
মো. আক্তার হোসেন, বিশেষ প্রতিনিধি :
কুমিল্লার হোমনায় স্থানীয় সংসদসদস্য সেলিমা আহমাদ এর নির্দেশনায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে দালালমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ । আজ ২৩ নভেম্বর শনিবার থেকে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জনকল্যাণমূলক উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীসহ এলাকার সচেতন মহল।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালে কোনো দালাল নেই এবং হাসপাতালের পরিবেশটা অন্যান্য দিনের চেয়ে সুন্দর। দালালমুক্তকরণে পোশাকধারী পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকের পুলিশকে কাজে লাগানো হয়েছে। গত ১৪ নভেম্বর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল দালালমুক্ত করার বাস্তবায়ণের জন্য এবং ওষুধ ব্যবসায়ীরা যাতে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ এবং ডাক্তারদের প্রেসক্রিপসন করা ওষুধ যাতে পাল্টিয়ে বিক্রি করতে না পারে সে জন্য বিভিন্ন ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং ফার্মেসী মালিকদের সাথে মতবিনিময় করেন। এ ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গ, সাংবাদিক ও এলাকাবাসীর সহযোগিতাও কামনা করেন। এ উদ্যোগ নেওয়ার পূর্বে বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত প্রতিনিধিগণ হাসপাতাল চলাকালীন ডাক্তারদের চেম্বারের ভিতরে এবং জরুরি বিভাগে অবস্থান করে ভিড় জমাতো। ডাক্তাররা রোগীদের প্রয়োজনে টেস্ট দিলে প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাটানি এবং রোগীদের বিরক্ত করতো। অনেক সময় রোগীদেরকে জোর করে নিয়ে যাবার চেষ্টা করে হয়রানি এবং দুর্ব্যবহার করতো। অনেকসময় বিভিন্ন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কর্মরত প্রতিনিধিগণ মারামারি করেও বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করতো। এতে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে ডাক্তারদের অসুবিধায় পড়তে হতো এবং রোগীরাও বিভিন্ন বিড়ম্বনার শিকার হতো। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানীতে কর্মরত প্রতিনিধিগণকেও হাসপাতাল চলাকালীন ভিতরে ঢুকতে নিষেধ করেছেন। ফলে ওষুধ কোম্পানীর প্রতিনিধিগণকেও অফিস চলাকালীন ভিতরে প্রবেশ করতে দেখা যায় নি।
রোগীদরে সাথে কথা বলে জানা গেছে, হাসপাতালের ভিতর ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের লোকজন না থাকায় পরিবেশ খুব সুন্দর । আমরা শান্তিপূর্ণভাবে ও নিরাপদে চিকিৎসা নিতে পারছি এবং ডাক্তাররাও ঠান্ডা মাথায় ঠিকমতো চিকিৎসা দিতে পারছেন। এছাড়া আমরা নিজেদের ইচ্ছামতো দামাদামি করে পছন্দ মতো স্থানে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে পারছি।
এ বিষয়ে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মো. শহীদ উল্লাহ্ বলেন,অনেকদিন ধরে হাসপাতালকে দালালমুক্ত করার চেষ্টা ছিল। শেষ পর্যন্ত সংসদ সদস্যের সহযোগিতায় তা করতে সক্ষম হয়েছি এবং এ অবস্থা যাতে সব সময় বজায় থাকে সে জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুছ ছালাম সিকদার বলেন,আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর রোগীদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য হাসপাতালকে সর্বপ্রথম দালালমুক্ত করার পরিকল্পনা ছিল, মাননীয় সংসদ সদস্য সেলিমা আহমাদের একান্ত প্রচেষ্টা ও সহযোগিতায় আস্তে আস্তে তা বাস্তবায়ন করতে পারছি এবং আপনাদের সকলের সহযোগিতা পেলে শতভাগ সফল হতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস। মাননীয় সংসদসদস্য এ কাজে আমাকে সক্রীয়ভাবে সহযোগিতা করার জন্য আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। আমি দাপ্তরিক কাজের পাশাপাশি প্রতিদিন গড়ে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগীকে টিকেটের মাধ্যমে চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি।