চকরিয়া প্রতিনিধিঃ প্রকাশ্য দিবালোকে সন্ত্রাসীদের ‘গুলিতে’ ‘নিহত’ হওয়া আ’লীগ নেতা নাছির উদ্দীন সিকদার নোবেল এর পরিবর্তে কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বলে প্রার্থীতা ঘোষণা করেন নিহতের স্ত্রী ফারহানা আফরিন মুন্না। ‘নিহত’ নোবেল এর স্ত্রী মুন্না আসন্ন ইউপি নির্বাচনের পূর্ব বড় ভেওলা ইউনিয়ন থেকে প্রথম নারী চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে নিজেকে প্রার্থীতা ঘোষণা করেছেন।এছাড়া তিনি একজন সুশিক্ষিত নারী।বর্তমানে দুই সন্তানের জননী এবং বিধবা নারী।
উল্লেখ্য, তার স্বামী নোবেলকে নির্বাচনের প্রতিহিংসার রোষানলে ফেলে,তার জয়-জয়কার ভাব থামিয়ে দিতে জমি সংক্রান্ত জের ধরে ‘গুলি’ করে ‘হত্যা’ করেছিল ‘সন্ত্রাসীরা’।এতেও তার স্বপ্নলিলার কথা মনে রেখে স্বামীর স্বপ্ন পূরণ করতে স্ত্রী মুন্না চেয়ারম্যান পদে লড়বেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।এই ঘোষণায় আবারো অত্র ইউনিয়নে চেয়ারম্যান পদের নির্বাচন প্রার্থীর মনে কম্পন সৃষ্টি হয়েছে।
স্বামী হারা ফারহানা আফরিন মুন্না বলেন, আমার স্বামী নাছির উদ্দিন নোবেলকে ‘হত্যা’ করেছে স্বার্থলোভী ‘সন্ত্রাসীরা’। আমার স্বামীকে ‘হত্যা’ করে জীবনের গতি থামিয়ে দিলেও,আমি তার ওয়ারিশ হিসেবে তার স্বপ্নের গতি যেন থামিয়ে না যায় সে লক্ষে সাধারণ মানুষ,আপামর জনগণের হৃদয় থেকে নোবেলের নামকে জাগ্রত রাখতে আমি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচন করবো। কিন্তু শহীদ নোবেলকে জনগণ ভুলেনি, ভুলবে না, তাকে ভুলে যাওয়ার মতো মানুষ তিনি ছিলেন না।তার জীবদ্দশায় তিনি সব সময় সাধারণ মানুষের পাশে ছিলেন। তাই আমার শহীদ স্বামী নোবেল জনগণের সেবক,ন্যায়পরায়ন বিচারক হতে চেয়েছিলেন।তারই ধারাবাহিকতায় তিনি এলাকায় প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে জনগণের আস্থা, ভালোবাসা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছিলেন।আমার স্বামী নাছির উদ্দিন নোবেল ছিলেন চট্টগ্রাম ওমরগণি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ ছাত্র সংসদের সাবেক সমাজ কল্যাণ সম্পাদক, রাজপথ কাঁপানো সাবেক ছাত্র লীগ নেতা, চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগ নেতা ও পূর্ব বড়ভেওলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য, সমাজসেবী সংপঠন আলোর সভাপতি, মুজিব আদর্শের লড়াকু সৈনিক। নোবেল বহু শিক্ষা ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে জড়িত ছিলেন। নিরবে- সরবে মানুষের উপকার করে গেছেন। কারও ক্ষতি তিনি কোনদিন করেনি। একজন আদর্শ মানুষ ছিলেন বলে আজ তাকে ‘হত্যা’ করে আমাকে করেছে বিধবা,তার দুই সন্তানকে করেছে পিতা হারা এতিম। নোবেল জনগণের আস্হা অর্জনে এলাকাতে দিন-দিন যখন জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় ছিল আমার স্বামীর জন্য কাল। তার জনপ্রিয়তা অর্জনের মুহুর্তগুলো সহ্য করতে পারেনি ‘সন্ত্রাসী’ বাহিনী ও ‘খুনিরা’ । অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তাকে গত ১৭ আগস্ট দিনদুপুরে প্রকাশ্যে ‘গুলি’ করে ‘হত্যা’ করেছিল। পূর্ব বড় ভেওলাবাসীর স্বপ্ন পূরণের লক্ষে আমি শহীদ নোবেলের পরিবর্তে স্বপ্নদ্রষ্টার হালটি ধরে জনগণের সেবক হতে চাই।
তিনি কান্নাবিজড়িত কন্ঠে বলেন,আমি চেয়ারম্যান প্রার্থী হওয়ার পিছনে কেবল আমার ইচ্ছা,প্রতিশোধ নয়। জনমত, মানুষের ভালবাসা,উৎসাহ,অনুপ্রেরণাই হচ্ছে মূল শক্তি।আল্লাহ যদি আমাকে ভোটের মাঠে জয়ী করেন, তাহলেএই ইউনিয়ন হবে সন্ত্রাস,মাদক ওদূর্নীতিমুক্ত এলাকা।কোন সহিংসতাকারী এলাকায় প্রশ্রয় পাবেনা।যাতে করে আমার মত কেউ যেন বিধবা না হয়,আমার সন্তানদের মত কেউ যেন পিতাহারা না হয়, কেউ যেন সন্তানহারা আকুতিতে চিৎকার না করে এবং কারো জমি যেন অন্যায়ভাবে কেউ জবরদখল না করে।এমন সমাজ ব্যবস্হা বাস্তবায়ন করাই আমার নির্বাচনী লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।তাই আমি সবার দোয়া,সমর্থন ওভালোবাসা কামনা করছি।
