crimepatrol24
১৮ই এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, এখন সময় সকাল ৮:৩৫ মিনিট
  1. অনুসন্ধানী
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইটি বিশ্ব
  5. আইন-আদালত
  6. আঞ্চলিক সংবাদ
  7. আন্তর্জাতিক
  8. আফ্রিকা
  9. আবহাওয়া বার্তা
  10. আর্কাইভ
  11. ইউরোপ
  12. ইংরেজি ভাষা শিক্ষা
  13. উত্তর আমেরিকা
  14. উদ্যোক্তা
  15. এশিয়া

মেঘনায় রাতভর বালু উত্তোলন, ভোরের আগেই উধাও চক্র

প্রতিবেদক
মো: ইব্রাহিম খলিল
ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০২৫ ৮:৪১ অপরাহ্ণ

 

কামরুল হক চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধি।।

কুমিল্লার মেঘনা উপজেলার চালিভাঙ্গা ইউনিয়নটি একটি দ্বীপের মতো, চারদিকে নদী বেষ্টিত। সড়কপথে সেখানে পৌঁছানোর কোনো ব্যবস্থা নেই, একমাত্র নৌযানই যাতায়াতের মাধ্যম। এর ফলে অবৈধ বালু উত্তোলনকারী চক্রের জন্য এটি সুবিধাজনক জায়গায় পরিণত হয়েছে। রাত বাড়লেই রামপ্রসাদের চরে শুরু হয় অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কর্মযজ্ঞ। গভীর রাত থেকে ভোর পর্যন্ত নদীর বুক চিরে চলে এই তৎপরতা, আর দিনের আলো ফোটার আগেই চক্রটি গায়েব হয়ে যায়।

নদী থেকে নির্বিচারে বালু উত্তোলনের ফলে ইতোমধ্যে রামপ্রসাদের চর এলাকার প্রায় ১০০ একর জমি বিলীন হয়ে গেছে। এতে তীরবর্তী বিস্তীর্ণ এলাকা ধসে যাচ্ছে, বাড়ছে ভাঙনের ঝুঁকি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট কামরুজ্জামান বলেন, ‘নদীর পাড় ঘেঁষে বসবাসরত মানুষের মনে আতঙ্ক-আজ না হয় কাল, তাদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি সব নদীগর্ভে তলিয়ে যাবে।’

চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের একাধিক বাসিন্দা নাম প্রকাশ না করার শর্তে তারা জানান, বালুখেকোদের লাগামহীন দৌরাত্ম্যে এলাকার কৃষিজমি ও বসতভিটা হারিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি এ বিষয়ে স্থানীয়ভাবে একটি সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে বালু উত্তোলনকারীরা কার্যক্রম বন্ধ রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরপর প্রায় ২০ দিন কাজ বন্ধও ছিল, তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে আবারও শুরু হয়েছে রাতভর বালু উত্তোলন।

তারা আরও জানান, বালু খেকোরা বাল্কহেডগুলো দিনের বেলা নলচর ট্রলার ঘাটে রাখে, আর পার্শ্ববর্তী সোনারগাঁ ও গজারিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ড্রেজার লুকিয়ে রাখা হয়। বালুবাহী বাল্কহেডগুলো আড়াইহাজার ও বৈদ্যেরবাজার হয়ে মেঘনা সেতুর নিচ দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছায়। বালু উত্তোলনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত ফসলি জমির পরিমাণ আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে। এছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা বাধা দিতে গেলে বা প্রশাসন ও সাংবাদিকদের অবগত করলে তাদেরকে মে*রে ফেলার হু*মকিও দেওয়া হয়। ফলে আতঙ্কিত হয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায় না।

কুমিল্লা জেলা যুবদলের সদস্য ও মেঘনা থানা যুবদলের পদপ্রার্থী হোসাইন মোহাম্মদ মহসিন মিয়া বলেন, ‘নলচর গ্রামের চালিভাঙ্গা ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি বারেক প্রধান, মেঘনা থানা যুবদলের আহ্বায়ক রবিউল্লাহ রবি, ইউনিয়ন যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আলী হোসেন, মেঘনা থানা ছাত্রদলের আহ্বায়ক হাসনাত প্রধানসহ আরও কয়েকজন এই অবৈধ কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত। এর আগেও তাদের বিরুদ্ধে এই অপরাধে নিয়মিত মামলা হয়েছিল।’

অবৈধ বালু উত্তোলনের বিষয়ে অভিযুক্ত কয়েকজনের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাদের পাওয়া যায়নি।

চালিভাঙ্গা নৌপুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ আজমগীর হোসাইন বলেন, ‘আমি অনেকবার অভিযান চালিয়েছি, কিন্তু তারা রাতের আঁধারে কাজ করে। সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও স্থানীয়দের সহযোগিতা ছাড়া এটি বন্ধ করা কঠিন। সম্প্রতি নৌপথে চাঁ*দাবাজি বন্ধে অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হয়েছি। বালুখেকোরা অত্যন্ত ভয়ঙ্কর।’

চাঁদপুর রিজিওনের কোস্টগার্ডের (লে.) কমান্ডার তাকিউল আহসান জানান, ‘চালিভাঙ্গা এলাকাটি আমাদের আওতার বাইরে। তারপরও আমরা অভিযান চালাই। তবে জেলা প্রশাসন যদি আমাদের দায়িত্ব দেয়, তাহলে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা সম্ভব হবে।’

বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মেঘনা অঞ্চলের দায়িত্বপ্রাপ্ত সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন আদিল শাহরিয়ার বলেন, ‘খুব শিগগিরই ওই এলাকার বালুখেকোদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হবে। নৌপথে চাঁ*দাবাজির বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযানের সময় হামলার শিকার হতে হয়েছে। তবে অচিরেই বড় ধরনের অভিযান চালানো হবে।’

চালিভাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির বলেন, ‘প্রতিদিন বালু উত্তোলন করা হয়। বাধা দেওয়া সম্ভব নয়, কারণ আমাদের দল ক্ষমতায় নেই। যারা বালু উত্তোলন করে, তারাই নদীপথ থেকে প্রতিদিন এক থেকে দেড় লাখ টাকা চাঁদা উঠায়।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হ্যাপী দাস বলেন, ‘আমি সেনাবাহিনী, কোস্টগার্ড ও পুলিশের সঙ্গে কথা বলেছি। শিগগিরই এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের আইনি কাঠামোর দুর্বলতার কারণেই বালুখেকোরা ভয় পায় না। নিয়মিত মামলা হলেও তারা সহজেই জামিন নিয়ে ফিরে আসে। কারণ, যদি এক রাতে ৭-৮ লাখ টাকার বালু উত্তোলন হয়, তবে ১০ দিন কারাভোগ করলেও আর্থিকভাবে ক্ষতির কিছু থাকে না। আইনের এই দুর্বলতা বালু খেকোদের আরও বেপরোয়া করে তুলেছে। তাদের দাবি, আইনের কঠোর প্রয়োগ ছাড়া এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়। নিয়মিত অভিযান ও কঠোর শাস্তি নিশ্চিত না করলে নদীভাঙন, কৃষিজমি ধ্বংস ও পরিবেশগত বিপর্যয় আরও তীব্র আকার ধারণ করবে বলে মনে করেন তারা।’

 

Share This News:

সর্বশেষ - জাতীয়

আপনার জন্য নির্বাচিত
সুন্দরগঞ্জে ৭ জুয়ারী গ্রেফতার

সুন্দরগঞ্জে ৭ জুয়ারী গ্রেফতার

কেএমপি’র অভিযানে মা’দকসহ ৩ ব্যবসায়ী গ্রে’ফতার

কেএমপি’র অভিযানে মা’দকসহ ৩ ব্যবসায়ী গ্রে’ফতার

১০০% ইংরেজি শেখার জন্য এই বইটিই আপনার প্রয়োজন

কিশোরগঞ্জে আরাফাত রহমান কোকো স্মৃতি টি-টোয়েণ্টি ক্রিকেট টুর্নামেণ্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত

কেএমপি’র অভিযানে মাদকসহ ৩ ব্যবসায়ী গ্রেফতার

প্রতিনিধি আবশ্যক

সাঁথিয়ায় মাধ্যমিক পর্যায়ে সকল স্কুল কলেজ ও মাদ্রাসার শিক্ষকদের সাথে মতবিনিময়

খুলনা মহানগর পুলিশের মাদক বিরোধী অভিযানে মাদকসহ ৭ ব্যবসায়ী গ্রেফতার

রংপুরে ফুলবাড়ী দিবস স্মরণে শ্রমিক অধিকার আন্দোলনের শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন

রংপুরের ঐতিহ্যবাহী মাহিগঞ্জ প্রেসক্লাবের ২৯ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান সম্পন্ন

কেএমপি’র গোয়েন্দা পুলিশের অভিযানে মা’দকসহ ৪ মা’দক কারবারি গ্রে’ফতার