কামরুল হক চৌধুরী, বিশেষ প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়নের বাশরা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় কিশোর গ্যাং হোতা রাহেজুল আমিন বাধঁন (৩০) নামে একজন বরখাস্ত হওয়া পুলিশ কনস্টেবল নি’হত হয়েছেন।
রবিবার(২৩ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার বাশরা গ্রামে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে আরও ৫ জন আ’হত হয়। আ’হতদের গৌরীপুর হাসপাতালে জরুরি বিভাগে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ঢাকা প্রেরণ করা হয়েছে।
নিহত রাহেজুল আমিন বাঁধন বাশরা গ্রামের আলী আহমেদের ছেলে। সে নোয়াখালী জেলা পুলিশের বরখাস্তকৃত পুলিশ কনস্টেবল।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, রবিবার সকালে বাশরা গ্রামের একটি বাড়িতে হা’মলা করে কিশোর গ্যাং বাঁধন ও তার বাহিনী। হা’মলায় ওই বাড়ির নুরু মিয়ার ছেলে হাছান আ’হত হয়।
এই হা’মলার জের ধরে বেলা সাড়ে ১১টায় এলাকার লোকজন বাঁধনের বাড়িতে হা’মলা করে। হা’মলাকারীরা তার ঘরের দরজা জানালা ভে’ঙে তার ঘরে প্রবেশ করে। রা’মদা, লা’ঠিসোটা দেখে ভয়ে বাঁচার জন্য বাঁধন পার্শ্ববর্তী রফিকুল ইসলামের দালানের একটি রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেয়। হা’মলাকারীরা রুমের দরজা ভে’ঙে বাঁধনকে টেনেহেঁচড়ে বের করে দালানের প্রধান ফটকের সামনে এলোপাতাড়িভাবে কু’পিয়ে মা’রাত্মকভাবে জখম করে তাকে ফেলে রেখে যায়।
পুলিশ সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে হা’মলায় আ’হত বাঁধন, তার মা এবং ভাই সুমনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স গৌরীপুরে নিয়ে গেলে প্রাথমিক চিকিৎসার পর আ’শঙ্কাজনক অবস্থায় তাদের ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়। সেখানে নেয়ার পর বাঁধন মারা যায়।
নি’হত বাঁধনের ভাবি আয়েশা আক্তার বলেন, ‘দক্ষিন পাড়ার হাসেম, রুবেল ও মানিকসহ ২০/২৫ জনের স’ন্ত্রাস বাহিনী রা’মদা, হ’কিস্টিক ও লোহার পাইপ নিয়ে আমাদের বাড়িতে হা’মলা করে। তাদের ভয়ে আমার দেবর পাশের রফিক কাকার দালানে আশ্রয় নেয়। সেখানে গিয়েও তাদের হাত থেকে বাঁচতে পারেনি।’
দালানের মালিক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বাঁধন আমার বিল্ডিংয়ে আশ্রয় নিলে হা’মলাকারীরা রুমের দরজা জানালা ভে’ঙে আতঙ্ক সৃষ্টি করে এবং তাকে বের করে এলোপাতাড়ি কু’পিয়ে বিল্ডিংয়ের সামনে ফেলে রাখে।’
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার লোকজন জানান, বাঁধনের অ’ত্যাচারে এলাকার সাধারণ মানুষ অতিষ্ঠ ছিল। কোনো অনুষ্ঠান করলেই তাকে চাঁ’দা দিতে হতো। তার অপকর্মের প্রতিবাদ করলেই উল্টো মামলা দিয়ে হ’য়রানি করা হতো। তার হ’য়রানির শিকার বাশরাসহ আশপাশের গ্রামের লোকজন বাঁধনের অ’ত্যাচার থেকে বাঁচতে এবং তার বিচার দাবি করে ২০২১ সালের ১৭ আগস্ট ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের পুটিয়া এলাকায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন।
গৌরীপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বলেন, ‘খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থল থেকে বাঁধনসহ তার পরিবারের আ’হতদের উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য দ্রুত গৌরীপুর হাসপাতালে পাঠাই। আ’হতদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকায় পাঠানো হলে সেখানে বাঁধন মারা যায়। বাঁধন পুলিশের কনস্টেবল পদে নোয়াখালী জেলা পুলিশে কর্মরত অবস্থায় বিভিন্ন অভিযোগে প্রায় দুই বছর আগে তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চাঁ’দাবাজিসহ ৭টি মামলা রয়েছে। এ হ’ত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে কাজ করছে।পাশাপাশি এলাকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ঘটনাস্থলে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।’
