মো. সাইফুল্লাহ খাঁন, জেলাপ্রতিনিধি, রংপুর>> বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (বেরোবি) অর্থনীতি বিভাগে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বিভাগীয় প্রধানের দায়িত্ব থেকে জনি পারভীনকে অপসারণের দাবিতে দুই মাসের বেশি সময় ধরে শিক্ষকেরা ক্লাস পরীক্ষা নিচ্ছেন না। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে রোববার দুপুরে অর্থনীতি বিভাগের ছয় শিক্ষকের স্বাক্ষর সংবলিত একটি স্মারকলিপি উপাচার্য বরাবর দেওয়া হয়। ছয় শিক্ষক হলেন অধ্যাপক মোরশেদ হোসেন, সহকারী অধ্যাপক জাহাঙ্গীর আলম, শাফিউল ইসলাম, হাবিবুর রহমান, বেলাল উদ্দিন ও প্রভাষক নেওয়াজ মোস্তফা। স্মারকলিপিতে আগামী সাত দিনের মধ্যে বিভাগীয় প্রধানের অপসারণের দাবি জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, জনি পারভীন ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করেন। তিনি যোগদানের পরের বছর মার্চ মাস থেকে করোনা মহামারি দেখা দেয়।
সমস্যা প্রসঙ্গে অভিযোগকারী শিক্ষক এবং সাবেক বিভাগীয় প্রধান মোরশেদ হোসেন বলেন, বিভাগীয় প্রধান হিসেবে তিনি (জনি পারভীন) যোগদানের পর নিয়মবহির্ভূতভাবে গত বছরের (২০২০) ১ জানুয়ারি পরিকল্পনা কমিটি গঠন করেন। এর প্রতিবাদ করা হলেও তিনি বিষয়টি আমলে নেননি। তাঁর সঙ্গে দেখা করে কথা বলতে চাইলেও তিনি কিছু বলতে চান না।
মোরশেদ হোসেন বলেন, এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে বিষয়টি উপাচার্যকে গত সেপ্টেম্বরে জানানো হয়। ঘটনার সুরাহা না হওয়ায় গত অক্টোবরের শুরু থেকে দুই মাসের অধিক সময় ধরে বিভাগের সব ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ রাখা হয়েছে। আগামী সাত দিনের (১২ ডিসেম্বর থেকে) মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশের দাবি জানান তিনি। তা নাহলে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধের কর্মসূচি অব্যাহত রাখা হবে বলে জানান তিনি। এদিকে বিভাগীয় প্রধানের পদত্যাগের দাবিতে বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা ছাত্র পরামর্শ নির্দেশনা দপ্তরে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘ক্লাস হচ্ছে না, পরীক্ষাও হচ্ছে না। আমরা পিছিয়ে পড়ছি। অথচ অন্যান্য বিভাগে নিয়মিত ক্লাস পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ অবস্থা থেকে আমরা পরিত্রাণ পেতে চাই।’ এ ঘটনায় বর্তমান উপাচার্যের পক্ষ থেকে সহ-উপাচার্য সরিফা সালোয়াকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
কমিটির সদস্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ও ভারপ্রাপ্ত পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মতিউর রহমান বলেন, ‘আমরা তদন্ত করেছি। ইতোমধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন উপাচার্য বরাবর জমা দেওয়া হয়েছে।’ তবে তদন্তের বিষয়ে কথা বলতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন তিনি।
অভিযোগ প্রসঙ্গে বিভাগীয় প্রধান জনি পারভীনের মুঠোফোনে গতকাল বেলা সাড়ে তিনটায় ফোন করা হলে বলেন, ‘আমি একটি সভায় আছি। পরে কথা হবে।’ এরপর একাধিকবার তাঁর মুঠোফোনে ফোন দেওয়া হলে তিনি ধরেননি।
অর্থনীতি বিভাগের উদ্ভূত বিষয়ে উপাচার্য হাসিবুর রশীদ বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। এ জন্য একটি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আশা করছি, শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।’