মো. সাইফুল্লাহ খাঁন,জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর : করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সাত দিনের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে সরকার। রংপুরে প্রথম দিন সড়ক ফাঁকা থাকলেও দ্বিতীয় দিনের চিত্র ভিন্ন। রিকশার পাশাপাশি মোটরসাইকেল, থ্রি-হুইলার সিএনজি-ইজিবাইক, মাইক্রোবাস, প্রাইভেটকার চলাচল করছে। নগরের বাইপাস সড়ক ও অলিগলিতে মানুষের ঘোরাঘুরিও বেড়েছে। নগরের কাঁচাবাজার ও দোকানপাটে রয়েছে উপচে পড়া ভিড়। সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে না সেখানে। করোনাভীতি ভুলে ঘেঁষাঘেঁষি করে, কোথাও আবার ঠাসাঠাসি অবস্থায় চলছে কেনাবেচা। অধিকাংশ মানুষের মুখে নেই মাস্ক। সাধারণত শুক্রবার অন্যদিনের চেয়ে সিটি বাজারসহ নগরের অন্যান্য বাজারগুলাতে একটু বেশি ভিড় হয়ে থাকে। শুক্রবার (২ জুলাই) সকাল থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত রংপুর নগরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ছাড়াও সিটি বাজারে ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে। বিভিন্ন অযুহাতে ঘর থেকে বের হওয়া মানুষদের মধ্যে ছিল উদাসীনতা। তবে লকডাউনে প্রথম দিনের মতো আজও মহাসড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো ফাঁকা রয়েছে। দুপুরে রংপুর সিটি বাজারে সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক পরিধান নিশ্চিতকরণসহ স্বাস্থ্যবিধি মানাতে যৌথভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে জেলা প্রশাসন ও সিটি করপোরেশন। দুজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে পরিচালিত অভিযানে বিজিবি, র্যাব, পুলিশ ও আনসার সদস্যরা সহযোগিতা করেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, সিটি বাজারের সামনের সড়কে অনেক মানুষের উপস্থিতি। বাজারের ভেতরেও ছিল ঠাসাঠাসি করে চলাফেরা। দোকানদার থেকে শুরু করে ক্রেতা, কারও মধ্যেই বিধিনিষেধ মেনে চলার প্রবণতা ছিল না। বাজারে প্রবেশের মূল ফটক ছাড়াও কয়েকটি ছোট রাস্তা দিয়ে লোকজন বাজারে যাওয়া আসা করেছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি টের পেয়ে অনেকে দ্রুত মুখে মাস্ক পরে নেন। কিন্তু সেখানে সামাজিক দূরত্ব কিংবা ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধি মেনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা হয়নি। বরং পুরো বাজারে চলাচলের রাস্তা দখল করে দোকানদাররা তাদের মালামাল সাজিয়েছেন। অভিযানে বেশ কয়েকজন দোকানদারকে স্বাস্থ্যবিধি না মেনে দোকান খোলা রাখায় জরিমানা করা হয়। এছাড়া বেশিরভাগ দোকান ও ক্রেতা সাধারণকে সতর্ক করে দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা। মাস্ক ছাড়া বাজারে আসা লোকজনকে মাস্ক পরিধানে উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি বিনামূল্যে তাদের মাঝে মাস্ক বিতরণ করা হয়। এদিকে সকাল থেকে কিছুটা বৈরী আবহাওয়া থাকলেও নগরের প্রবেশপথসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক এবং পাড়া-মহল্লার মোড়ে মোড়ে পুলিশের তল্লাশি অব্যাহত রয়েছে। তবে গতকালের চেয়ে সড়কে রিকশার দৌরাত্ম্য বেড়েছে। বিভিন্ন স্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গাড়ি নিয়ে টহল দিচ্ছেন। প্রথম দিনের মতো দ্বিতীয় দিনেও বিধিনিষেধ মেনে শপিংমল, বিপণি বিতান, মার্কেট বন্ধ রেখেছেন ব্যবসায়ীরা। তবে পাড়া-মহল্লার ভেতরে ও অলিগলিতে থাকা দোকানপাট ও হোটেল রেস্তোরাঁ খোলা রয়েছে।