দিলীপ কুমার দাস, জেলাপ্রতিনিধি, ময়মনসিংহঃ
গৌতম রায় ছিলেন পুলিশের উপ-পরিদর্শক(এস আই )।জীবিত অবস্থায় তদন্ত করে অনেক মামলার রহস্য উদঘাটন করে পুরস্কারও পেয়েছেন। সেই মানুষটিকে চাকরীরত অবস্থায় হ’ত্যা করে পালিয়ে যায় খু’নিরা। তিনি আজ সংবাদের শিরোনাম। তার হ’ত্যাকান্ডের ১ যুগ পার হলেও বিচারের আশায় তার পরিবার আজ ক্লান্ত।
১৯ এপ্রিলের এইদিনে বংশাল থানার অপারেশন অফিসার এস আই গৌতম রায়ের ১২ তম মৃত্যু বার্ষিকী। ২০১০ সালের ১৯ এপ্রিল তিনি পেশাগত দায়িত্ব শেষে রাতে ওয়ারীর বাসায় ফেরার সময় সুত্রাপুর থানার লাল মোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় একদল চিহিৃত স’ন্ত্রাসী অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে তাকে গু’লি করে পালিযে যায়। পরে রাতেই ঢাকা মেডিকেলে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরদিন তৎকালিন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন, পুলিশের ভারপ্রাপ্ত আইজিপি নব বিক্রম ত্রিপুরা, ব্যাবের ডিজি হাছান মাহামুদ খন্দকার ও পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাগণ ছুটে যান। এ সময় অপরাধীদের দ্রুত গ্রেফতার ও বিচারের আশ্বাসও দেন । পরে এ ব্যাপারে পুলিশ বাদী হয়ে একটি হ’ত্যা মামলা দায়ের করা হয়। এরপর পুলিশ ও র্যাবের মধ্যে আসামী ধরা নিয়ে চলে নাটক। হ’ত্যাকান্ডটি নিয়ে সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়। পরে মামলাটি চা’ঞ্চল্যকর মামলা হিসাবে ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। হ’ত্যাকান্ডের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা তুলে ধরেন তার ছোট ভাই সাংবাদিক তিলক রায় টুলু। তিনি বলেন, এ হ’ত্যাকান্ডটি একটি সুপরিকল্পিত হ’ত্যাকান্ড। মামলার চার্জশিট দেওয়া হলেও যে পি’স্তল দিয়ে আমার ভাইকে হ’ত্যা করা হয়েছে সেই পি’স্তলটি আজও উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। আসল অ’পরাধী চক্রকেও চিহিৃত করতে পারেনি পুলিশ। গৌতম রায়ের হ’ত্যাকান্ডটি সুপরিকল্পিত দাবি করে তার পরিবার বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে কী কারণে, কেন, কারা কী উদ্দেশ্যে এ হ’ত্যাকান্ড ঘটিয়েছে তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করে আসছিলো।
মামলা সম্পর্কে তিনি জানান, যতটুকু শুনেছিলাম এ মামলায় কয়েকজন কে আটক করা হয়েছিল তবে তারা সবাই জামিনে আছে। এখন আর মামলার অগ্রগতি সর্ম্পকে কিছুই জানিনা। এ মামলার বিচারের আশায় থাকতে থাকতে আমার বাবা ও মা গত হয়েছেন।
উল্লেখ্য, এস আই গৌতম রায়ের বাড়ী ময়মনসিংহ জেলার গৌরীপুর উপজেলার শ্যামগঞ্জ বাজারে। সে শ্যামগঞ্জ বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী স্বগীয় ইন্দু ভূষণ রায় ও স্বর্গীয়া বকুল রানী রায়ের প্রথম সন্তান।
গৌতম রায় গৌরীপুর প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ও পূর্বধলা প্রেসক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও ভোরের কাগজ পত্রিকার পূর্বধলা প্রতিনিধি ছিলেন।
তার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তার গ্রামের বাড়ী শ্যামগঞ্জে গীতাপাঠ ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও প্রসাদ বিতরণের আয়োজন করা হয়েছে।