![](https://crimepatrol24.com/wp-content/uploads/IMG_20200702_130552.jpg)
আল মাসুদ, পঞ্চগড় জেলা প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ে গবাদিপশুর মধ্যে ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ দেখা দিয়েছে। এতে করে খামারি ও প্রান্তিক কৃষকদের মাঝে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।
সূত্রে জানা গেছে, লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগটি প্রথম ১৯২৯ সালে জাম্বিয়াতে দেখা দেয়। পরে আফ্রিকা মহাদেশের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৩ সালে মধ্যপ্রাচ্যের দেশসমুহে এবং ২০১৪-১৫ সালে আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, কাজাকিস্থানসহ আশেপাশের দেশসমুহে এ রোগ দেখা দেয়। ২০১৬ সালে গ্রীস, সাইপ্রাস, বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, কসোভোসহ আশেপাশের দেশসমূহে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৯ সালে চীন ও ভারতে আক্রান্তের পরেই বাংলাদেশে এ রোগটি অতি সম্প্রতি প্রথম বারের মতো দেখা দেয়।
জেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, পঞ্চগড় জেলায় গরু সংখ্যা প্রায় ১০ লক্ষ। এর মধ্যে ‘লাম্পি স্কিন’ এ আক্রান্ত গরুর সংখ্যা প্রায় ৩৮১টি। জুন মাসের ২১ তারিখ থেকে সংক্রমণ শুরু হয়েছে। মারা যাওয়ার সঠিক কোনো তথ্য নেই।
জনবল কম থাকার কারণে মাঠ পর্যায়ে কোনো তথ্য সংগ্রহ করতে পারছেন না। এ ছাড়া কৃষকরা আক্রান্ত গরু নিয়ে প্রাণিসম্পদ অফিসে না আসার কারণে অনেকটা তথ্য সংগ্রহ করতে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
‘লাম্পি স্কিন’ ভাইরাসে আক্রান্ত গরুর শরীর প্রথমে ফুলে গুটি-গুটি হয়। কয়েকদিন পর গুটিগুলো ফেটে রস ঝড়তে থাকে। ফলে ফেটে যাওয়া স্থানেই ক্ষত সৃষ্টি হয়ে গরুর শরীরে প্রচণ্ড জ্বর এবং খাবার রুচি কমে যায়। নাক ও মুখ দিয়ে লালা বের হয়। তারা বলছে ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ (এলএসডি) ভাইরাস জেলার ৫ উপজেলায় ছড়িয়ে পড়েছে।
সরেজমিনে জগদল, প্রধানপাড়া, শুড়িভিটা, কেচেরাপাড়া, ঝাকুয়াকালী, গোয়ালঝার, অমরখানা গ্রামসহ উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায় এই রোগের প্রাদুর্ভাব। কথা হয় বেশ কয়েক জন কৃষকের সঙ্গে। তাদের গ্রামের অনেক গরু এই রোগে আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা যায়।
সদর উপজেলা জগদলের বাসিন্দা কৃষক মজিবর বলেন, ‘গত ১২ দিন আগে আমার একটি গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গরুর অবস্থা ক্রমেই খারাপ হয়েছিল। বর্তমানে চিকিৎসা করে একটু সুস্থ হয়েছে।’
উপজেলার শুড়িভিটার আফজাল এগ্রো ফার্মের রনি বলেন, ‘আমার প্রথমে একটি গরুর শরীরের বিভিন্ন স্থান ফুলে চাকা চাকা হয়। পরে চিকিৎসকের পরামর্শে গরুটি আলাদা ভাবে রাখতে বললেও জায়গা সংকটের কারণে সেটা করতে পারিনি। এখন আমার ৬টা আক্রান্ত গরু নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় ভুগছি।’
প্রধান পাড়া গ্রামের কৃষক ওজিবত জানান, তার দুটি দেশি গরু ‘লাম্পি স্কিন’ ভাইরাস জনিত রোগে আক্রান্ত হয়েছে। তেমন কিছু খেতে পারছে না।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা.আব্দুল মজিদ বলেন, ‘লাম্পি স্কিন’ রোগ (এলএসডি) ভাইরাস নামে পরিচিত। মশা, মাছি, আঠালির মাধ্যমে এই ভাইরাসটি ছড়ায়। সচেতনতার মাধ্যমে এ ভাইরাস থেকে বাঁচা সম্ভব। এ জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার উপর জোর দিতে হবে।’কৃষকদের সচেতনতার জন্য তারা নিয়মিত উঠান বৈঠক ও লিফলেট বিতরণ করছেন বলেও জানান তিনি।