
আল মাসুদ, পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলায় কালিপদ বর্মণ ও জয়দেব চন্দ্র অধিকারী নামে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও বিদ্যালয় থেকে বহিস্কারের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট দুই বিদ্যালয়ের অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অবিভাবকরা।গত শনিবার (১৪ নভেম্বর) দুপুরে সরেজমিনে ওই দুই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অবিভাবকরা এ দাবি জানান।
জানা গেছে, কালিপদ বর্মণ ঠাকুরগাঁও জেলার রুহিয়া থানার চাপাতি এলাকার জগেশ চন্দ্র বর্মণের ছেলে ও রাধানগর হাজী সাহার আলী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং জয়দেব চন্দ্র অধিকারী একই এলাকার মৃত নীল মোহন অধিকারীর ছেলে ও রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত রয়েছে।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, অভিযুক্ত দুই শিক্ষক কালিপদ ও জয়দেব দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অসামাজিক কাজের সঙ্গে জড়িত। কিছু দিন পূর্বে ওই দুই শিক্ষকের প্রতিবেশী বাবুল হোসেন নামে এক ব্যক্তি তাদের অসামাজিক কাজে বাধা প্রদান করায় তারা বাবুলের উপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। পরবর্তীতে গত ৮ জুন বাবুল ঠাকুরগাঁও যাওয়ার সময় কালিপদ ও তার সঙ্গীরা বাবুলকে আটকিয়ে বেদম মারপিট করে এবং ৫০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এসময় স্থানীয়রা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করে। পরে গত ১০ অক্টোবর কালিপদকে প্রধান আসামী করে জয়দেবসহ ৬ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে। আদালতে কালিপদ, জয়দেবসহ বাকি আসামীরা জামিন নিতে গেলে আদালত সবার জামিন মঞ্জুর করলেও কালিপদের জামিন না মঞ্জুর করে তাকে জেল হাজতে প্রেরণ করেন। তবে বর্তমানে কালিপদও কারাগার থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। এছাড়াও ওই দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অসামাজিক কাজে জড়িত থাকায় বিদ্যালয়ে পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের অবিভাবকরা পড়েছে চরম দুশ্চিন্তায় এবং তাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়েও রয়েছে তারা উৎকন্ঠায়৷। ফলে ওই দুই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কালিপদ ও জয়দেবের বিচার ও বিদ্যালয় থেকে অপসারণের দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা।
এবিষয়ে অভিযুক্ত রাধানগর হাজী সাহার আলী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কালিপদ বর্মণের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে অভিযোগ অস্বীকার করে রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়দেব চন্দ্র অধিকারী জানান, আমার বিরুদ্ধে যে মামলা ও অভিযোগ দেওয়া হয়েছে তা পুরোপুরি মিথ্যা ও বানোয়াট।
এদিকে অভিযোগকারী বাবুল হোসেন জানান, কালিপদ বিভিন্ন অসামাজিক কাজে জড়িত থাকায় তাকে বাধা প্রদান করায় সে আমাকে মারধর করেছে। তার সঙ্গে জয়দেবও জড়িত রয়েছে। শিক্ষকরা যদি এমন কাজে জড়িত থাকে তাহলে প্রজন্ম শিখবে কী তাদের কাছে ?
এবিষয়ে রাধানগর হাজী সাহার আলী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয় এবং রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবুল হোসেন ও জহিরুল ইসলাম জানান, আমরা আমাদের বিদ্যালয়ের দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার চিঠি পৃথকভাবে জেলা শিক্ষা অফিস থেকে পেয়েছি এবং আমরা তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
পঞ্চগড় জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শাহিন আকতার জানান, রাধানগর হাজী সাহার আলী দ্বি-মুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কালিপদ বর্মণ ও রানীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জয়দেব চন্দ্র অধিকারীর বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ পাওয়া গেছে ।এবিষয়ে স্ব-স্ব বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটিকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।