মো. ইব্রাহিম খলিলঃ
গত ২৪ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণের দাবিতে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে লাগাতার অবস্থান কর্মসূচির ২৮তম দিনে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে শিক্ষক-কর্মচারীগণ এসে অবস্থান করেছেন।
আজ বুধবার এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, মহাজোটের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ মাঈন উদ্দিন ও সদস্য সচিব জসিম উদ্দিন বলেন, “টানা ২৮ দিন ধরে অবস্থান করে অনেক শিক্ষক-কর্মচারী অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাছাড়া গত দুই দিন বৃষ্টির মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীগণ অবস্থান করে অনেকেই ঠান্ডাজনিত সমস্যায় চিকিৎসাধীন আছেন। আমরা দীর্ঘ ২৮ দিন ধরে এখানে অবস্থান করছি এবং ১২ থেকে ১৬ মার্চ এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে তিন ঘণ্টার কর্মবিরতি পালিত হয়েছে। জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষণা না আসা পর্যন্ত কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। পাশাপাশি আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে ।
কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষক-কর্মচারীগণ বলেন “স্বাধীনতার একান্ন বছর পরেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীগণ সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। পাঠ্যক্রম, আইন এবং একই মন্ত্রণালয়ের অধীনে শিক্ষাব্যবস্থা পরিচালিত হলেও সরকারি ও বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীগণের সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিরাট পার্থক্য বিরাজমান। বৈষম্য গুলো হলো- বাড়ি ভাড়া, উৎসবভাতা, চিকিৎসা ভাতা, পদোন্নতি না থাকা, সন্তানের শিক্ষা ভাতা, হাউজ লোন, বদলি প্রথা, চাকরি শেষে নেই পেনশনের সুবিধা। অবসর ও কল্যাণ ট্রাস্ট্রে শিক্ষক-কর্মচারীগণের নিকট থেকে প্রতি মাসে বেতনের ১০% করে কেটে রাখলেও বৃদ্ধ বয়সে যথাসময়ে এ টাকা প্রাপ্তির নিশ্চয়তা নেই। অনেক শিক্ষক-কর্মচারী টাকার অভাবে বিনা চিকিৎসায় মারা যান। অধিকাংশ শিক্ষক নিজ জেলার বাইরে চাকরি করেন। তাদের জন্য বদলী ব্যবস্থা চালু অতীব জরুরি। অধ্যক্ষ থেকে কর্মচারী পর্যন্ত নামমাত্র ১ হাজার টাকা বাড়িভাড়া ও ৫শ’ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং ২৫% উৎসব ভাতা পান। বিশ্বের কোনো দেশে শিক্ষা ব্যবস্থায় এমন বৈষম্য আছে বলে মনে হয় না। এই বৈষম্য দূরীকরণে এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ জরুরি। এমপিওভুক্ত শিক্ষা জাতীয়করণে প্রয়োজন শুধু সরকারের সদিচ্ছা ও সুষ্ঠু নীতিমালা। প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষার্থীদের মাসিক বেতন ও টিউশন ফি বাবদ যা আয় হয় তার যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে পারলে ভর্তুকী ব্যতিরেকেই জাতীয়করণ সম্ভব।
সারা দেশ থেকে আসা শিক্ষক-কর্মচারীগণের মধ্যে বক্তব্য রাখেন প্রিন্সিপাল দেলাওয়ার হোসেন আজীজী, রাজশাহী নৈশ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব মো. সাহাবুদ্দিন, মো. আতিকুর রহমান, রবিউল ইসলাম, তোফায়েল সরকার, গোলাম আকবর চৌধুরী, নজরুল ইসলাম, মো. মানিক মিয়া, রিপন শিকদার , মেসবাহ উল হাসান প্রমুখ। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সাইদ উর রহমান স্বপন ।
এসময় তারা জাতীয়করণের সুস্পষ্ট ঘোষনা না আসা পর্যন্ত রাজপথে অবস্থানের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।