মোঃ সাইফুল্লাহ্ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : রংপুরে নবম শ্রেণির ছাত্রীকে গণ ধর্ষণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সদ্য চাকরি থেকে বরখাস্ত এএসআই রায়হানকে এখনও গ্রেফতার দেখানো হয়নি। ধর্ষণের এই মামলাটির তদন্তভার পিআইবি’র কাছে থাকলেও রায়হানকে পুলিশি হেফাজতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে পিআইবি। এদিকে স্কুলছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় আরও দুই ধর্ষককে গ্রেফতার করা হয়েছে। মঙ্গলবার ভোরে লালমনিরহাট থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতাররা হলো-লালমনিরহাট সদরের পূর্ব মাজাপাড়া এলাকার করি মাহমুদের ছেলে বাবুল হোসেন (৩৮) এবং পূর্ব থানা পাড়ার মৃত কাচু মিয়ার ছেলে আবুল কালাম আজাদ (৪০)।
পিবিআই জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ধর্ষণের সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করেছে। এর আগে ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগে সুমাইয়া আক্তার মেঘলা, সুরভি আক্তার শম্পা নামে দুই নারীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তারা এখন পিআইবি’র হেফাজতে রয়েছে। রোববার সকালে আরপিএমপি হারাগাছ থানা এলাকার কেদারের পুল নামক স্থানে একটি ভাড়া বাসায় নবম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। মঙ্গলবার দুপুরে ওই মামলয় গ্রেফতার মেঘলা ও শম্পা নামের দুই নারীকে রংপুর চীফ জুডিশিয়াাল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করা হয়েছে।
পিবিআই ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর মেট্রোপলিটন এলাকার ময়নাকুঠি কচুটারিতে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীর সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন মেট্রোপলিটন ডিবি পুলিশের এএসআই রায়হানুল ইসলাম। পরিচয়ের সময় রায়হানুল তার ডাক নাম রাজু বলে জানান ওই ছাত্রীকে। প্রেমের সূত্র ধরে গত শুক্রবার ওই ছাত্রীকে ক্যাদারের পুল এলাকার ডা. শহিদুল্লাহ্ মিয়ার ভাড়াটিয়া সুমাইয়া আক্তার মেঘলা ওরফে আলেয়াার বাড়িতে নিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করেন রায়হানুল। পরে গত রোববার ভাড়াটিয়া মেঘলা ওরফে আলেয়া ও তার সহযোগী সুরভি আক্তারের সহায়তায় আরও দু’জন তাকে গণধর্ষণ করে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রী অসুস্থ হয়ে পড়লে বিষয়টি জানাজানি হয়। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে পুলিশ তাকে ওই বাড়ি থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। এ সময় মেঘলা বেগমকে আটক করে পুলিশ। পরে রাতে আরেক সহযোগী সুরভিকেও আটক করা হয়।
সূত্র জানায়, গ্রেফতার বাবুল হোসেন ও আবুল কালাম আজাদকে রমেক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই ছাত্রীর মুখোমুখি করা হলে ওই ছাত্রী দুই ধর্ষককে শনাক্ত করেছে। এ ঘটনায় ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে পুলিশ সদস্য রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাজুসহ দু’জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে হারাগাছ থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। পরে ওই রাতে অসুস্থ ছাত্রীকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেণ্টারে (ওসিসি) ভর্তি করায় পুলিশ। সোমবার মামলাটি হারাগাছ থানা থেকে রংপুর পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়।
রংপুর পিবিআই পুলিশ সুপার এবিএম জাকির হোসেন জানান, অধিকতর তদন্তের স্বার্থে রায়হান এখনও পুলিশ হেফাজতে রয়েছে। তাই তাকে এখন পর্যন্ত গ্রেফতার দেখানো হয়নি। তিনি আরও জানান, ধর্ষণের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি না দিলে তাদের রিমাণ্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদের প্রস্তুতি চলছে।