মাহতাব উদ্দিন আল মাহমমুদ,ঘোড়াঘাট (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটে মামলার এজাহারভুক্ত এক আসামীকে গ্রেপ্তার করতে গিয়ে আসামীর পরিবারের কাছে হে’নস্থার শিকার হয়েছেন কয়েকজন পুলিশ সদস্য। অভিযোগ উঠেছে পুলিশকে উদ্দেশ্য করে অ’শ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করার এক পর্যায়ে আসামীর পরিবারের নারী সদস্যরা আক্রমনাত্মক হয়ে উঠে।
সোমবার বিকেল ৩টায় ঘোড়াঘাট উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জোবায়ের হোসেন সাদ্দামকে (৩০) গ্রেপ্তার করতে তার নিজ বাড়ি পালশা ইউনিয়নের জোড়গাড়ী-নয়াপাড়া গ্রামে গেলে এই ঘটনা ঘটে। সাদ্দাম নাশকতা মামলার এজাহারভুক্ত ৩৭ নাম্বার আসামী।
পুলিশ সদস্যরা সাদ্দামের বাড়িতে প্রবেশ করে তাকে খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং আপত্তিকর নানা ভাষায় গালিগালাজ করে। এর এক পর্যায়ে তার পরিবারের নারী সদস্যরা পুলিশের দিকে তেড়ে আসে।
এ ঘটনায় ঘোড়াঘাট থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) অসীম কুমার মোদক বাদী হয়ে একটি সাধারণ ডায়েরী (জিডি) করেছেন।
অসীম কুমার মোদক বলেন, “আমরা এজাহারভুক্ত পলাতক আসামী সাদ্দামকে গ্রেপ্তার করতে তার বাড়িতে গিয়েছিলাম। তার পরিবারের সদস্যরা পুলিশ বাহিনী ও সরকারকে নিয়ে আপত্তিকর কথা বলে এবং আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। পরে সেখান থেকে চলে আসার সময় আমরা তার বাবা-মাকে বলেছি যে আপনার ছেলেকে সাবধানে রাখেন। বিশৃঙ্খলা করলে আমরা কোনো ছাড় দেব না। না’শকতা সৃষ্টি করে এলাকা অশান্ত করলে আপনার ছেলের খবর আছে।”
পুলিশ জানায়, ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিকেলে সাদ্দামের নেতৃত্বে তার বাড়িতে আলোচনাসভার আয়োজন করে দলটি। পুলিশের কাছে তথ্য ছিল আলোচনাসভা শেষে রাতে নেতাকর্মীরা দিনাজপুর-গোবিন্দগঞ্জ আঞ্চলিক মহাসড়কে যানবাহন ভাং’চুর, অ’গ্নিসংযোগ সহ না’শকতা সৃষ্টি করবে। এমন তথ্যের উপর ভিত্তি করে সাদ্দামের বাড়িতে অভিযানে চালায় পুলিশ।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আসাদুল হক বলেন, “আমি বাড়িতে শুয়ে ছিলাম। আমার স্ত্রী এসে বললো গ্রামে পুলিশ ঢুকেছে। পরে আমি গিয়ে দেখি সাদ্দামের বাড়ির সামনে পুলিশের গাড়ি দাঁড়ানো। পরে আমিও এগিয়ে গেলাম। পুলিশ ওই বাড়িতে প্রবেশ করার পর বাড়িটির লোকজন পুলিশকে গালিগালাজ শুরু করে। মহিলারা অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। পরে পুলিশ বের হয়ে যাবার সময় সাদ্দামের বাবা-মাকে সর্তক করে দিয়ে চলে যায়।”
আরেক প্রত্যক্ষদর্শী রায়হানুল ইসলাম বলেন, “বিকেল বেলা পুলিশ সাদ্দামের বাড়িতে যায়। আমিও সেখানেই ছিলাম। আমাদের গ্রামের ছেলে ছাত্রনেতা সাদ্দামের বাড়িতে পুলিশ প্রবেশ করার কিছুক্ষণ পরেই চিল্লাচিল্লি শুরু হয়। বাড়ির পুরুষ-মহিলারা গালিগালাজ করতে থাকে। আমিসহ আরো বেশ কয়েকজন তখন বাহিরে দাঁড়িয়ে ছিলাম। পরে পুলিশ চলে যাবার সময় বলে গেল ছেলেকে ভালোভাবে থাকতে বলেন। না’শকতা সৃষ্টির চেষ্টা করলে খবর আছে।”
এদিকে দিনাজপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) শাহ ইফতেখার আহমেদ বলেন, “এই রকম একটি ঘটনা শুনেছি। আমাদের সদস্যরা এজাহারভুক্ত আসামীকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিল। সে সময় আসামীর পরিবারের লোকজন পুলিশের সাথে অসদাচরণ করেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।”