ক্রাইম পেট্রোল ডেস্ক:
কুমিল্লায় অনলাইন প্র’তারক চক্রের হোতাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ফেসবুকে বিভিন্ন নামে ভুয়া পেজ খুলে প্র’তারণার মাধ্যমে মোবাইল সেটসহ বিভিন্ন পণ্য বিক্রির নামে অর্থ হা’তিয়ে নিচ্ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
আজ বুধবার দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আব্দুল মান্নান। এর আগে মঙ্গলবার (৩০ মে) রাতে লাকসাম পৌরসভার দক্ষিণ বাইপাস সংলগ্ন এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন প্র’তারক চক্রের হোতা কুমিল্লার নাঙ্গলকোট উপজেলার পশ্চিম বেতাগাঁও মজুমদারবাড়ির ওয়াশিম মজুমদারের ছেলে সৌরভ আলী মজুমদার শুভ (২২), তার সহযোগী একই এলাকার ইব্রাহিমের ছেলে আনিসুল হক শাহীন (১৯) এবং নাঙ্গলকোটের মক্রবপুর এলাকার সহিদুল ইসলামের ছেলে সাকিব হোসেন (১৯)। এ সময় তাদের কাছ থেকে আইফোন ও স্যামসাংসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ডের আটটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার আব্দুল মান্নান জানান, ‘প্র’তারকচক্রটি দীর্ঘদিন ধরে ভুয়া ফেসবুক আইডি থেকে মার্কেটপ্লেসে বিভিন্ন গ্রুপে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করার জন্য মোবাইল ফোনের লো’ভনীয় বিজ্ঞাপন আপলোড করত। এসব পোস্টে মোবাইল ফোন এক্সচেঞ্জ করারও অফার দেওয়া হয়।
তখন ক্রেতারা পোস্টে কমেন্ট করে মোবাইল ফোন ক্রয় বা এক্সচেঞ্জ করতে চাইলে ক্রেতাদের সাথে যোগাযোগের জন্য কৌশলে তাদের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে। চার থেকে পাঁচ দিন পর তাদের ভুয়া নিবন্ধিত মোবাইল নম্বর হতে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে সাধারণ ক্রেতাদের সরলতার সুযোগ নেয়। প্র’তারকচক্রটি তাদের ব্যবহৃত মোবাইল নম্বর দিয়ে পুলিশের বিভিন্ন পদমর্যাদার অফিসারের পরিচয়ে কল করে ভ’য়ভীতি দেখিয়ে হোয়াটসঅ্যাপ-ট্রুকলার অ্যাপসের মাধ্যমে প্র’তারণা করে আসছিল।’
তিনি আরো বলেন, ‘সম্প্রতি এমনই এক প্র’তারণার শিকার হন চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নজিম উদ্দিন আরশাদ নামের এক যুবক।প্র’তারকরা তাকে লাকসাম থানার এসআই তারেক পরিচয়ে ফোন দিয়ে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি খু’নের মামলার নিহত ব্যক্তির বলে জানায়। চক্রটি তার কাছে থাকা ফোনটি আলামত হিসেবে দিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি ১৫ হাজার টাকা দাবি করে। অন্যথায় তাকে খু’নের মামলার আসামি করা হবে বলে জানায়। ভিকটিম ভ’য় পেয়ে প্র’তারকদের দেওয়া বিকাশ নম্বরে টাকা এবং সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস লাকসাম শাখায় স্যামসাং এ ৭১ সিরিজের মোবাইল ফোনটি প্রেরণ করেন। কিন্তু একই দিনে প্র’তারক আবারও টাকা দাবি করলে ভিকটিমের সন্দেহ হয়। তিনি বিষয়টি লাকসাম থানার ওসির সরকারি নম্বরে ফোন করে অবগত করেন। ওসি বিষয়টি আমাকে জানালে আমি তাৎক্ষণিক তাদের খুঁজে বের করার নির্দেশনা প্রদান করি।’
পুলিশ সুপার বলেন, ‘লাকসাম থানার পুলিশ প্রযুক্তির সহায়তায় প্রাপ্ত তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে তাদের গ্রেফতার করেছে। এ সময় আটটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়। এই মোবাইলগুলো তারা অনলাইন প্র’তারণার মাধ্যমে আ’ত্মসাৎ করেছে বলে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে।’
পুলিশ সুপার জানান, ‘অনলাইন প্র’তারণার ফাঁদ পেতে থাকা চক্রের বাকি সদস্যদের খুঁজে বের করতে গ্রেফতার আসামিদের আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে।’
সংবাদ সম্মেলনে কুমিল্লার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আফজাল হোসেন, লাকসাম থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মাহফুজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।