মো. ইব্রাহিম খলিলঃ
এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের নেতৃত্বে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। গত ১০ মার্চ হতে ১৪ মার্চ প্রতীকী অনশন পালন করেছে এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সমগ্র দেশ থেকে কয়েক হাজার শিক্ষক-কর্মচারী এ আন্দোলনে প্রতিদিনই অংশগ্রহণ করছে। আজ থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা । শিক্ষকরা জাতীয়করণের যৌক্তিক দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
আজ বুধবার, এমপিওভুক্ত শিক্ষক -কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়েছে, প্রেসক্লাবের অনশনের পাশাপাশি ১২ তারিখ হতে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে চলমান ৩ ঘণ্টা কর্মবিরতি ১৬ তারিখ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে।
জোটের আহবায়ক অধ্যক্ষ মাইন উদ্দীন ও সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, ‘সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে মাত্র ৭৮৬ কোটি টাকার বাজেটে ৩৭ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করে তিনি তাঁর উক্তি “শিক্ষার জন্য ব্যয় উত্তম বিনিয়োগ” এর বাস্তব প্রমাণ রেখেছেন। শুধু তাই নয়, তিনি সে সময় বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের জন্য ২৫ টাকার মাসিক বেতন কে ৫০ টাকায়, কলেজ শাখার শিক্ষকদের ৫০ টাকার বেতনকে ১০০ টাকায় উন্নীতকরণসহ কর্মচারীদের জন্য রেশনিং এর ব্যবস্থা করেন। একজন রাষ্ট্র নায়ক কতটুকু বিচক্ষণ ও শিক্ষাবান্ধব হলে সদ্য স্বাধীন দেশ ও ভঙ্গুর অর্থনৈতিক নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে শিক্ষার জন্য এতো বড়ো পদক্ষেপ নিতে পারেন।
বর্তমানে এমপিওভুক্ত বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সকল শিক্ষক-কর্মচারী ও অধ্যক্ষগণ ২০০৪ খ্রি. থেকে মূল বেতনের ২৫% উৎসব ভাতা পান,কর্মচারী থেকে অধ্যক্ষ পর্যন্ত বাড়ি ভাড়া পান মাসিক নির্ধারিত ১ হাজার টাকা এবং চিকিৎসা ভাতা পান মাসিক নির্ধারিত ৫শ’ টাকা।
ভারতীয় উপমহাদেশসহ পৃথিবীর কোথাও এমন নজির শিক্ষাক্ষেত্রে শিক্ষক-কর্মচারীদের জন্য আছে বলে শিক্ষকদের জানা নেই। উৎসব
ভাতা, বাড়িভাড়া ও চিকিৎসা ভাতার জন্য সরকার যদি প্রতি অর্থবছরে দুই থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করে, তাহলে অনায়াসেই এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণ করা সম্ভব। সরকারের ৬ লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টাকার বাজেটে এ অর্থ বরাদ্দ করতে সমস্যা কোথায়- এ প্রশ্ন সুশীল সমাজ ও শিক্ষকদের।
জোটের যুগ্ম-আহবায়ক- ১ অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন আজিজী তার বক্তব্যে বলেন, ‘শিক্ষক-কর্মচারীগণ আজ ২০ দিন ধরে রাজপথে অবস্থান করছেন । কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা সরকারের কোনো মহল শিক্ষকদের সাথে কোন আলোচনা আজও করেনি যা দুঃখজনক ও হতাশাব্যঞ্জক। বিশেষকরে, শিক্ষকদের শ্রেণি কক্ষের পরিবর্তে রাজপথে থাকা একেবারেই বেমানান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট আশা করবো, তিনি যাতে দ্রুত শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে সমস্যার সমাধান করেন এবং শিক্ষকদের শ্রেণি কক্ষে ফিরিয়ে নেন।’
দেশের শিক্ষকগণ ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫ মার্চ কর্মবিরতি পালন করায় জোটের পক্ষ থেকে তাদেরকে কৃতজ্ঞতা ও অভিনন্দন জানানো হয়।
সারা দেশ থেকে আন্দোলনে অংশ নেওয়া নেতৃবৃন্দের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেখ মো. জসিম উদ্দিন, শাহ আলম, রফিকুল ইসলাম, আবু রায়হান, অধ্যক্ষ রুহুল আমীন, মোঃ মহসীন, ঝর্ণা বিশ্বাস, ইমরান হোসেন, আবুল বাশার, জহিরুল ইসলাম, ফরিদ উদ্দিন, আমান উল্লাহ, আফজালুর
রশিদ, মোঃ শাহ আলম, বেনীমাধব দেবনাথ, রতন কুমার দেবনাথ, আবুল বাশার নাদিম, মামুনুর রশিদ, মাইনউদ্দীন প্রিন্স, জিএম শাওন,কামরুজ্জামান চৌধুরী, আবুতালেব সোহাগ, নজরুল ইসলাম,তোফায়েল সরকার, মো. রবিউল, গোলাম মোস্তফা, ফয়েজ আহমেদ, শেখ নজরুল ইসলাম, মোজাম্মেল হক ও আবু ইউসুফ প্রমুখ।