ক্রাইম রিপোর্টার॥ নীলফামারী ডিমলায় রহস্যজনক ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে প্রায় ২৬টি ছোট-বড় দোকান।এতে নগদ অর্থ ও পুড়ে যাওয়া মালামালসহ প্রায় দেড় কোটি টাকার ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা করা হচ্ছে।শুক্রবার (১লা মে)রাত ২টা ৩০মিনিটে উপজেলার ঝুনাগাছ চাপানী ইউনিয়নের চাপানী হাট বাজারে রহস্যজনক এই অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি ঘটে।একদিকে লকডাউন বাস্তবায়নে দোকানপাট বন্ধ ও অন্যদিকে রহস্যজনক আগুনের এ ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যালয় ও উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক কোনো রকমের সহযোগিতা না পেয়ে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ঘটনাস্থলে না গেলেও খালি হাতেই শনিবার(২রা মে)বিকেলে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় মধ্যরাতে হঠাৎ আগুন দেখতে পেয়ে পাশ্ববর্তী জলঢাকা উপজেলা ফায়ার সার্ভিস ও ডিমলা ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়া হলেও জলঢাকা ফায়ার সার্ভিস আগে ও পরে ডিমলা ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয়দের সহযোগিতায় দীর্ঘ দুই ঘন্টা প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হন।এতে আগুনের ভয়াল থাবা থেকে ওই বাজারের আশ-পাশের কয়েক শতাধিক ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান রক্ষা পেলেও তার আগেই বাজারের মুদি,তুলা,ওষুধ,হোটেল,হার্ডওয়ার,টিন,জুয়েলারি, কম্পিউটার সার্ভিসিং,কসমেটিক, দোকানসহ প্রায় ২৬টি দোকান পুড়ে যায়।এসময়ে বেশকিছু দোকানের মালামাল ও নগদ অর্থ লুট করে নেন লুটেরারা।তবে আগুনের সূত্রপাত কোথা থেকে ও প্রথম কোন দোকান থেকে তা নিশ্চিত করে বলতে পারেননি কেউ।ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,ডিমলা ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছালে ক্ষতির পরিমান হয়তোবা এত বেশি হতোনা।
ঝুনাগাছ চাপানী ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন,ডিমলা ফায়ার সার্ভিস দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছালে হয়তোবা এত বেশি ক্ষতি হতোনা।ভয়াবহ আগুনে ছোট-বড় ২৬টি দোকান পুড়ে গিয়ে বর্তমানে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা।এতে ব্যবসায়ীদের ক্ষতির পরিমান প্রায় দেড় কোটি টাকা।
ডিমলা ফায়ার সার্ভিস টিম লিডার আবু বক্কর সিদ্দীক জানান,ঘটনাস্থল জলঢাকা উপজেলার কাছে হওয়ায় সেখানকার ফায়ার সার্ভিস হয়তোবা ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছাতে পেরেছেন।আমাদের ঘটনাস্থলের রাস্তা অনেক আকা-বাকা তাই দেরি হয়েছে।আমাদের হিসেবে ১৬টি দোকান পুড়ে গেছে।যার ক্ষতির পরিমান ২০লাখ টাকা হতে পারে।সেখানকার একটি তুলোর দোকানের বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ডিমলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেসবাহুর রহমান মানিক বলেন,উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।আমাদের ডি-ফান্ড নেই তাই উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্তদের কোনো রকম সহায়তা করা সম্ভব হয়নি। উক্ত ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যানকে তালিকা করতে বলেছি। তালিকা হাতে পেয়ে তা জেলায় পাঠিয়ে বরাদ্দ পেলে ক্ষতিগ্রস্তদের দেয়া হবে।
এ ব্যাপারে জানতে চেয়ে ডিমলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জয়শ্রী রানী রায়ের ব্যবহৃত সরকারি(০১৭৩৩৩৯০৬৬৩)নম্বরে কল করা হলে তিনি তা রিসিভ না করায় কোনো মন্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
তবে নীলফামারী জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন,বিষয়টি আমি জেনেছি ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পেলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।