মোহাম্মদ আবদুর রউফ, করিমগঞ্জ কিশোরগঞ্জ:
কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জে জাফবাদ ইউনিয়নে হাত-পা ও মুখ বেঁ’ধে অটোরিক্সাচালক হুমায়ূন কবিরকে (২০) হ’ত্যার ঘটনার রহস্য উন্মোচন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় সরাসরি জড়িতসহ গ্রেফতার তিনজনকে সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেলে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন তারা।
এর আগে গত রবিবার (২০ অক্টোবর) রাতে জড়িত ওই তিনজন আসামিকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতাররা হলেন- করিমগঞ্জ পৌরসভার কলাতুলী মহল্লার মৃত মাহফুজ মিয়ার ছেলে হৃদয় (১৯), বাজিতপুর উপজেলার মথুরাপুর এলাকার মৃত ফরিদ মিয়ার ছেলে ঝুটন পাঠান (৪০) ও দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার মুরাদপুর এলাকার মৃত আঃ আজিজের ছেলে মোঃ আশরাফুল ইসলাম (৩২)। তবে এ ঘটনায় আরও আসামি পলাতক রয়েছেন।
করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন জানান, ‘খু’নের ঘটনার ১৭ দিনের মধ্যে অটোচালক হুমায়ূন হ’ত্যার রহস্য পুলিশ উদঘাটন করতে পেরেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এদের মধ্যে হৃদয় সরাসরি জড়িত এবং তার সহযোগী অন্যরা পলাতক রয়েছে।’
ওসি আরও জানান, ‘প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামীদের ধরা হয়েছে। গত ২০ অক্টোবর করিমগঞ্জ থানার অফিসার ইন-চার্জ মোহাম্মদ শাহাব উদ্দিন ও অফিসার ইন-চার্জ (তদন্ত) মহব্বত খানের নেতৃত্ব পুলিশের একটি চৌকস টিম দিনভর অভিযান চালিয়ে আসামী হৃদয়কে করিমগঞ্জ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নের বাদেশ্রীরামপুর এলাকা থেকে, আসামী ঝুটন পাঠানকে বাজিতপুর থানা এলাকা থেকে ও আসামী মোঃ আশরাফুল ইসলামকে গাজীপুর মহানগর গাছা থানা এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, গত ৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পুরানথানা এলাকা থেকে যাত্রীবেশে অজ্ঞাত ঘা’তক রোগী আনার কথা বলে অটোচালক হুমায়ুনকে নিয়ে আসে। হুমায়ুন পথিমধ্যে তার ফুফাতো ভাই শামীমকে ফোন করে উপজেলার দেওয়ানগঞ্জ বাজারে থাকতে বলেন। দেওয়ানগঞ্জ বাজারে অটো নিয়ে হুমায়ুন আসলে তার ভাই শামীমকে অটোতে তুলতে চাইলে অজ্ঞাত যাত্রী আপত্তি জানায়। শামীকে ছাড়াই অটোচালক হুমায়ুন অজ্ঞাত যাত্রীকে নিয়ে রোগী আনতে যায়। পরে দেরি হতে দেখে শামীম অটোচালকের মোবাইলে ফোন করলে প্রথমে রিং হয় পরে তা বন্ধ হয়ে যায়। পরদিন বৃহস্পতিবার সকালে এলাকাবাসী বাদেশ্রীরামপুর গ্রামে মস্তুফা মিয়ার মেহগনি বাগানে হুমায়ুনের হাত-পা বাঁধা মরদেহ দেখে পুলিশকে জানালে পুলিশ এসে তার মরদেহ উদ্ধার করে। ওই দিন এ ঘটনায় নিহতের বাবা উসমান বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামী করে একটি হ’ত্যা মামলা দায়ের করেন।
ওসি আরও জানান, ‘অপরাধী হৃদয়, ঝুটন পাঠান, আশরাফুল ইসলামকে সোমবার বিকালে কিশোরগঞ্জ আদালতে পাঠানো হয়েছে। আদালতে হৃদয় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অপরাপর অপরাধীকে ধরতে পুলিশ চেষ্টা করছে বলেও জানান তিনি।’
জবানবন্দিতে হৃদয় জানান, ‘মূলত অটোরিক্সাটি ছিনতাই করতেই চালক হুমায়ূনকে হ’ত্যা করা হয়েছে।’