২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা
মো. ইব্রাহিম খলিলঃ
কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের দাবিতে কুমিল্লা জেলা আঞ্চলিক শিক্ষক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আজ শনিবার, এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে সকাল ১০ টায় কুমিল্লার দাউদকান্দি আদর্শ পাইলট বিদ্যালয়ে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সম্মেলনে দাউদকান্দি আদর্শ পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আলহাজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন এর সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক কর্মচারী ফোরাম এর যুগ্ম- মহাসচিব মো. মামুনুর রশিদ ও দাউদকান্দি উপজেলার সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীন এর সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন এমপিওভুক্ত শিক্ষক -কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোটের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির মহাসচিব অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন আহমেদ, যুগ্ম-আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষক-কর্মচারী ফোরাম এর সভাপতি অধ্যক্ষ দেলাওয়ার হোসেন আজিজী, গৌরীপুর সুবল আফতাব উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. সেলিম, বাংলাদেশ এমপিওভুক্ত শিক্ষক অনলাইন পরিষদের সভাপতি মো. আবু তালেব সোহাগ, ক্রাইম পেট্রোল২৪.কম সম্পাদক ও প্রকাশক এবং বাংলাদেশ বেসরকারি শিক্ষক -কর্মচারী ফোরাম(বাবেশিকফো) এর যুগ্ম-মহাসচিব মো. ইব্রাহিম খলিল হোমনা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. লুৎফর রহমান, দুলালপুর চন্দ্রমনি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এটিএম মো. মফিজুল ইসলাম শরীফ প্রমুখ। উক্ত সম্মেলনে কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আগত প্রতিষ্ঠান প্রধানসহ প্রায় ৫ শতাধিক শিক্ষক উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষক সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের আয় সরকারি কোষাগারে জমা নিয়ে এসব প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ করলে সরকারের কোনো বাড়তি খরচ তো লাগবেই না বরং বৎসরে সরকারের আয় হবে ১ হাজার কোটি টাকা। এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের বিভিন্ন বৈষম্য তুলে ধরে তারা বলেন, স্বাধীনতার ৫২ বছর পেরিয়ে গেলেও এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা চরম বৈষম্যের শিকার। শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্যগুলো হলো- সরকারি -বেসরকারি শিক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, শিক্ষাক্রম ও কর্মঘণ্টাসহ সকল দায়-দায়িত্ব একই রকম হলেও আর্থিক সুবিধা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নানা বৈষম্যের শিকার। সরকারি-বেসরকারি শিক্ষকদের মূলবেতন সমান। সরকারি শিক্ষকরা মূল বেতনের ৪০-৫০% বাড়ি ভাড়া পান আর বেসরকারি শিক্ষকরা পান মাত্র ১ হাজার টাকা যার কোনো % নেই। সরকারি শিক্ষকরা মূল বেতনের সমপরিমাণ দু’টি উৎসব ভাতা পান আর বেসরকারি শিক্ষকরা পান মূল বেতনের মাত্র ২৫%। সরকারি শিক্ষকরা চিকিৎসা ভাতা পান ১ হাজার ৫শ’ টাকা আর বেসরকারি শিক্ষকরা পান মাত্র ৫শ’ টাকা। এছাড়াও, সরকারি শিক্ষকদের রয়েছে বদলী, পদোন্নতি ও চাকরি শেষে পেনশনের সুবিধা। অথচ বেসরকারি শিক্ষকরা এসব সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তারা বিভিন্ন সময় সংবাদ সম্মেলন, কুটনৈতিক তৎপরতা এবং বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে তাদের বৈষম্য ও ন্যায্য দাবি-দাওয়ার বিষয়গুলো সরকারকে অবহিত করা হলেও সরকার এ পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। ফলে তাদের বৈষম্য দিন দিন চরম আকার ধারণ করছে।
এজন্য গত ২৬ জানুয়ারি২০২৩ খ্রি. তারিখে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে এমপিওভুক্ত শিক্ষক -কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট। সংবাদ সম্মেলন শেষে নেতৃবৃন্দ প্রধামন্ত্রী, মাউসি’র ডিজি ও সংসদ সদস্যদের স্মারকলিপি প্রদান করেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে ঘোষণা করা হয় আগামী ২২ ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে এমপিওভুক্ত শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণের ঘোষণা করা না হলে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেস ক্লাবে অনশনসহ লাগাতার কর্মসূচি পালন করবে এমপিওভুক্ত শিক্ষক -কর্মচারী জাতীয়করণ প্রত্যাশী মহাজোট ও সহযোগী সংগঠনগুলো। এসময় নেতৃবৃন্দ সকল শিক্ষক-কর্মচারীকে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে শুরু হওয়া লাগাতার কর্মসূচি সফল করার আহ্বান জানান।
