
আনিছুর রহমান মানিক, ডোমার (নীলফামারী) প্রতিনিধি>>
নীলফামারীর ডোমারে চাঞ্চল্যকর অর্ধগলিত জাকিরুলের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেছে ডোমার থানা পুলিশ, আটক ৩।
আটকের পর নির্মম এই ঘটনায় জড়িত ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। এছাড়া জড়িত অপরজনকেও খুঁছজে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে বিষয়টি নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান।
পুলিশ সুপার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ১০মে উপজেলার বোড়াগাড়ী ইউনিয়নের নালার খামার এলাকায় পরিত্যক্ত জমি থেকে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। লাশটি শনাক্ত করে তার বাবা চিকনমাটি ভাটিয়াপাড়া এলাকার আব্দুল গণি। এ ঘটনায় ডোমার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন তিনি। মামলাটি রহস্য উদঘাটনে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জয়ব্রত পাল এর নেতৃত্বে কাজ করেন, গোয়েন্দা পরিদর্শক কেএম আজমিরুজ্জামান, উপ-পরিদর্শক রেজানুর রহমান, ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান, পরিদর্শক (তদন্ত) বিশ্বদেব রায় ও উপ-পরিদর্শক আজম হোসেন প্রধান। অভিযান চালিয়ে সদর ইউনিয়নের ছোটরাউতা গ্রামের আবিয়াতুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ রাশেদ (১৯), একই এলাকার ভুজারি পাড়ার আন্ধারু বর্মণের ছেলে কমল কর্মকার (৩০) ও তরুলক্ষ কর্মকারের ছেলে রওশন (৩২) কে আটক করে। প্রথমে অটোরিকশা চালক রাশেদকে আটক করা হয়। তার সহযোগিতায় পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ উপজেলা থেকে পরে কমল কর্মকার এবং রওশনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামীরা বিজ্ঞ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন এবং তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। জেলা পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমান বলেন, ৭মে রাতে জাকিরুলের সাথে নারী সংক্রান্ত বিষয়ে কমল, রওশন ও নিখিল নামে আরেক আসামীর সাথে তর্ক-বিতর্ক হয়। এক পর্যায়ে তারা গলাটিপে জাকিরুলকে হত্যা করে লাশ আদর্শ প্রাইমারী স্কুলের পিছনে বেতঝাড়ের মধ্যে রেখে যায়। হত্যাকান্ডটি ভিন্ন খাতে প্রবাহের জন্য ৯মে রাতে ডোমার বাজার থেকে রাশেদের লাশটি অটোরিক্সায় উঠিয়ে নিয়ে নালার খামার এলাকায় ফেলে রেখে আসে। তিনি আরো বলেন, জাকিরুলের বিরুদ্ধে মোবাইল চুরি ও মাদক ব্যবসার সম্পর্ক থাকায় স্কুলের পিছন থেকে সাড়ে তিন কিলোমিটার দূরে লাশটি ফেলে আসে নিজেদের নিরাপদ রাখতে। আমরা অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে তদন্ত শেষে অটোচালককে গ্রেফতার করি এবং তার সহযোগিতায় পরে কমল ও রওশনকে গ্রেফতার করা হয়। রহস্য উদঘাটনে ডিবি পুলিশ ও ডোমার থানা নৈশকালিন সকল অটো চার্জার রিকসা ভ্যান, ট্রাক্টরসহ প্রায় ২শত যানবাহনের মালিক ও চালককে দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করে রহস্য উদঘাটন করা হয়। ডোমার থানার অফিসার ইনচার্জ মোস্তাফিজার রহমান জানান, ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নিয়ে ক্লুলেস করার চেষ্টা করছিলো হত্যাকারীরা কিন্তু সেটি করতে পারেনি। এ ঘটনায় জড়িত পলাতক নিখিলকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।