুর সদরের লাহিড়ীর হাট এলাকায় বদরগঞ্জ রোড সংলগ্ন মেসার্স কে.টি.এল ব্রিকস ও বদরগঞ্জের ময়নাকুড়ি গ্রামের মসজিদের পাশে অবস্থিত এস. বি.এল ব্রিকস এ গিয়ে সরেজমিনে দেখা গেছে, তারা প্লাস্টিক গুড়া ও প্লাস্টিক বোতাম কয়লায় মিশিয়ে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করছে। প্রায় ভাটাগুলো গড়ে উঠেছে ফসলি জমি, লোকালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় ৩শ গজের ভিতরে। এভাবেই জ্বালানি হিসেবে দেদারছে কয়লার পাশাপাশি পোড়ানো হচ্ছে মেলামাইন, প্লাস্টিক বোতাম ও প্লাস্টিক জাতীয় পরিবেশ দুষণকারী নানা দ্রব্য । কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ দুষণে আশেপাশের পরিবেশ হুমকির মুখে, সেইসাথে প্রতিবন্ধী শিশুদের সংখ্যাও বাড়ছে। এমন সব বিষাক্ত দ্রব্যেকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করায় এলাকার সচেতন ব্যক্তিবর্গ ভয়ানক ক্যান্সারের মতো প্রাণঘাতী ব্যাধিতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন।
মেসার্স কে.টি.এল ব্রিকস এর মালিক নুর আলম খাঁনের কাছে পরিবেশ দুষণবন্ধে ও উন্নত প্রযুক্তিতে ভাটার ব্যবহার সম্পর্কে পদক্ষেপ জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে বলেন, আমার প্রতিষ্ঠাণের সার্বিক কাগজপত্র ঠিক আছে। এব্যাপারে আমি কোনো প্রকার কৈফিয়ত দিতে প্রস্তুত নই।
ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপনে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী চিমনির ১২০ ফুট উঁচু নির্মাণে বিধান থাকলেও প্রায় ভাটায়ই দেখা গেল ৮০-৯০ ফুট চিমনির ব্যবহার। ইট ভাটার নিয়ন্ত্রণ ও সংশোধনী আইন-২০১৯ মতে টপ সয়েল ব্যবহার বন্ধের বিধান করা হলেও ভাটাগুলো প্রচুর পরিমাণে এর ব্যবহার চালিয়ে যাচ্ছে। মাটি সংগ্রহে স্থানীয় আবাদি জমিগুলোকে অনেকাংশে ধ্বংস করা হচ্ছে। ইট বহনকারী ভারী জানবাহনে গ্রামীণ জনপদগুলো এখন ধ্বংসের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ বিষয়ে জনপ্রতিনিধিদেরও নেই কোনো মাথা ব্যাথা, নেই কোনো প্রশাসনের কার্যকরী ভূমিকা। ভাটাগুলো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও লোকালয়ে গড়ে ওঠার পাশাপাশি আইনের তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে ইট প্রস্তুত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া স্থানীয় প্রশাসনের শুভদৃষ্টি ও সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন এসব এলাকার জনগণ।