রফিকুল ইসলাম, কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : গত শনিবার (১৫ ই আগস্ট, ২০২০ খ্রি.) জাতীয় শোক দিবসে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে ৯ম শ্রেণির এক স্কুল শিক্ষার্থীকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে অপহরণের পরে আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় দৌলতপুর থানা পুলিশ অভিযোগ নিতে অস্বীকার করেন বলে দাবি ঐ শিক্ষার্থীর পিতার। এ ঘটনায় ওই স্কুল শিক্ষার্থীর পিতা কুষ্টিয়ার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এদিকে আরেকটি এজাহার দিয়েছেন দৌলতপুর থানা পুলিশ। তবে বাদীর দাবি থানা পুলিশ তার অভিযোগ গ্রহণ করেনি। এ বিষয়ে বুধবার (১৯শে আগস্ট) বিকেলের দিকে নিজ বাড়ীতে ন্যায় বিচার এবং আসামীদের আটকের দাবিতে এক সংবাদ সম্মেলন করেন ওই শিক্ষার্থী এবং তার পরিবার।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পিতা কাবিল হোসেন জানান, আমার মেয়ে খলিসাকুন্ডি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে নবম শ্রেণিতে পড়ে। দীর্ঘদিন যাবৎ আমার মেয়েকে উত্ত্যক্ত এবং কুপ্রস্তাব দিচ্ছিল বাড়ীর পার্শ্ববর্তী দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি এলাকার মুন্না’র ছেলে দুই সন্তানের জনক ফিরোজ (৩৮)। আমার মেয়ে লোক লজ্জার ভয়ে চুপ করে থাকে। গত শনিবার (১৫ই আগস্ট) সকাল ১০ টার দিকে বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে আমার মেয়ে দাঁড়িয়ে ছিল । এমতাবস্থায় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা ফিরোজ এবং ইনা’র ছেলে চন্দন (২৮) ও পার্শ্ববর্তী মৃত মজিবারের ছেলে শহিদুল তাকে জোরপূর্বক সিএনজিতে তুলে খলিসাকুন্ডিতে নিয়ে যায় এবং সেখান থেকে আমার মেয়েকে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। উক্ত ঘটনায় আমি ওই দিন বিকেলে দৌলতপুর থানায় অভিযোগ করতে গেলে আমার কোন অভিযোগ গ্রহণ করেনি পুলিশ। উল্টো আমাকে দৌলতপুর থানা পুলিশের ওসি তদন্ত নিশিকান্ত বলেন, আপনার মেয়ে ফিরে না আসা পর্যন্ত কোন অভিযোগ নেওয়া যাবে না। তিন দিন ঘুরেও দৌলতপুর থানায় অভিযোগ না নেওয়ায় আমি আদালতে অভিযোগ দিয়েছি। আসামীরা এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় বর্তমানে আমি এবং আমার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় ভূগছি এবং ন্যায় বিচারের দাবি করছি। তিনি আরও বলেন, আমি দৌলতপুর থানায় তিন দিন ঘুরেও অভিযোগ দিতে পারি নি কিন্তু আদালতে অভিযোগ দেওয়ার আগে ১৮ আগস্ট রাতে দৌলতপুর থানার এস.আই জিয়াউর আসামীদের সাথে টাকার বিনিময়ে একটি মনগড়া এজাহার তৈরি করেন যেটা পুরোটাই পুলিশের সাজানো। পুলিশ যে এজাহার দিয়েছে আমি সেটা থানায় দাখিল করি নি। থানা পুলিশ যেটা এজাহারে উল্লেখ করেছে, সে অভিযোগ আমার না। সেই সাথে সেখানে দেওয়া টিপসইও আমার না।
সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেন, বিভিন্ন সময়ে দেওয়া ফিরোজের কু-প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় চন্দন ও শহিদুলের সহযোগিতায় ফিরোজ আমাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে ঢাকায় তার বোনের বাসায় নিয়ে গিয়ে জোরপূর্বক আটকে রাখে। এর মধ্যে সে জোর করে আমাকে ধর্ষণ করে।
এ ব্যাপারে দৌলতপুর থানার এসআই জিয়াউর রহমান জানান, এ ব্যপারে আমি কিছু বলতে পারব না। ওসি স্যার বিষয়টি জানেন। তিনিই বলতে পারবেন।
দৌলতপুর থানার ওসি তদন্ত নিশিকান্ত সরকার বলেন, কাবিল হোসেন যে অভিযোগ দিয়েছিলেন আমরা তার পরিপ্রেক্ষিতে মামলা গ্রহণ করে এজাহার দায়ের করেছি। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের বিরুদ্ধে কাবিলের অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন এই পুলিশ কর্মকর্তা। এদিকে আদালতে কাবিলের করা অভিযোগ এবং দৌলতপুর থানা পুলিশের এজাহারে কোন মিল পাওয়া যায়নি।