মেহেদী হাসান, পুঠিয়া থেকে:
রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরের থান্দার পাড়ার কবরস্থান থেকে উদ্ধারকৃত ব’স্তাবন্দি ম’রদেহের রহস্য উন্মোচন করেছে পুঠিয়া থানা পুলিশ। হ’ত্যার শিকার বেদেনা বেওয়া (৬০) এর ছেলের বৌয়ের সাথে পারিবারিক কলহের কারণে তাকে হ’ত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুর রহমান। এ হ’ত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নিহত বেদেনা বেওয়ার ছেলের বৌ কনিকা (২৯) ও নাতনি কথা খাতুন (১৪) কে আটক করেছে পুলিশ।
পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুর রহমান জানান, গত বুধবার (৯ এপ্রিল) পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের থান্দারপাড়া গ্রামের একটি কবরস্থান থেকে ব’স্তাবন্দি এক বৃদ্ধার মরদেহ উদ্বার করা হয়। তার গলায় কা’টা চিহ্ন এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে জ’খম ছিল। এছাড়াও মুখে স্ক’চটেপ জড়ানো ছিল। পরে নি’খোঁজ বেদেনার পরিবার তার পরিচয় শনাক্ত করে। বেদেনার মরদেহ উদ্ধারের পর তার ছেলে রিপন আলী বাদী হয়ে পুঠিয়া থানায় একটি হ’ত্যা মামলা দায়ের করেন। পুঠিয়া থানা পুলিশ ও পিবিআই রাজশাহী জেলার একটি টিম মামলা গ্রহণের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে হ’ত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত নিহত বেদেনার ছেলের বৌ কনিকা ও নাতনি কথা খাতুনকে গ্রেফতার করে।
তদন্তে জানা যায়, বেদেনা বেওয়ার স্বামী মারা যাওয়ার পর তিনি তার স্বামীর ভিটায় তার ছেলে দ্বিতীয় বিয়ে করায় ছেলের প্রথম স্ত্রীর ছেলে হিমু ও মেয়ের দ্বিতীয় বিয়ে হওয়া মেয়ে প্রথম স্বামীর মেয়ে কথা খাতুনকে নিয়ে বসবাস করতেন। বেদেনা বেওয়া বানেশ্বর বাজারের ডাক্তার মিজানের বাড়িতে কাজ করে দুপুরের খাবার নিয়ে বাড়ি ফিরতেন। তার ছেলের দ্বিতীয় স্ত্রী কনিকার সাথে সাংসারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বনিবনা না হওয়ায় বেদেনা বেওয়া নিজের মত করে চলতেন। গত শুক্রবার বেদেনার ছেলের বৌ কনিকা সন্ধ্যায় ইফতারের সময় শরবতের সাথে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে কথা খাতুনের মাধ্যমে বেদেনাকে খাইয়ে দেয়। সরবত খাওয়ার পর বেদেনা বেওয়া ঘুমিয়ে পড়লে কনিকা ও তার অপর এক সহযোগীর মাধ্যেমে বেদেনা বেওয়ার দুই হাত খাটের সাথে ওড়না দিয়ে বেঁধে বালিশ চা’পা দিয়ে হ’ত্যা করে। পরে অপর সহযোগীর মাধ্যমে বেদেনার মরদেহ ব’স্তাবন্দি করে বাড়ির পাশের কবরস্থানে ফেলে দেয়। শুক্রবার দুপুরের পর মরদেহের দুর্গন্ধ পেয়ে স্থানীয়রা কবরস্থানে গিয়ে বস্তাবন্দি মরদেহ দেখতে পান। সেসময় পুঠিয়া থানা পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে।
এ ব্যাপারে পুঠিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ সাইদুর রহমান জানান, ‘হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচিত হয়েছে। আটকৃতরা আদালতে হ’ত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। অপর সহযোগীকে আটকের চেষ্টা চলছে বলে এ কর্মকর্তা জানান।’