আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
পিতার দেয়া অ’পহরণ মামলায় নব-দম্পতি দিশেহারা হয়ে বিভিন্ন জায়গায় পা’লিয়ে বেড়াচ্ছে। অপরদিকে কনের পিতার দেয়া মিথ্যা অ’পহরণ মামলায় বরের বাবা, মা ও ভাইকে গ্রে’ফতার করেছে পুলিশ।ঘটনাটি ঘটেছে দিনাজপুর জেলার খানসামা থানায়।
জানা যায়, নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর উপজেলার উত্তর শাহাপাড়া শ্বাষকান্দর এলাকার আব্দুল হাদী’র অনার্স ৪র্থ বর্ষের কলেজ পড়ুয়া ছেলে জাহিদ হাসান এর সাথে দিনাজপুর জেলার খানসামা উপজেলার বাশুুলী শাহাপাড়া এলাকার হাবিবুর রহমানের কলেজ পড়ুয়া কন্যা রাফিয়া জান্নাত রাফির দীর্ঘ ২ বছর যাবত প্রেম ভালবাসা চলে আসছে। বিষয়টি রাফির পরিবারের লোকজন জানতে পেরে রাফিকে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার জন্য তরিঘড়ি করতে থাকে। এরই এক পর্যায়ে রাফি ও জাহিদ স্বেচ্ছায় গোপনে গত ২০/০৪/২০২২ইং তারিখে নীলফামারী নোটারী পাবলিক কার্যালয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে বিবাহের হলফনামা সম্পাদক করেন। এর পরে গত ০১/০৫/২০২২ইং তারিখে ১লক্ষ ১শত ১টাকা দেন মোহর ধায্য করে ইসলামী সরিয়া মতে নিকাহ রেজিস্ট্রার (কাজী) দ্বারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়।
নববধূ রাফিয়া জান্নাত রাফি বলেন, আমার পরিবারকে একাধিক বার বলার পরেও আমাদের সম্পর্ককে মেনে না নেয়ায় গত ১৭/০৫/২০২২ ইং তারিখে আমি আমার স্বামীর বাড়িতে চলে যাই। শ্বশুর বাড়িতে সকলে আমাকে মেনে নিয়েছে, ভালই কাটছিল আমার নতুন সংসার জীবন। আমার বাবা প্রভাবশালী হওয়ায় মেয়ের সুখের কথা না ভেবে শত্রুতার জের ধরে আমার স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি ও ভাশুরের নামে খানসামা থানায় মিথ্যা অ’পহরণ মামলা নং-(১২), তারিখ-২৮/০৫/২০২২ইং দায়ের করে। সেই থেকে আমি ও আমার স্বামী পুলিশের ভয়ে বিভিন্ন জায়গায় পালিয়ে বেড়াচ্ছি। গত ২৮/০৫/২০২২ইং তারিখে গভীর রাতে খানসামা ও সৈয়দপুর থানার পুলিশ আমার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে আমার বৃদ্ধ শ্বশুর আব্দুল হাদী (৬২) শাশুড়ি জাহেদা খাতুন (৫৮) ও ভাশুর মতিয়ার রহমান (৪৫) কে আটক করে খানসামা থানায় নিয়ে যায়। আমরা নব-দম্পতি মামলার ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছি। আমি সুখে শান্তিতে স্বামীর সংসার জীবন অতিবাহিত করতে চাই।
এ বিষয়ে জাহিদ হাসান বলেন, আমরা উভয়কে স্কুল জীবন থেকে ভালবাসি কেউ কাউকে ছাড়া সুখী হতে পারবো না। অভিভাবকরা আমাদের ভালবাসা মেনে নেয়নি। যেহেতু আমরা দু’জনে প্রাপ্ত বয়স্ক তাই বাধ্য হয়ে গোপনে বিয়ে করেছি। আমরা মামলার হাত থেকে বাঁচতে চাই এবং সুখের সংসার করতে চাই।
খানসামা থানার অফিসার ইনচার্জ কামাল হোসেনের কাছে মামলার বিষয়ে জানতে চেয়ে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি তা রিসিভ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায় নি।
তবে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শামীম মিয়া গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, ২৮/০৫/২০২২ইং তারিখে হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামাসহ ৫ জনকে আসামী করে না’রী ও শিশু নি’র্যাতন দমন আইনে ৭/৩০ ধারায় মামলা দায়ের করে। তাদের মধ্যে এজাহারভুক্ত ৩ জনকে গ্রেফতার করে দিনাজপুর জেলা আদালতে পাঠানো হয়েছে। মামলার তদন্ত সাপেক্ষে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।