জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি:
ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান পরিচালনার পরও বন্ধ হচ্ছেনা ঝিনাইদহের কুমার নদে নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার। ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে চায়না জালের সংখ্যা। এরইমধ্যে অভিযান পরিচালনা করে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ জাল জব্দ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
উপজেলার গাড়াগঞ্জ থেকে শুরু করে আবাইপুর গ্রাম পর্যন্ত ২৫ কি.মি. জায়গা জুড়ে নিষিদ্ধ চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। হাজার হাজার ফুট নিষিদ্ধ চায়না জাল ২০০ থেকে ৩০০ গজ পর পর পেতে রাখা হয়েছে। ডিঙি নৌকা নিয়ে প্রতিদিন বিকাল থেকে শুরু হয়ে যায় এই জাল পাতার প্রক্রিয়া। এরপর সারারাত পেতে রাখার পর সকাল থেকে চলে জাল গোছানোর পালা। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার খবর পেলেই এসব অসাধু মাছ শিকারীরা জাল নদী থেকে তুলে বাড়িতে বা সুরক্ষিত স্থানে লুকিয়ে রাখে। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত চলে গেলে আবার নদীতে পেতে রাখে। এরইমধ্যে অনেকেই জাল নিয়ে এলাকার বিভিন্ন খালে-বিলে মাছ শিকারে নেমেছে। এই জালে ধরা পড়ছে বিভিন দেশীয় প্রজাতির বিলুপ্ত প্রায় মাছ। শুধু মাছই নয় নদীতে থাকা কোন জলজ প্রাণি ও রক্ষা পাচ্ছে না। এমনকি মাছের ডিমও ছেঁকে তোলা হচ্ছে এই চায়না জাল দিয়ে। এতে করে প্রাকৃতিক সব ধরনের দেশীয় মাছ ধরা পড়ছে। বিভিন্ন প্রজাতির মাছের মধ্যে চিংড়ি, পুঁটি, রুই কাতলা ,টেংরা, কৈ, শিং ,মাগুর, তেলাপিয়া, বেলে, বোয়াল, শোল, টাকি থেকে শুরু করে ছোট বড় কোন মাছই রেহাই পাচ্ছেনা এই নিষিদ্ধ চায়না জাল থেকে। এতে ক্রমেই মাছশূন্য হয়ে পড়ছে কুমার নদী।
হেতামপুর এলাকার বাসিন্দা মুসা বলেন, এভাবে চায়না জাল দিয়ে মাছ শিকার মেনে নেওয়া যায় না। এভাবে মাছ শিকার করলে কিছুদিন পর আর নদীতে কোন প্রকার মাছ পাওয়া যাবে না।
শৈলকুপা মৎস্য কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, আমরা কুমার নদীতে অভিযান পরিচালনা শুরু করেছি। এ ধারা অব্যাহত থাকবে।
শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কানিজ ফাতেমা লিজা বলেন, ইতোমধ্যে আমরা কুমার নদীতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি, প্রয়োজনে আইন অমান্যকারীদের বিরুদ্ধে আবারও ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে। দেশীয় মাছ রক্ষার্থে প্রশাসনিক ভূমিকা আরও কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন এলাকার সাধারণ মানুষ।