মো. সাইফুল্লাহ্ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রামের বুড়িমারীতে কোরআন অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে নৃশংস হত্যাকাণ্ডের শিকার রংপুর ক্যান্ট. পাবলিক স্কুল এণ্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক আবু ইউসুফ মো. সহিদুন্নবী জুয়েলের হত্যায় জড়িতদের গ্রেফতার এবং শাস্তির দাবিতে উত্তাল রংপুর। জুয়েল হত্যার দ্রুত বিচার চেয়ে স্মারকলিপিসহ ৪ দফা দাবি পেশ করেছেন নগরবাসী । বৃহস্পতিবার সকালে নারী, পুরুষ, শিশু নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের অংশগ্রহণে একটি শোক মিছিল রংপুর বিভাগীয় কমিশনার ও রেঞ্জ ডিআইজির কাছে স্মারকলিপি পেশ করে। সেখানে এক সংক্ষিপ্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এসময় বক্তারা ৪ দফা দাবি পেশ করে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে নিহত জুয়েলকে ধর্ম অবমাননার অপবাদ থেকে আনুষ্ঠানিক দায়মুক্তির ঘোষণা দিতে হবে, অবিলম্বে সকল হত্যাকারীদের গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনতে হবে, হত্যার বিচার কাজ স্পেশাল ট্রাইব্যুনালে সম্পন্ন করতে হবে এবং জুয়েলের স্ত্রী-সন্তানদের শিক্ষাজীবনসহ সকল দায়িত্ব ও পরিবারের ভরণপোষণ রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে। কর্মসূচিতে সর্বস্তরের হাজারও জনগণসহ নিহত জুয়েলের বড় বোন ও স্ত্রীসহ পরিবারের অন্য সদস্যরাও উপস্থিত ছিলেন। এছাড়াও সকাল থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত জুয়েলের মহল্লার সকল দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখা হয়। কর্মসূচিতে ইন্দ্রারার মোড়, শালবন, পূর্ব শালবন, আরসিসিআই মোড়, মিস্ত্রীপাড়া, শিয়ালুর মোড়, খেরবাড়ি ও বৈশাখী ক্লাব বোতলা এলাকার সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। শোক মিছিলটি নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে নগরীর কাছারী বাজারে পুলিশের রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে। সেখানে অনুষ্ঠিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শালবন এলাকাবাসীর পক্ষে অ্যাডভোকেট জোবায়দুল ইসলাম বুলেটসহ অনেকেই।
এসময় বক্তারা বলেন, স্থানীয় প্রশাসন জুয়েলকে রক্ষা করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে। এখন পর্যন্ত ঘটনার মূল আসামি হোসেন আলীসহ লাশ পোড়ানোর ঘটনায় জড়িতদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারে নি। ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে। মামলার সাক্ষীদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। সে কারণে আমরা মনে করি, মামলাটি লালমনিরহাট থেকে রংপুরে এনে এখানেই বিচার করতে হবে।