
মেহেদী হাসান ফারুক, টঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলা মোড়ে আজ শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি ২০২০খ্রি.) সকালে সজল সিকদার কর্তৃক জোরপূর্বক ধর্ষণে জন্ম নেয়া শিশু সুজায়েত এর পিতার পরিচয় ও ধর্ষণের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ধর্ষিতা ছামিনা ও তার পরিবার। ধর্ষিতা ও তার পরিবার এর সাথে কথা বলে জানা যায়, দীর্ঘ একযুগ অতিবাহিত হলেও ন্যায় বিচার বঞ্চিত ধর্ষিতা। উপজেলার বিষমপুর গ্রামের মৃত খালেক সিকদার এর ছেলে সজল সিকদার দীর্ঘ একযুগ আগে প্রতিবেশী মৃত ছামাদ সিকদার এর মেয়ে ছামিনা খাতুনকে একাধিক বার ধর্ষণ করে। এই ধর্ষণের ফলে গর্ভবতী হয়ে পড়ে ছামিনা। এক দিন নির্দয় এই পৃথিবীর আলো দেখতে পায় তার সন্তান সুজায়েত। পিতার পরিচয় ও স্নেহহীন জীবনযুদ্ধে হার নামানা শিশু সুজায়েত বড় হতে থাকে এ সমাজে। গত এক যুগ ধরে বিচার প্রার্থী নাগরপুর উপজেলা দপ্তিয়র ইউনিয়নের কান্দাপাচুরিয়া গ্রামের মৃত ছামাদ সিকদারের মেয়ে ছামিনা খাতুন। ন্যায় বিচারের আশায় তীর্থের কাকের মত একমাত্র ছেলেকে নিয়ে অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছে ধর্ষিতা। দারিদ্রতার কাছে ছামিনার অদম্য ইচ্ছে শক্তিতেই স্বামী ও পিতার পরিচয়হীন সুজায়েত এর লেখা পড়ার খরচসহ সকল খরচ যোগাতে জীবনের প্রতিটি মূহুর্তেই সংগ্রাম করে যাচ্ছে অধিকার বঞ্চিত মা। শত অভাব অভিযোগের পরও থেমে থাকেনি তার পথ চলা। বাঁশের তৈরী টুকরী, ঝাকা, চালুনসহ বিভিন্ন প্রকার হস্তশিল্পের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে এ পরিবার। পিতার ভালবাসা এবং পরিচয়হীন ছেলে সুজায়েতকে নিয়েই তাদের সংসার। ধর্ষণ ও প্রতারণার স্বীকার হয়ে গত ২০০৮ সালে ১ম শ্রেণির ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন মা ছামিনা খাতুন। সি আর ৩৪/০৮ নং মামলাটি বিজ্ঞ আদালত আমলে নিয়ে নারী ও শিশু ৩৪/০৮ নং এ পরিবর্তিত হয়। এ মামলায় মো. সজল সহ ৪ জনকে আসামি করা হয়।
ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র ছেলে সুজায়েত হোসেন এর সাথে কথা বলে জানা যায়, সে লেখা পড়া করে বড় হয়ে ডাক্তার হবে। বাংলাদেশের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছামিনা ও তার পরিবার, দেশের সরকারের কাছে সুবিচার পাবে এই আশায় এখনো এই স্বপ্ন বুকে ধারণ করে তীর্থের কাকের মত চেয়ে আছে। ন্যায় বিচারের দাবিতে তাই আজ এ পরিবার রাস্তায় নেমে মানব বন্ধন করেছে।